কোভিড মহামারী পরবর্তী শ্রম বাজারের পরিবর্তন ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে বিশ্ববাজারের চাকরির বাজারে নতুন ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন হবে। তাই এ খাতে কানাডার সহযোগিতা পেলে পরিবর্তিত পরিস্থিতে খাপ খাইয়ে নেয়া বাংলাদেশের জন্য সহজ হবে।
মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত কানাডা-বাংলাদেশ জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন স্ট্রেংদেনিং কমার্শিয়াল রিলেশনস এর ভার্চুয়াল সভায় কারিগরি শিক্ষাখাতে কানাডার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন ব্যবসায়ীরা।
বৈঠকে তথ্য প্রযুক্তি ও শিক্ষা বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবির।
প্রতিবেদন বলা হয়, এটুআই’র তথ্য অনুযায়ী, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে, ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ৫০ শতাংশ চাকরির প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে।
বাংলাদেশের শ্রমবাজার সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন শিল্পে কর্মরতদের ৯১ দশমিক ৪০ শতাংশেরই কোন প্রশিক্ষণ নেই। দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা মেটাতে ২০২৫ সাল নাগাদ ৭০ লাখ, ২০৩০ সালের মধ্যে ৯০ লাখ, এবং ২০৫০ সাল নাগাদ ২ কোটি ৯০ লাখ মানুষের খাত ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হবে। বিশেষ করে সাইবার সিকিউরিটি, সেন্সরস অ্যান্ড মেশিন ইন্টিলিজেন্স অ্যালগরিদম, বিগ ডাটা অ্যান্ড অ্যানালিটিকস, ব্লক চেইন-ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার টেকনোলজি, সিমুলেশন, ভিজ্যুয়ালাইজেশন অ্যান্ড ডিজিটাল টুইন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্টারনেট অব থিংস, ক্লাউড এজ কম্পিউটিং, হিউম্যান-মেশিন কো-অপারেশন, ভার্চুয়াল অগমেন্টেড রিয়েলিটি, অটোনোমাস রবোটস, নিউরাল নেটওয়ার্কিং অ্যান্ড মেশিন লার্নিং, থ্রি-ডি প্রিন্টিং বিষয়ে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা বাড়বে।
এসব খাতে কানাডার কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে ক্যাম্পাস স্থাপন করে অথবা দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ করলে তা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে বলে মনে করেন সৈয়দ আলমাস কবির।
বৈঠকে এফবিসিসিআই’র পরিচালক ও এমসিসিআই ঢাকার সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ ও কানাডিয়ান ট্রেইনিং ইনস্টিটিউটগুলোর মধ্যে শিক্ষার্থী বিনিময় কার্যক্রম হাতে নেয়ার সুপারিশ করেন।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কানাডার কোন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ করিয়ে দেয়ার আহ্বান জানান বিপিজিএমইএর সভাপতি শামীম আহমেদ।
কানাডার দুটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এনএআইটি ও এসএআইটির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানান জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের কানাডিয়ান কো-চেয়ার নুজহাত তাম-জামান।
এসময় ওয়ার্কিং গ্রুপে বিজনেস কাউন্সিল অব কানাডা এবং ম্যানিটোবা চেম্বার অব কমার্সের কোন প্রতিনিধিকে ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য করার আহ্বান জানান কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিল রহমান।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-ক্যানচ্যাম বাংলাদেশের সভাপতি মাসুদ রহমান, ভ্রমণ ম্যাগাজিন এর সম্পাদক ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডজাক্ট ফ্যাকাল্টি আবু সুফিয়ান ও এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।
বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন কানাডিয়ান হাই কমিশনের সিনিয়র ট্রেড কমিশনার অ্যাঞ্জেলা ডার্ক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন