দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে গরু দিয়ে ডেইরী ফার্ম গড়ে তুলেছিল আশুলিয়া এলাকার মরণ দাস ওরফে সুমন ওরফে তাপস (৩৫)। ডাকাতি করা গরু প্রথমে ওই খামারে তোলা হয়। পরে এগুলো বিভিন্ন হাঁট-বাজারে বিক্রি করা হতো। সোমবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) জাকির হাসান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মরণ দাস ওরফে সুমন ওরফে তাপস (৩৫), আসাদুজ্জামান বাবু (৩০), মোঃ শহিদুল ইসলাম (৪০), মোঃ আব্দুল মালেক (৪০), দূর্জয় রাজবংশী (২৮) ও মো : আল-আমীন (২৯)।
প্রেস ব্রিফিংএ তিনি আরো জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকালে দিনাজপুরের আমবাগী গরু হাট থেকে গরু ব্যবসায়ী ছাদেক ৭টি গাভী, ২টি বকনা বাছুর ও ৫টি ষাঁড়সহ ১৪টি গরু ক্রয় করে কুমিল্লার লালমাই এলাকায় ফেরার পথে রাত দেড়টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর মোজার মিল সানসিটি সংলগ্ন কাঠ বাগানের সামনে টাংগাইল-ঢাকা মহাসড়কে পৌঁছাইলে একটি অজ্ঞাতনামা মাইক্রোবাস তাদের গরু বহনকারী ট্রাকটিকে গতিরোধ করে। পরে মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন এসে গরুর মালিক ছাদেক ও তার ছেলে রাকিবকে চোখ, মুখ, হাত-পা বেঁধে মাইক্রোবাসে নিয়ে তুলে এবং ট্রাকটি ডাকাতদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। সাভারের গেন্ডা এলাকায় যাওয়ার পর ডাকাতরা ওই দুইজনকে ছেড়ে দিয়ে ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ২০ ফেব্রুয়ারি কাশিমপুর থানায় মামলা হলে পুলিশ গত সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে জিরানী বাজার হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক আটক করে। এসময় ট্রাকের সহযোগী রাজ্জাক দৌঁড়ে পালিয়ে গেলেও সুমন নামে একজনকে পুলিশ ধরে ফেলে।
পরবর্তীতে সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, আশুলিয়া থানাধীন দক্ষিণ নাল্লাপোল্লা গ্রামে সাদিয়া ডেইরি ফার্ম নামে তার একটি গরুর খামার আছে। পুলিশ ওই খামারে গিয়ে ৪টি গাভী, ২টি বকনা বাছুর, ৩৫টি ষাঁড়সহ ৪১টি গবাদি পশু ওই খামারে পায়। পুলিশ গবাদিপশু ক্রয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে সে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এক পর্যায়ে পুলিশের সন্দেহ হলে মামলার বাদীকে জানানো হয় এবং বাদী খামারে গিয়ে তার ডাকাতি হওয়া ৪টি গাভী, ২টি বাছুর এবং ৫টি ষাঁড়সহ ১১টি গরু সনাক্ত করে। পরে আশুলিয়া থানার জিরানীবাজার এলাকার আমান উদ্দিনের বাড়িতে সুমনের বাসায় তল্লাশি করে গরু বিক্রির নগদ ১ লাখ ৬১ হাজার ৭৫০ টাকা জব্দ করে।
পুলিশ ডাকাতির প্রধান হোতা সুমনের দেওয়া তথ্য অনুসারে বিভিন্ন স্থান থেকে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ আরো জানায়, সংঘবদ্ধ এ ডাকাত দলটি মূলত শীতকালে রংপুর থকে মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত বিভিন্ন রুটে ডাকাতি করে থাকে। তাদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংএ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রেজওয়ান আহমেদ, সিনিয়র সহকারি কমিশনার বেলাল হোসেন, কাশিমপুর থানার ওসি মাহবুবে খোদা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন