আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির প্রথম ভাষাসৈনিক। তার নেতৃত্বেই ভাষা আন্দোলনের সংগ্রাম শুরু হয়েছিল এবং তিনি প্রথম ভাষাসৈনিক হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ছিলো ভাষা আন্দোলনের জন্য অনন্য, অবিস্মরণীয় দিন। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে এদিন প্রথম হরতাল পালিত হয়। এটি ছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম হরতাল। সেই হরতালে নেতৃত্ব দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন এবং গ্রেপ্তার হন। ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়ে এটিই ছিল কোনো রাজনৈতিক নেতা গ্রেপ্তারের প্রথম ঘটনা।
হানিফ বলেন, ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতির জন্য গৌরবের। সংগ্রামের মাধ্যমে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ২১ মার্চ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেন। এরপর ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ঘোষণা দিলে ছাত্ররা তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং আন্দোলনে ফেটে পড়ে।’ ৫২-এর ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন-সংলগ্ন আমতলায় ছাত্রসভা হয়। নুরুল আমিন সরকার আরোপিত ১৪৪ ধারা ভঙ্গের প্রস্তুতি নেয়। ছাত্রসভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৪৪ ধারা ভেঙে ১০ জন মিছিল করে।মিছিলে সরকারের পুলিশবাহিনী গুলি ছুড়লে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকে শহীদ হন। আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়। বঙ্গবন্ধু তখন কারারুদ্ধ। কারাগারেই তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করে অনশন করেন।
হানিফ বলেন, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে তিনি আরো লিখেছেন, ‘মাতৃভাষার অপমান কোনো জাতি সহ্য করতে পারে না। পাকিস্তানের জনগণের শতকরা ছাপ্পান্নজন বাংলা ভাষাভাষী হয়েও শুধু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা বাঙালিরা করতে চায়নি। তারা চেয়েছে বাংলার সঙ্গে উর্দুকেও রাষ্ট্রভাষা করা হোক, তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু বাঙালির এ উদারতাটাই অনেকে দুর্বলতা হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে।’ ’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারির আন্দোলন দেশের গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছিলো। গ্রামে গ্রামে মিছিল হতো। সেই মিছিলে স্কুলের ছাত্রদের ব্যাপক ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। স্লোগান, ‘শহীদ স্মৃতি অমর হোক,’ ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই,’ ‘আমার ভাষা তোমার ভাষা, বাংলা ভাষা বাংলা ভাষা’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন