বিপিএলে ঝলক দেখিয়ে আলোচনায় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মুনিম শাহরিয়ার। সেটিরই পুরস্কার হিসেবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেয়েছেন। ওয়ানডে ও টেস্টে দারুণ ছন্দে থাকা লিটন দাসের সঙ্গী হিসেবে আজ তার অভিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম যে ছন্দে নেই! অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ তেমনই আভাস দিয়েছেন, ‘মুনিমের ভালো সুযোগ আছে কাল (আজ)। এখন নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না কে খেলবে। আমরা উইকেটটা আজ দেখলাম। এরপর পরিকল্পনা করব ব্যাটিং অর্ডারটা আমরা কীভাবে সাজাতে চাই।’
অধিনায়ক এ কথা বলার কিছুক্ষণ আগেই বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে মুনিমকে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করতে দেখা গেল। মিরপুর স্টেডিয়ামের ইনডোরে জাতীয় দলের পেসার ও স্পিনারদের বিপক্ষে তিনি মেরে খেলার অনুশীলনটা করলেন। শট খেলার পূর্ণ স্বাধীনতাই তাঁকে দেওয়া হয়েছে বলে মনে হয়েছে। নেটের ওপাশে থাকা বোলার, কোচরা ছিলেন মুনিমের ব্যাট থেকে ধেয়ে আসা বলের ভয়ে তটস্থ। তবে মাহমুদউল্লাহ শুধু টপ অর্ডার নিয়েই ভাবছেন না। বদলে যাওয়া বাংলাদেশ দলের মিডল অর্ডার নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। নুরুল হাসান দল থেকে বাদ পড়ায় তার জায়গায় ব্যাটসম্যান হিসেবে কে খেলবেন, সেটি নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টি অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা ইয়াসির আলী বিপিএলে মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করে সাফল্য পেয়েছেন। ৮ ইনিংসে ৩১ গড় ও ১৪০ স্ট্রাইক রেটে ২১৯ রান করেছেন ইয়াসির।
তবে মিডল অর্ডারে নতুন কারও অভিষেকের ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু জানাননি মাহমুদউল্লাহ, ‘শুধু টপ অর্ডার নিয়ে পরিকল্পনা করলেই হবে না, গোটা ব্যাটিং অর্ডারকে ভালো করতে হবে। কোনো দিন টপ অর্ডার ভালো শুরু করবে না, মিডল অর্ডারকে সেদিন সামলাতে হবে। টপ অর্ডার ভালো শুরু করলে মিডল অর্ডার সে অনুযায়ী খেলবে। আমাদের দল হিসেবে খেলতে হবে। তবেই আমাদের ভালো সুযোগ থাকবে।’
মিরপুরে উইকেট বরাবর বেশির ভাগ সময়ই থাকে মন্থর। বল ব্যাটে আসে ধীরে। মাটির রঙের কারণে উইকেট অনেক সময় থাকে কালচে। এবার সেই ২২ গজই সবুজাভ। প্রতিপক্ষ দলে যখন রশিদ খান, মুজিব উর রহমান ও মোহাম্মদ নবির মতো স্পিনার, তাদের সহায়ক উইকেট তৈরির পথে হাঁটেনি বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ জানালেন, ওয়ানডে সিরিজের মতোই হবে উইকেট, ‘আশা করি, এটা ভালো উইকেট হবে। স্পোর্টিং উইকেট হবে। ঘাস আছে, সম্ভবত এটা আমাদের বোলারদের সহায়তা করবে এবং ব্যাটসম্যানদেরও সহায়তা করবে। আমার মনে হয়, এখানে শুরুতে যদি কিছুটা সময় নেওয়া যায়, ব্যাটসম্যানদের খুব ভালো সময় কাটবে এই উইকেটে।’
উইকেটে ঘাস থাকলে প্রায়ই কম্বিনেশন সাজাতে গিয়ে তালগোল পাকায় বাংলাদেশ। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও আবু ধাবিতে পেস সহায়ক সবুজ ঘাসের উইকেটে বিস্ময়করভাবে খেলে দুই পেসার নিয়ে। যদিও চার পেসার নামানোও তখন সম্ভব ছিল, সেটা প্রয়োজনও ছিল। মিরপুরের এই উইকেটে বাংলাদেশ কতজন পেসার খেলাবে, দুই না তিন? সঠিক উত্তর মিলল না অধিনায়কের কাছ থেকে, ‘তিন পেসার খেলতে পারে, দুই পেসারও খেলতে পারে। আপনারা কাল (আজ) দেখতে পারবেন।’
বাংলাদেশ অনুশীলন শেষে মাহমুদউল্লাহ যখন সংবাদ সম্মেলনে এলেন, তখনও উইকেটের ঘাস ছাঁটছেন মাঠকর্মীরা। তবে অধিনায়ক নিশ্চিত করে দিলেন, কিছু ঘাস শেষ পর্যন্ত থাকবেই। বিকালে আফগানিস্তান দল যখন অনুশীলনে এলো, দেখা গেল সত্যিই মিরপুরের চেনা ন্যাড়া উইকেট এটি নয়, সবুজের ছোঁয়া আছে বেশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন