জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের ওয়ালিদ নিহাদ নামের এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ না করায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় ৪ ছাত্রলীগ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সাথে কেন তাদের কে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তার জবাব আগামী ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে জানতে চেয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ ইস্যু করে তাদের স্ব-স্ব হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিলেরও সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি।
সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন- নাট্যকলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সামিউল হক হিমেল, ফোকলোর বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের আবু নাঈম আব্দুল্লাহ, লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের মোমেন সরকার ও একই বিভাগের তারভির আহমেদ তুহিন।
এছাড়াও স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আবু সোলায়মান নাঈমকে সতর্ক করে হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিলের সুপারিশ করা হয়। লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সারজীল হাসান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মো. পলাশ, ইইই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের জোবায়ের আহমেদ সাব্বিরকে সতর্ক বার্তা দেয়া হয় এবং হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের মো. ছনিক মিয়া, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মোজাহিদ হোসেন সজিব ও পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের সৌরভ হোসেনকে হলের বরাদ্দকৃত আসন বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গতকাল রাতে শৃঙ্খলা কমিটির সভায় অভিযুক্ত ৪ ছাত্রলীগ নেতাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
এছাড়া অন্যান্য যারা আছে তাদেরকে বঙ্গবন্ধু হলের সিট বাতিল ও সতর্কীকরণের নোটিস প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা সিদ্ধান্তটি আগামী সিন্ডিকেটে প্রতিবেদন আকারে উল্লেখ করা হবে। তবে এর আগেই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা এ ঘটনায় ছাত্রলীগ ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে নিহাদ নির্যাতনের ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেন। সেই সাথে অবিলম্বে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা না হয় ক্লাস বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচী পালনের হুমকি দেয় আন্দোলনকারীরা।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন অনুসারে নিরপেক্ষতার সাথে সকল সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা কোনো দল বিবেচনা করিনি, আমরা ন্যায়বিচারের প্রশ্নে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আইনত তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। সকল সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন