পছন্দের প্রার্থীকে নেতা বানাতে অনিয়মের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে। বাকী প্রার্থীদের বিরোধিতা সত্ত্বেও জোরপূর্বক এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানা যায়।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মো. আব্দুর রহিম রনিকে সভাপতি ও মো. তরিকুল ইসলাম তারিককে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হল (এস এম) শাখা ছাত্রদলের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। ঐদিন রাতেই এই অনিয়মের অভিযোগ উঠে।
অভিযোগ রয়েছে, নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে নেতা বানানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিলো সলিমুল্লাহ হল শাখা ছাত্রদলের কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য হল ইউনিটগুলোর কমিটি গঠন করে ২০২০ সালের মার্চ মাসে। তবে সেসময় এস এম হলের কমিটি গঠন না করে অন্যান্য হল কমিটি গঠনের প্রায় দুই বছর পরে এস এম হলের কমিটি গঠন করলো সংগঠনটি। এই কমিটি গঠন করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাবি শাখার আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমান নিজেরাও ভোটে অংশ নিয়েছেন বলে জানা যায়। যদিও উপজেলা মর্যাদার ইউনিটে নেতা বানাতে কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় নেতাদের ভোট দেওয়ার নজির নেই। তবুও যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে নেতা বানাতে এই ভোটাভুটিতে অংশ নেয় তারা। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিনসহ অন্য প্রার্থীরা ভোটাভুটি বর্জন করে স্থান ত্যাগ করেন।
বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের নব কমিটিতে পদপ্রার্থী নাহিদুজ্জামান নাহিদ বলেন, এস এম হলে বেশ কয়েকজন যোগ্য প্রার্থী ছিলো। কিন্তু নিজেদের পছন্দের লোককে নেতা বানাতে গিয়ে সবাইকে বাদ দেয়া হয়েছে। তারা যে প্রক্রিয়ায় কমিটি করেছে তা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক। বাকি ১২ টা হলে এক নিয়ম আর এখানে অন্য নিয়ম করে কমিটি দেওয়া হয়েছে মূলত নিজেদের লোককে কমিটিতে আনার জন্য।
এছাড়া পদপ্রার্থী নাসিরউদ্দিন শাওন, রাজু আহেমদ, হাসান আবিদুর রেজা বায়েজিদকে একপ্রকার জোর করে ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন৷
এই বিষয়ে জানতে ছাত্রলদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সাথে কথা বললে তিনি কোনো প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান বলেন, যাদেরকে নেতা বানানো হয়েছে তারা যোগ্য এবং যাদেরকে নেতা বানানো হয়নি তাদের মাঝেও কয়েকজন আছে যোগ্য। কিন্তু নেতা তো আর সবাইকে বানানো যায় না। নেতা বানাতে হবে দু'জনকে। এখন যারা নির্বাচিত হয়নি তাদের তো একটা অভিযোগ থাকবেই স্বাভাবিক। সভাপতি-সম্পাদক নির্বাচনের সময় তো সবার উপস্থিতিতেই কেন্দ্রীয় নেতারা মতামত দিয়েছে। তখন তো সবাই ঐকমত্য হয়েছে। দীর্ঘ দুই বছর পর কমিটি দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ কমিটিতে যারাই পদপ্রার্থী ছিল সবাই খুব যোগ্য ব্যক্তি ছিল। তাই নেতৃত্ব বাছাই করতে এত দেরি হয়েছে। রাজপথের শ্রম, ঘাম ও বিসর্জন বিবেচনায় নিয়েই কমিটি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি এই ছাত্র নেতার।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলকে একাধিক বার ফোনে দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন