বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রকল্পের কাজে বিএসএফের বাধা

চুক্তি বাতিলের আশঙ্কা বাড়বে সময় ও ব্যয়

স্টাফ রিপোর্টার ও ছাগলনাইয়া (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের বাধায় বন্ধ হয়ে গেছে প্রকল্পের কাজ। ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডাবল লাইন রেলপথ প্রকল্পের নির্মাণকাজ ও জমি, সীমানা জটিলতায় থমকে আছে ফেনীর বিলোনীয়া স্থলবন্দরের ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ। এ কারণে প্রকল্পের সাথে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চুক্তি বাতিলের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও বাড়বে ব্যয় ও প্রকল্পের মেয়াদ।

জানা যায়, গত বছর থেকেই বিএসএফের আপত্তির কারণে সালদা নদী এবং কসবা স্টেশন এলাকায় কাজ বন্ধ। সালদা নদীর স্টেশন এলাকার নির্মাণাধীন ২৬১ নম্বর সেতুর কাজ প্রথম বন্ধ থাকে গত বছরের ২৫ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত। এরও পর ওই বছরের ১০ জুন থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখা হয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার পর কাজ করতে গেলে পুনরায় বাধা আসে। একপর্যায়ে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ভারতীয় হাইকমিশনারকে বিষয়টি অবহিত করে ডিও লেটার দেন। একই বছরের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেও সুরাহার জন্য চিঠি দেয়া হয়। এরপর বিজিবির লেফটেনেন্ট কর্নেল পর্যায়ের কর্মকর্তার টেলিফোনে আলোচনার মাধ্যমে সালদা নদী স্টেশনসংলগ্ন কাজ শুরু হয়। তারপর পুনরায় কাজ বন্ধ করে দেয় বিএসএফ।

অন্যদিকে কসবা স্টেশন এলাকার কাজ পর্যন্ত শুরুই করা যায়নি। ফলে সার্বিকভাবে প্রকল্পের বাস্তবায়ন বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে করে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। একই কারণে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অতিরিক্ত সময় ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। এসব বিষয় গত ২ ফেব্রুয়ারি রেল মন্ত্রণালয়ে প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির সভায় (পিএসসি) তুলে ধরা হয়। এ নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) যুগ্ম সচিব সমস্যা সমাধানে দ্রুত বিষয়টি ইআরডির সচিবকে জানাতে তাগিদ দেন। তা ছাড়া প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বাড়ানোর প্রস্তাবে সব যুক্তি তুলে ধরতে পরামর্শ দেন ইআরডির প্রতিনিধি।

আখাউড়া-লাকসাম প্রকল্পের ঋণচুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের জুনে। প্রকল্পের মেয়াদও একই সময়ে শেষ হবে। প্রকল্পের ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সেবা বাবদ প্রায় ২৫ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। এ জন্য দাতাসংস্থা এডিবির চুক্তির মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। নির্মাণকাজের জন্য ২০১৬ সালের ১৫ জুন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সিটিএম জয়েন্ট ভেঞ্চার চুক্তি করে রেলের সঙ্গে। ওই বছরের ১ নভেম্বর থেকে মাঠপর্যায়ে তারা কাজ শুরু করে। আর নির্মাণকাজ তদারকির জন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি চুক্তি হয়। প্রকল্পের নির্মাণকাজ তদারকির জন্য নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির সংস্থান অনুযায়ী বরাদ্দ নেই। ফলে বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না। এখন ভেরিয়েশন প্রস্তাব ও সে অনুযায়ী খরচ অনুমোদন দেরি হলে তদারকি সেবা বন্ধ করে দিতে পারে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি চুক্তি বাতিলের আশঙ্কাও করেছেন প্রকল্প পরিচালক। এতে করে প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়বে। ভূমি অধিগ্রহণে পুনর্বাসন কার্যক্রম ব্যাহত হলে ঠিকাদারকে জায়গা বুঝিয়ে দিতে দেরি হবে। এতেও খরচ ও সময় বাড়বে। তাই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ও পুনর্বাসন কাজে নিয়োজিত এনজিওর দাখিল করা ৫৩ কোটি ৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা ও ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকার ভেরিয়েশন প্রস্তাব দুটি দ্রুত অনুমোদন চাওয়া হয়। আউটসোর্সিংয়ে জনবলসহ সিডি ভ্যাট সব মিলে ৩২৫ কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হচ্ছে অনুমোদনের জন্য। ডিপিপি সংস্থানের অতিরিক্ত ব্যয় মোট ব্যয়ের ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিু রেখে এ অনুমোদন চাওয়া হচ্ছে। পরে ডিপিপির সংশোধন করা হবে। ডিপিপির (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) অতিরিক্ত খরচের কারণে এখন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ও এনজিওর কাজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এ কারণে ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিু রেখে ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব যাচ্ছে পরিকল্পনা কমিশনে। কেবল খরচ বাড়ানোর মাধ্যমেই সমাধান হচ্ছে না। এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলপথের নির্মাণকাজ সচল করতে নানামুখী চেষ্টা করা হয়। বিএসএফের তিন দফা বাধায় কসবা ও সালদা নদী স্টেশনসংলগ্ন কাজ আটকে আছে। এদিকে কাজ বন্ধ থাকায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।

আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য রেলওয়ের আখাউড়া-লাকসাম প্রকল্প পরিচালককেও বৈঠকে অংশ নিতে মনোনীত করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। গত মঙ্গলবার রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসংক্রান্ত চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকার ১৫০ ইয়ার্ডের মধ্যে কোনো উন্নয়নকাজ করতে উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় সভার মাধ্যমে সমস্যার নিষ্পত্তি করা যায়।

আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেল লাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর প্রকল্প পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কিছু অংশে বিএসএফ কাজ করতে বাধা দিয়েছে। এ নিয়ে অনেক চেষ্টা চলছে। কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি সমাধানের আশা করছি। এর আগে ভারতীয় হাইকমিশনারকে লিখিতভাবে চিঠিও দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক চেষ্টা অব্যাহত আছে। ভারত একটি প্রতিবেশী দেশ। বন্ধুপ্রতিম এ দেশের সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রেখে দিল্লিতে ২২ ফেব্রুয়ারির দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তা তুলে ধরা হবে। আমরা আশা করি সমাধান হয়ে যাবে।
এদিকে, জমি ও সীমানা জটিলতায় থমকে আছে ফেনীর বিলোনীয়া স্থলবন্দরের ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের আপত্তির মুখে পড়ে অচলাবস্থা বিরাজ করছে সম্ভাবনাময়ী এ স্থলবন্দরটির উন্নয়ন কাজে। চলতি বছরের জুনে শেষ হতে চলেছে প্রকল্পের মেয়াদকাল। সঠিক সময়ে কাজ শেষ না হলে বাড়তে পারে প্রকল্প ব্যয়। সব মিলিয়ে নানা জটিলতায় পড়েছে ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এ বন্দরটি।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বিলোনীয়া স্থলবন্দরের ৩৮ কোটি টাকার অবকাঠামো উন্নয়নকাজের বিষয়টি প্রায় আড়াই বছরেও কোনো সমাধান মেলেনি। এতে বিলোনীয়া স্থলবন্দরের উন্নয়ন ও বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর্থিক ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বন্দরটি পরিদর্শনে এলে এ বিষয়ে কথা হয় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, সমস্যাগুলো দেখা ও জানার জন্য সরেজমিনে বন্দরটি পরিদর্শন করেছি। জমি অধিগ্রহণে দুর্বলতা ছিল কিনা, জমি অধিগ্রহণে আন্তর্জাতিক আইন মানার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের দুর্বলতা আছে কিনা, প্রকল্প ব্যয়, এসব বিষয়গুলো দেখে এসেছি। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

প্রকল্প পরিচালক কে এম আতিকুল ইসলাম বলেন, মোট কাজের ৪৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ আরও সাড়ে ৫ মাস রয়েছে। আশা করছি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবো। জমি জটিলতার ব্যাপারে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সীমারেখার ১৫০ গজের মধ্যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণে গেলে দু’দেশের সম্মতি লাগে। এখানে অবকাঠামো নির্মাণ নিয়ে ভারত অলিখিতভাবে না করে দিয়েছে। এটা নিয়ে দিল্লিতে দ্বিপাক্ষিক সভা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এ মাসের মধ্যে এটার সমাধান হবে। আমাদের আরও দু’টি স্থলবন্দরে এ সমস্যা ছিল সেখানেও সমাধান হয়েছে।
স্থানীয় পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল বলেন, বন্দরের জটিলতার কারণে ঠিকাদাররা প্রায় তিন বছর ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। আশা করছি, দু’দেশের নীতি নির্ধারণী মহল বিষয়টির সমাধান করবেন।

বন্দরের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, কাজের ধীর গতির কারণে সাধারণ শ্রমিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দ্রুত কাজ শেষ হলে বন্দরের শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হবে। মোট জায়গার ২৫ শতাংশের মধ্যে কাজ হলেও বাকী ৭৫ শতাংশ জায়গার মধ্যে নানা জটিলতায় উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, আন্তর্জাতিক সীমারেখার ১৫০ গজের মধ্যে কোনো দেশ স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করতে পারবে না বলে একটি আইন থাকলেও এখানে তা মানা হয়নি। বাংলাদেশের সরকার স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিলে জমি অধিগ্রহণের সময় ১৫০ গজের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়। যার ফলে এ জটিলতা দেখা দেয়। যে ৩০ শতাংশ জমির মধ্যে জটিলতা নেই সেগুলোতে কাজ চলছে। বাকি অংশে কাজ বন্ধ রয়েছে।

বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বিলোনীয়া সীমান্ত এলাকায় ২০০৮ সালে দেশের ১৭তম এ স্থলবন্দরটি স্থাপন করে সরকার। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরাসহ সংশ্নিষ্ট এলাকার আমদানি-রফতানি বাড়ানোর লক্ষ্যে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ সিদ্ধান্তে স্থলবন্দরটি চালু করা হয়। বন্দরের কার্যক্রম চালুর পরই দু’দেশে ব্যাপক সাড়া পড়ে। বাংলাদেশ থেকে ইট, পাথরসহ প্যাকেটজাত খাদ্যসামগ্রী রফতানি শুরু হয়। ত্রিপুরা এলাকার স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যও আসতে থাকে। পরিবহন খরচ তুলনামূলক কম থাকায় আমদানি-রফতানি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ে।

কিন্তু বিলোনীয়া স্থলবন্দর আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হলেও অবকাঠামো তেমন ছিল না। আমদানি-রফতানি পণ্য খোলা আকাশের নিচে রাখা হতো। এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় সরকার বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে আমদানি-রফতানি মালামাল সংরক্ষণ ও পার্কিং সুবিধার উন্নয়নের উদ্দেশে বিলোনীয়া স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বন্দর উন্নয়নে বরাদ্দ দেয়া হয় সাড়ে ৩৮ কোটি টাকা। ১০ একর ভূমি উন্নয়নের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়। প্রকল্পগুলোর মধ্যে ছিল টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, ওয়্যারহাউস, ওপেন ইয়ার্ড, বন্দর অফিস, বিশ্রামাগার, ব্যারাক ও ডরমিটরি ভবন, মসজিদ ও ড্রেন নির্মাণ।

২০১৯ সালে বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হলে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। বন্দরের অবকাঠামোগত জটিলতা তৈরি হলে ভারতীয় বিএসএফ নির্মাণকাজে বাধা দেয়। ফলে নকশার যে অংশ আন্তর্জাতিক সীমারেখায় অবস্থিত সে অংশের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ অচলাবস্থা চলছে গত আড়াই বছর যাবৎ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানায়, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) প্রাথমিক অবস্থায় নির্মাণে সহযোগিতা করে। কিন্তু কাজ অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার পর বিএসএফ মত বদলায়। কাজ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে চিঠি দেয়। এ অবস্থায় মাত্র কয়েক মাস কাজ করার পর নির্মাণকাজের বড় অংশের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানি-রফতানির সুবিধার্থে ভারতীয় ইমিগ্রেশনের আদলে বিলোনীয়া স্থলবন্দরের অবকাঠামোর নকশা তৈরি করা হয়। নো-ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থিত নকশার ৩০ শতাংশ অংশের নির্মাণকাজ করা সম্ভব হলেও বাকি ৭০ শতাংশের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। অথচ বন্ধ থাকা কাজের ১০ শতাংশ শুরুতেই শেষ হয়। এতে বিপুল লোকসানে পড়ে তারা। যে ৩০ শতাংশ নির্মাণকাজ হচ্ছে তা বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমে আশানুরূপ উপকারে আসবে না। অপরদিকে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিরোধপূর্ণ ফেনীর পরশুরামে মুহুরীর চরে সীমানা নির্ধারণের প্রায় ৯ বছর পার হলেও নিজেদের জমিতে যেতে পারছে না বাংলাদেশিরা।
এ ব্যাপারে পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, তারা মুহুরী চরের জমির ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে চান, যাতে বাংলাদেশিরা তাদের জমিতে চাষাবাদ শুরু করতে পারেন। তিনি দূত স্থায়ী পিলার নির্মাণের মাধ্যেমে উক্ত সমস্যার দূত সমাধান দাবি করেন।

বিজিবির পরশুরামের মজুমদার হাট ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আকতার দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, দুই দেশের জরিপ দলের নির্ধারিত সীমানায় সীমান্তে কাঠের পিলার রয়েছে। এখনো স্থায়ী পিলার নির্মাণ হয়নি। বিরোধীয় জায়গায় চাষাবাদ করতে পারছে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Nannu chowhan ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৬:৫০ এএম says : 0
Haire varot priti! Varotke shob shojog shubidha diao nijeder shimanto prokolpe badha dei varitio bahini.....
Total Reply(0)
Khokan Shahnawaz Hossain ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:২৯ এএম says : 0
স্বামী ইস্ত্রী মধ্যে খটর মটর হতেই পারে তাই বলে কাজ বন্দ থাকবে একেমন পিরীতী।
Total Reply(0)
জাকির হোসেন ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৩০ এএম says : 0
ভারতের মতো প্রতিবেশী যাদের আছে তাদের আর শত্রুর প্রয়োজন নেই।
Total Reply(0)
জাকের হোসেন জাফর ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৩১ এএম says : 0
বিএসএফের আচরণ সন্ত্রাসের মতো। প্রায়ই দেখি তারা বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে এসে নাক গলায়।
Total Reply(0)
সুশান্ত কুমার্ ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৩২ এএম says : 0
আমাদের এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো উচিত।
Total Reply(0)
মনির হোসেন মনির ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৩২ এএম says : 0
বিএসএফের এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন