শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মালদ্বীপে বৈধতা জোটেনি

৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত মজুরি বৃদ্ধি পাচ্ছে না : হাইকমিশনের তৎপরতা নেই

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

বৈশ্বিক করোনা মহামারির দরুন দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এশিয়ার পর্যটন নির্ভর দেশ মালদ্বীপের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের এক তৃতীয়াংশই নিয়ন্ত্রণ করছেন বাংলাদেশি অভিবাসীরা। সহজ অভিবাসন ও কাজের অবারিত সুযোগ থাকায় কর্মসংস্থানের জন্য এই দ্বীপরাষ্ট্রকে বেছে নিয়েছে বাংলাদেশিরা। মাত্র পাঁচ লাখ জনসংখ্যার দ্বীপ দেশ মালদ্বীপে এক লাখেরও বেশি বাংলাদেশির বসবাস। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ৫০ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি কর্মী চরম হতাশার মধ্যে পালিয়ে পালিয়ে কাজ করছে। এসব অনিবন্ধিত কর্মীদের পরিবাররাও নানা উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।
ভারত মহাসাগরের নীল পানিবেষ্টিত প্রায় ১২০০ ছোট বড় দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। স্থলভাগ মাত্র ২৯৮ বর্গকিলোমিটার আর সমুদ্রসীমা ধরলে আয়তন প্রায় ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটার। দেশটির অবকাঠামো, পর্যটন, মৎস্যশিল্পসহ সব খাতেই কাজ করছেন বাংলাদেশিরা। নানা কারণে দেশটিতে অনিবন্ধিত বাংলাদেশি কর্মী এখনো বৈধতা লাভের সুযোগ পায়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন পরিচালক গত বৃহস্পতিবার ইনকিলাবকে জানান, দেশটিতে কিছু আইনী জটিলতার কারণে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। স্থানীয় প্রস্তাবিত আইন পাস হলে অবৈধ অভিবাসী বাংলাদেশিরা আইনি সহায়তা পাবে।
মালদ্বীপের সাথে বাংলাদেশের সর্ম্পক অত্যন্ত চমৎকার। গত ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালদ্বীপ সফরকালে দেশটি প্রেসিডেন্টের সাথে দ্বিপাক্ষিক ফলপ্রসু আলোচনায় বাংলাদেশি অবৈধ কর্মীদের বৈধকরণের বিষয়টিও স্থান পায়। কিন্ত পরবর্তীতে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃপক্ষ এসব অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের বৈধকরণের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। বৈধতার সুযোগ পেলে এসব বাংলাদেশির বেতনও বৃদ্ধি পেত। মালদ্বীপে কাজ করা বাংলাদেশিদের অভিযোগ, দেশটিতে পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ তৈরি হলেও বাংলাদেশ সরকার শ্রমবাজার সম্প্রসারণে যথেষ্ট তৎপর নয়। এ ছাড়া বাংলাদেশি কর্মীদের মজুরি বাড়াতেও যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারেনি বাংলাদেশ হাইকমিশন। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান ইতোপূর্বে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন করোনার ধাক্কা সামলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মালদ্বীপে আরো বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশির কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মালদ্বীপ অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি দেশ। সে হিসেবে কর্মীরা যে বেতন পান তা অত্যন্ত কম। বাংলাদেশিরা গড়ে বেতন পান ২৫০ থেকে ৩০০ ডলার। পাশাপাশি থাকা ও খাওয়ার জন্য সামান্য ভাতা। এ কারণে একটি ঘরে অনেককে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে।
জানা গেছে, অবৈধভাবে যারা দেশটিতে আগে গিয়েছে তারা নানা বিপদের মুখে পড়ছেন। অনেকের কাজ জুটছে না। অনেকে কাজ পেলেও নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না। আবার গ্রেফতার আতঙ্কেও থাকতে হয়। তবে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে অবৈধ কর্মীদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে মালদ্বীপ। এতে বৈধ হওয়ার অপেক্ষায় আছেন প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী।
গত বছরের শুরুর দিকে মালদ্বীপের অভিবাসন বিভাগ জানায়, দেশটিতে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬০৭ জন বিদেশি কর্মী কাজ করেন। এর মধ্যে ৬৩ হাজার কর্মীই অবৈধ। নতুন করে আরো কর্মী ঢুকতে থাকায় ৪ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে ২ লাখের বেশি বিদেশি নাগরিকের অবস্থান করার শঙ্কা তৈরি হয়। এ অবস্থায় গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশটির অভিবাসন বিভাগ এক বছরের জন্য বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয়। মালদ্বীপের বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, দেশটিতে প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন, যার মধ্যে ৫০ হাজারই অবৈধভাবে রয়েছেন। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অবৈধ কর্মীদের বৈধ হওয়ার জন্য আবেদন করতে বলেছে মালদ্বীপ। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার শ্রমিক আবেদনও করেছেন। মালদ্বীপের বাংলাদেশ হাইকমিশনের সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত বৈধ হতে কত কর্মী আবেদন করেছেন, তার হিসাব হাইকমিশনের কাছে নেই। এর কারণ অবৈধ কর্মীদের সরাসরি মালদ্বীপ সরকারের কাছে আবেদন করতে হয়।
এদিকে বৈধ হওয়ার চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যেই অনেকে আউটপাস (ভ্রমণের বৈধ অনুমতিপত্র) নিয়ে দেশে ফিরে আসছেন। তাঁদের কেউ সেখানে গ্রেফতার হয়েছেন আবার কেউ চাকরি না পেয়ে দেশে ফিরে আসছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৮০ বাংলাদেশিকে আটক করেছে মালদ্বীপের পুলিশ। মূলত যারা বৈধ হওয়ার জন্য এখনো আবেদন করেননি, তাদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক এবং মালদ্বীপের বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে আউটপাস নিয়ে মালদ্বীপ থেকে ফিরে আসেন ৫৯৬ জন কর্মী। ২০১৭ সালে ৯৩১ জন এবং ২০১৮ সালে ফিরে আসেন ১ হাজার ৩২০ জন। গত বছর প্রায় ২ হাজার ৭০০ কর্মী আউটপাস নিয়েছেন। এর মধ্যে গত বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) আউটপাস নিয়েছেন প্রায় ১ হাজার জন। আর শেষ ছয় মাসে (গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর) আউটপাস নিয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৭০০ কর্মী।
ভুক্তভোগি প্রবাসীরা জানান, দালালের প্রলোভনে পড়ে অনেকেই ‘ফ্রি ভিসার’ নামে মালদ্বীপে গিয়ে সঠিকভাবে কোনো কাজ পান না। কেউ কেউ এক বছরের ভিসা নিয়ে আসার পর আর নবায়ন করতে না পারায় অবৈধ হয়ে যান। আবার কেউ কেউ ট্যুরিস্ট ভিসায় গিয়ে পালিয়ে থেকে যায়। দালালদের প্রলোভনে পড়ে কেউ যাতে অবৈধভাবে মালদ্বীপে না যায় সে ব্যাপারে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে বিভিন্ন সময়ে সতর্ক করা হয়েছে।
পুরো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র মালদ্বীপেই সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি অনিয়মিতভাবে কাজ করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে মালদ্বীপ সরকার বাংলাদেশ থেকে নতুন করে প্রবাসী কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখেছে। উল্টো অনিয়মিত ও অদক্ষ কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে। মালদ্বীপ সরকারের ওই অনুরোধ নিয়ে এখন তৎপরতা চালাচ্ছে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাউথ এশিয়ার মহাপরিচালক রকিবুল হকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে সাক্ষাৎ দেননি।
জানা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটিও মালদ্বীপে অভিবাসী কর্মীদের সমস্যাকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ কারণে গত ৫ জানুয়ারি ও সর্বশেষ ১৪ ফেব্রুয়ারি কমিটির বৈঠকে মালদ্বীপ ইস্যু নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সংসদীয় কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া) ফাইয়াজ মুরশিদ কাজীসহ কমিটির সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন। বৈঠকে বলা হয়, বাংলাদেশ চায় তাদেরকে সেখানে বৈধভাবে থাকার সুযোগ তৈরি করতে। পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের জন্য মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে অবৈধ কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের সেখানে বৈধ করার মাধ্যমে মালদ্বীপে নতুন করে কর্মসংস্থানের বিষয়ে যে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে তা গতি লাভ করতে পারে। সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সামঞ্জস্য এবং ভৌগোলিক দূরত্ব বিবেচনায় মালদ্বীপ অভিবাসনেচ্ছু বাংলাদেশিদের অন্যতম পছন্দ হলেও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত হয়ে এসেছে সেখানে। তবে পর্যটন গন্তব্য হিসেবে খ্যাত মালদ্বীপের ৭০টি দ্বীপে রিসোর্ট নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। নির্মাণকাজ শুরু হলে কিছু বাংলাদেশিদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে আশা করা যায়। এজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনিয়মিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়মিতকরণে কাজ করে যাচ্ছে। মালদ্বীপ ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন আগে বলেছিলেন, অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের দ্রুত বৈধ করার বিষয়ে মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সংসদীয় কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই মালদ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশের অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মালদ্বীপ সফরের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও সুসংহত হচ্ছে।
কোভিড পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে সেখানে প্রায় ৪০ হাজার কর্মী কর্মসংস্থান হারিয়ে অবৈধ হিসেবে বসবাস করছে। এই অবৈধ কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি মালদ্বীপে শ্রমবাজার সম্প্রসারণের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, গত বছরের ২৬ নভেম্বর মালদ্বীপে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মিনিস্ট্রি অব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের মন্ত্রী উজ ফায়াজ ইসমাইলের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিবের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। এতে কোভিড পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে কর্মসংস্থান হারিয়ে মালদ্বীপ অবস্থানরত অবৈধ কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের সেখানে বৈধ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত ওই কর্মকর্তাকে পররাষ্ট্র সচিব নিজ মন্ত্রণালয়ে বিষয়সমূহ অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানান। গত ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর মালদ্বীপে রাষ্ট্রীয় সফরকালে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় আলোচনাতে অবৈধ কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের সেখানে বৈধ করার প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হয়। এ দ্বিপক্ষীয় আলোচনাতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মালদ্বীপ কর্তৃক প্রস্তাবিত অভিবাসী সংক্রান্ত চুক্তিটির খসড়া চূড়ান্তকরণের বিষয়ে কাজ চলমান রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের কাজ করে যাচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের অধীন বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সংস্থার মাধ্যমে মালদ্বীপে অবস্থানরত অবৈধ কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের সেখানে বৈধ করার বিষয়ে প্রধান বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু অদ্যাবধি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে পারেনি বলে জানা গেছে।
মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাইকমিশনার গত বছর শেষের দিকে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘মালদ্বীপে সব মিলিয়ে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা প্রায় এক লাখ। এদের মধ্যে ৫০ হাজারই এখন অনিয়মিত। তারা এখানে কাজ করলেও ওয়ার্ক পারমিট নেই। অন্য দিকে ২০১৯ সালে মালদ্বীপ সরকার একটি সিদ্ধান্ত নেয়। সেটি ছিল তারা এক বছর বাংলাদেশ থেকে কোনো কর্মী নেবে না। এক বছর পার হয়ে গেলে এই সিদ্ধান্ত স্বাভাবিকভাবেই বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা, তবে আমরা জানতে পারছি, তারা নতুন করে বাংলাদেশ থেকে কাউকে এখানে ওয়ার্ক পারমিট দিচ্ছে না। মালদ্বীপে সামনে অবকাঠামো খাতে অনেক প্রকল্প শুরু হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশি কর্মীদের বিকল্প নেই। কোভিডের পর এখন নতুন করে মালদ্বীপের পর্যটন খাত খুলতে শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রেও তাদের অনেক বিদেশি কর্মী লাগবে। দেশটিতে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশিদের বৈধকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ে ব্যাপক কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। রিক্রুটিং এজেন্সিজ ঐক্য পরিষদের (আরএওপি) সভাপতি এম টিপু সুলতানা এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের গরিব সন্তানরা ধার দেনা এবং ঋণ করে বড় আশা নিয়ে বিদেশে যান। নানা কারণে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে অর্ধ লাখ বাংলাদেশি অনিবন্ধিত হয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। এসব কর্মী দেশটিতে বৈধতা লাভের সুযোগ পেলে রেমিট্যান্স আয়ের পরিমাণ বাড়বে। এম টিপু সুলতান মালদ্বীনের অবৈধ বাংলাদেশিদের অনতিবিলম্বে বৈধতা লাভের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
কৌশিক সরকার ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৩:৪১ এএম says : 0
বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের হাইকমিশনগুলো কি করছে?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন