বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

সন্দেহকারীদের থেকে দূরে থাকুন

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২২, ১২:১২ এএম

ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এই জীবন বিধানে ইহকালীন ও পরকালীন জীবন ও জগতের শান্তি ও সমৃদ্ধির যাবতীয় ব্যবস্থার সমাহার রয়েছে। তবে, এই উন্নতি ও অগ্রগতির পথে প্রবল বাধার সৃষ্টি করে ‘রাইব’ বা সন্দেহ। ইসলামী জীবন ব্যবস্থার কোথাও ‘রাইব’ বা সন্দেহকে স্থান দেয়ার অবকাশ নেই।

আল কোরআন ও সহীহ আহাদিসে সন্দেহ, ও সংশয় বুঝাতে ‘রাইব’ শব্দটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ‘রাইব’ শব্দটি কোরআনুল কারীমে সত্তর বার এসেছে। আর সম্বন্ধ পদ ‘রাইবিহিম’ আকারে এসেছে একবার। ‘রিবাতান্’ আকারে এসেছে একবার। ‘মুরিব’ রূপে এসেছে সাতবার। আর ‘মুরতাব’ রূপে এসেছে একবার। তবে, সকল ক্ষেত্রেই ‘রাইব’ অর্থাৎ সন্দেহ ও সংশয় পোষণ করার অপকারিতার বিষয়টিই প্রাধান্য পেয়েছে।

মহান রাব্বুল আলামীন সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন যে, আল কিতাব বা আল কোরআনে কোনো সন্দেহ নেই। কিয়ামতের দিনে কোনো সন্দেহ নেই। হাশরের দিনে কোনো সন্দেহ নেই। আল কোরআনে বিবৃত বিষয়াদিতে কোনো সন্দেহ নেই। নির্দিষ্ট সময়ে মৃত্যুর বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। পুনরুত্থানে কোনো সন্দেহ নেই। আল্লাহ পাক জীবন দান করেন, মৃত্যু দেন এবং তিনিই একত্রিত করবেন এতে ও কোনো সন্দেহ নেই। আল্লাহ পাকের অঙ্গীকার সত্য। এর কোনো ব্যত্যয় নেই।

সন্দেহ ও সংশয় মানুষের দেহ মনের যে ক্ষতি সাধন করে তা খুবই ব্যাপক। যথা : (ক) সন্দেহ মানুষের অন্তরকে যা হক বা সত্য তা’ গ্রহণ করতে দ্বিধা-দ্ব›েদ্ব নিপতিত করে এবং মানুষকে বিপথগামী করে দেয়। (খ) সন্দেহ ঈমানের স্বাদ দূরিভ‚ত করে এবং শয়তানের কুমন্ত্রণাকে শক্তিশালী করে। (গ) সন্দেহ তার অনুসারীদেরকে আল কোরআন ও আল হাদীস অবলম্বনে হেদায়েত লাভ করে উপকৃত হতে প্রতি বন্ধকতার সৃষ্টি করে।

আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : অতএব যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে মূলত : তারাই ফিতনা ও অশান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আয়াতের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ অনুসরণ করে। (সূরা আলে ইমরান : ৭) আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেছেন : এটা অবশ্যই এক মহিমাময় কিতাব। কোনো মিথ্যা এতে অনুপ্রবেশ করবে না, অগ্র হতেও না, পশ্চাত হতেও না। এটা প্রজ্ঞাময় প্রশংসিত আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ। (সূরা হা-মীম-আস-সাজদাহ : ৪১-৪২)। সন্দেহ পোষণকারী ও এর অনুসারীরা আল্লাহ তায়ালার কিতাব এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাত থেকে নিজেরা উপকৃত হতে পারে না। কারণ তাদের উদ্দেশ্য হেদায়েত গ্রহণ করা নয়। বরং তারা এতে সন্দেহের বীজ ছড়াতেই তৎপর থাকে।

ঈমানদারদের ঈমান এবং আমলে এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় হাবীব রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে যে সকল সংবাদ অবগত করেছেন, তাতে সন্দেহের সৃষ্টি করে দেয় এবং তারা তাদের বাতিল মতামত, ভ্রান্ত বিশ্বাস, দূর্বল সন্দেহ ও মিথ্যা ধারণার সাহায্যে আল্লাহর কিতাব ও রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাতের বিরোধিতা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকে। তাদের এই চেষ্টা ও তদবীর প্রকট হয়ে থাকে। অথচ আল্লাহপাক এই শ্রেণির লোকদেরকে সতর্ক করে ইরশাদ করেছেন : যদি তারা আল্লাহ পাকের প্রতি প্রদত্ত অঙ্গীকার পূরণ করতো তবে তাদের জন্য এটা মঙ্গলজনক হতো। (সূরা মোহাম্মদ : ২১)।

সুতরাং যারা মঙ্গলজনক কর্মের সাথে সম্পৃক্ত নয় তাদেরকে বিশ্বাস না করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : আর তোমরা কেবল তাদেরকে বিশ্বাস করো যারা তোমাদের দ্বীনের (ইসলামের) অনুসরণ করে। (সূরা আলে ইমরান : ৭৩)। সন্দেহকারীরা যেহেতু ইসলামের অনুসরণ করে না, তাই তাদের প্রতি আল্লাহ পাক নাখোস ও রাগান্বিত।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
বাহার বিন মুহিব ১ মার্চ, ২০২২, ৭:২০ এএম says : 0
কারো কথা শোনা মাত্রই অন্যের বিষয়ে সন্দেহ করা বা মন্দ ধারণা এক গর্হিত বিষয়। যাচাই না করে সন্দেহ করা বা অহেতুক মন্দ ধারণা করার কারণে পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। সমাজের একতা ও ভ্রাতৃত্ব বন্ধন ভেঙ্গে পড়ে। তখন ভাইয়ে ভাইয়ে দূরত্ব ও হানাহানি শুরু হয়। তাই, হাদিস শরীফে কারো ব্যাপারে মন্দ ধারণা করা বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
Total Reply(0)
মামুন রশিদ চৌধুরী ১ মার্চ, ২০২২, ৭:২১ এএম says : 0
জাহেলি যুগের মানুষদের অন্যায় ধারণার নিন্দা করা হয়েছে। শরিয়তে এ ধরনের অন্যায় ধারণার কোনো ভিত্তি নেই।
Total Reply(0)
জাকির হোসেন ১ মার্চ, ২০২২, ৭:২১ এএম says : 0
অনর্থক কাজে আত্মনিয়োগ করা, না জেনে শুধু শুধু নিরপরাধ মানুষের ওপর অপবাদ দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
Total Reply(0)
মামুন আহাম্মাদ ১ মার্চ, ২০২২, ৭:২২ এএম says : 0
আল্লাহর কাছে প্রার্থনা তিনি যেন আমাদেরকে তাঁর প্রিয় কাজগুলো করার এবং অপ্রিয় কাজগুলো থেকে বিরত থাকার তাওফিক দেন। আমিন।
Total Reply(0)
সাইমুম চট্টগ্রাম ১ মার্চ, ২০২২, ৭:২৩ এএম says : 0
মুসলমান মাত্রেই চায় শরিয়তের বিষয়গুলো দৃঢ়ভাবে ধারণ করতে। তাই সে ওয়াজিবগুলো পালন করে। হারাম এবং মাকরুহ বিষয়গুলো বর্জন করে। সচেষ্ট থাকে মুস্তাহাব কাজগুলো বেশি বেশি করতে। মুবাহ কাজগুলোর মধ্যে নিজ অবস্থা ও প্রয়োজন অনুপাতে কোনোটা করে আবার কোনোটা ছাড়ে। আর দূরে থাকে অস্পষ্ট এবং শংকাপূর্ণ কাজ থেকে। কারণ সে জানে অস্পষ্ট কাজগুলোই সুস্পষ্ট হারাম কাজে লিপ্ত করে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন