স্টাফ রিপোর্টার : আট দফা দাবিতে আজ (রোববার) থেকে ডাকা পণ্যবাহী যানবাহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল (শনিবার) সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সভা শেষে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব কাউছার আহম্মেদ পলাশ এ ঘোষণা দেন। নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বিকল্প ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত রাজধানীর সায়েদাবাদে ট্রাক স্ট্যান্ড পুনর্বহাল, প্রতি জেলায় ট্রাক স্ট্যান্ড স্থাপনসহ ৮ দফা দাবিতে ৬ নভেম্বর থেকে ধর্মঘট ডেকেছিল ঐক্য পরিষদ। ৩ ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক শেষে ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব কাউছার আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, মালিক-শ্রমিকের স্বার্থে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলাম। বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আট দফা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আইজিপি সাহেব পুলিশের বিষয়ে (পুলিশ সংশ্লিষ্ট দাবি) দায়িত্ব নিয়েছেন, উনি এক সপ্তাহের মধ্যে বসে সমাধান করবেন। নৌ-পরিবহনমন্ত্রী যেহেতু শ্রমিক নেতা তার মধ্যস্থতায় ও অনুরোধে আমাদের বাকি বিষয়গুলো নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সম্মানার্থে আমাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করলাম।
দুপুর সোয়া ৩টার দিকে সভা শুরু হয়। সভায় কয়েক দফা হইহট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরিবহন নেতারা মন্ত্রীসহ সভায় উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাক-বিতÐায় জড়িয়ে পড়েন। নিজেদের মধ্যেও তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন পরিবহন নেতারা। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিতে সভা শেষ হয়।
ঐক্য পরিষদের অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইংলিশ রোডে মালামাল লোড-আনলোড করার অনুমতি, গাড়ির সামনের বাম্পার ও সাইড অ্যাঙ্গেল খোলার আদেশ প্রত্যাহার, দিনের বেলায় ঢাকা শহরে দেড় থেকে তিন হাজার কেজি পর্যন্ত মালামাল পরিবহনের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি বাতিল না করা, রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত জটিলতা দূর করা, সব সড়ক-মহাসড়কে পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধ, র্যাকার বাণিজ্য বন্ধ, সড়ক-মহাসড়কে চুরি-ডাকাতি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, সহজ-শর্তে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে একতরফা ট্রাকচালকদের দোষারোপ না করা এবং নিয়োগপত্রের ব্যবস্থা।
সভা শেষে শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, গাড়ির বাম্পার, অ্যাঙ্গেল খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত রয়েছে। আমাদের ১৫ জনের একটি কমিটি আছে, ভারতের গাড়িও আমাদের এখানে আসে। এ কমিটি বেনাপোলে গিয়ে দেখবেন- কিভাবে গাড়িগুলো চলে। দেখে এসে কমিটি সুপারিশ করবে। এ সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। ১ ডিসেম্বর থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি বলেন, ইংলিশ রোডে রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত গাড়িতে পণ্য লোড-আনলোডের ব্যবস্থা হবে।
সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ব্যস্ততার জন্য সভায় থাকতে পারেননি জানিয়ে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী বলেন, সায়েদাবাদের সমস্যার বিষয়ে আমি ও মসিউর রহমান রাঙ্গা আজ (রোববার) দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত আমরা নেব। প্রয়োজনে তাকেসহ (মেয়র সাঈদ খোকন) আমরা সেখানে ভিজিট করে বাস্তবতারভিত্তিতে একটা সিদ্ধান্ত আমরা নেব।
সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এমএএন ছিদ্দিক, বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. ছিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহŸায়ক মো. রুস্তম আলী খানসহ ঐক্য পরিষদের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন