সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণার বৈধতা নিয়ে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। ওই দিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে। গতকাল রোববার আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
বিষয়টি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আসে। শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, ‘মাই লর্ড এটি রাষ্ট্রধর্মের বিষয়। এটি নিয়ে পাবলিক ইন্টারেস্ট আছে। বিষয়টি যদি আপনারা সবাই মিলে শুনতেন।’ তখন আদালত বিষয়টি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আগামী বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী। মামলায় পক্ষভুক্ত আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী।
এর আগে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণার বৈধতা নিয়ে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানিতে পক্ষভুক্ত হতে বিভিন্ন পেশার পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি আবেদন করেন। এ পাঁচ জন হলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার, অনলাইন বিশ্ববার্তার সম্পাদক আরিফুর রহমান, প্রজেক্ট বিল্ডিং লিমিটেডের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত হোসেন খান, দেশ ইউনির্ভাসাল লিমিটেডের উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) আবু ইউসুফ জোবায়ের উল্লাহ ও আল-মুথ মাইনাহ মা ও শিশু হাসপাতালের মহাব্যবস্থাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল আলী।
২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণার বৈধতা নিয়ে করা রিট আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ হয়। এরপর ১২ নভেম্বর হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন আইনজীবী সমরেন্দ্র নাথ গোস্বামী।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, সংসদ দেশের বাস্তবতার নিরিখে সংবিধান সংশোধন করতে পারে। বাংলাদেশের বাস্তবতার প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বৈধ বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। রায়ে বলা হয়, দেশের বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে ধর্ম নিরপেক্ষতার পরিধি বাড়ানোর আইনত ও সাংবিধানিক এখতিয়ার সংসদের। সংসদ সেটাই করেছে। বর্তমান বাস্তবতার বিবেচনায় ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শ দেখার অধিকার জাতীয় সংসদের। জাতীয় সংসদ সেটাই করেছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চ রাষ্ট্রধর্মের বৈধতা নিয়ে রিট সরাসরি খারিজ করে দেন। ১৯৮৮ সালে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা এবং ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন