নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিতে দক্ষিণ জনপদের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। ভালো নেই দক্ষিণাঞ্চলের পল্লী এলাকার কৃষক থেকে সাধারণ মানুষও। চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, রান্নার গ্যাসের সাথে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপশি সড়ক ও নৌপথে পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। করোনা সঙ্কটে নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর সংসার চালানো যেখানে কষ্টকর হয়ে উঠছিল, সেখানে একের পর এক নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির সাথে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন সেক্টরে অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধি পরিস্থিতিকে নাজুক করে তুলেছে। আসন্ন রমজানে পণ্যমূল্য পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।
এবার ভরা আমন মৌসুমেও চালের দাম কমেনি দক্ষিণাঞ্চলে। অথচ ধানের দাম ছিল গত বছরের চেয়ে মণ প্রতি ১ থেকে ২শ’ টাকা কম। দেনা শোধ করতে বেশিরভাগ প্রান্তিক কৃষকই ভরা মৌসুমে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। এখন বেশি দামে চাল কিনতে গিয়ে মহাসঙ্কটে কৃষকরা।
৪৫ টাকার নিচে নিম্ন-মধ্যম মানের চালও মিলছে না। নিম্ন-মধ্যম মানের ‘ব্রি-২৮’ চালের কেজিও ৫৩-৫৪ টাবা কেজি। মিনিকেট চালের কেজি ৬৪-৬৬ টাকা কেজি। সয়াবিন তেলের দাম আরেক দফা বেড়ে এখন ১৭০ টাকা লিটার। পাম তেলের লিটারও ইতোমধ্যে ১৬০ টাকায় উঠেছে। চিনির কেজি এখন ৮০ টাকার ওপরে। সব ধরনের ডালের দামও ইতোমধ্যে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। দেশীয় জাতের মসুর ডালের কেজি ১শ’ টাকার ওপরে। মুগ ডালের কেজি ১৩০ টাকা। খেসারি ডাল ৬৫ টাকা কেজি। সামনে রোজায় খেসারি ডালের দাম আরো বাড়বে বলে শঙ্কিত মানুষ। রান্নার গ্যাসের দাম নিয়েও ক্ষুদ্ধ মানুষ। গত বছর এ সময়ে সাড়ে ১২ কেজির যে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ছিল সাড়ে ৮শ’ টাকা, এখন তা সাড়ে ১২শ’ টাকা।
এদিকে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির সুবাদে সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলেও সড়ক ও নৌপথে ভাড়া বেড়েছে যথাক্রমে ৩০ ও ৩৫ ভাগ। ফলে পরিবহন ব্যয় বেড়ে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির বাড়তি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিসহ নানা অজুহাতে বরিশালে আকাশ পথেও গত এক বছরে ভাড়া বেড়েছে ৫শ’ টাকা। নিত্য পণ্যমূল্য বৃদ্ধির এ ধারা আসন্ন রমজানে কি পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে, তা নিয়ে শঙ্কিত দক্ষিণাঞ্চলের সাধারণ মানুষ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন