মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দুর্ভোগের ৪৫ বছর বেড়িবাঁধে

প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হারুনুর রশিদ, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) থেকে

সুপীয় পানি, বিদ্যুৎ ও ল্যাট্রিন নেই। মলমূত্র ত্যাগ, রান্না ও গোসলসহ ঘরের অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হয় মেঘনা-ডাকাতিয়া নদী ও তার সংযোগ খালে। গত ৪৫ বছর ধরে চরম দুর্ভোগের মধ্যে জীবনযাপন করে আসছেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ২নং উত্তর চরবংশী ও ৮নং দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়ন এবং হাইমচর উপজেলার চর ভৈরবী গ্রামের উপরে বেড়িবাঁধের দু’পাশে বসবাস করা বাস্তুহারা-আশ্রয়ন কেন্দ্র-আবাসন ও আদর্শ গ্রামের বাসিন্দারা। সরেজমিন উপজেলার ২ ও ৮নং চরবংশী ও চরভৈরবী এলাকার বেড়িবাঁধের ওপর গেলে বসবাসকারীরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও চাহিদা নিয়ে এসে অভিযোগ করেন এ প্রতিবেদককে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বন্যা থেকে বাঁচার জন্য সরকার ৪৫ বছর আগে রায়পুর উপজেলার ২নং উত্তর ও ৮নং দক্ষিণ চরবংশী এবং চর ভৈরবী এলাকা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কি.মি. বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেন। তখন থেকেই বরিশাল, ভোলা থেকে আসা ও স্থানীয় বাস্তুহারা ও ভূমিহীন মানুষ এই বেড়িবাঁধের দু’পাশে বসতি গড়ে তোলেন। বর্তমানে এ বেড়িবাঁধের ওপর প্রায় ১০ হাজার পরিবার বাস করছে। কিন্তু বসবাসকারী পরিবারগুলো বিদ্যুৎ, ল্যাট্রিন ও সুপীয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় তারা নদী ও খাল পাড়ে মলমূত্র ত্যাগ এবং গোসলসহ ঘরের প্রয়োজনীয় কাজ করতে বাধ্য হয়। এছাড়াও শিশুদের জন্য স্কুল না থাকায় তারা ছেলেমেয়েদের শিক্ষার আলো থেকে দূরে রাখতে হচ্ছে। চরবংশীর মোল্লার হাট ও চর ভৈরবীর বেড়িবাঁধের ওপর বাসিন্দা পেয়ারা ও আনোয়ারা বেগমসহ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, যারা আমরা এই বেড়িবাঁধের উপর বসবাস করি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ, সু-পীয় পানি, ল্যাট্রিন না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে নদীতে মলমূত্র ত্যাগ করতে হয় এবং গোসল, রান্নাসহ ঘরের সব কাজে এই পানি ব্যবহার করতে হয়। এখানে বসবাস করলেও একজন আরেকজনের কাছে ৫Ñ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভিটেমাটি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যায়। আমরা অসহায় গরিব বলে সরকারি কোন জমি বা সহযোগিতা পাই না। জনপ্রতিনিধিদের শুধু ভোটের সময় দেখা যায়। তাই আমরা স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করি। লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুরÑসদরের একাংশ) এমপি ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ নোমান বলেন, সরকারি ও তার নিজের বরাদ্দ থেকে এসব মানুষ যেন সুবিধা বঞ্চিত না হয় সে দিকে তার নজর রয়েছেন। তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসসহ অন্যান্য সুবিধা যেন পেতে পারে সে জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তাদের প্রতি আবেদন জানাবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন