মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিনিয়োগে জেন্ডার সমতায় ২ লাখ কোটি ডলার যুক্ত হতে পারে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২২, ১২:০৩ এএম

জেন্ডার সমতায় বিশ্ব বেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতিজুড়ে বাড়ছে নারীদের অংশগ্রহণ। নেতৃত্ব পর্যায়ে তাদের অবস্থান ঊর্ধ্বমুখী। যদিও সেগুলো এখনো স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে আসেনি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সিটি গ্রæপের নতুন একটি বিশ্লেষণ অনুসারে, নারীরা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল তহবিলের ছোট একটি অংশ পান। বিনিয়োগে এমন জেন্ডার ব্যবধান বন্ধ করতে পারলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লম্ফন দেখা দিতে পারে। খবর সিএনবিসি। বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পিচবুক অনুসারে, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল তহবিলের মাত্র ২ দশমিক ১ শতাংশ পেয়েছে নারী প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো। সিটির গবেষণা বিভাগের বৈশ্বিক প্রধান অ্যান্ড্রু পিট প্রতিবেদনটিতে বলেছেন, বিশ্বব্যাপী নারী উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি হলো অর্থায়নের অভাব। সিটির বিশ্লেষণ অনুসারে, ব্যবসায়িক বিনিয়োগে জেন্ডার সমতা অর্জন বিশ্বজুড়ে মোট দেশজ উৎপাদনকে (জিডিপি) ২-৩ শতাংশ বাড়িয়ে তুলতে পারে। অর্থের হিসাবে এটি ২ লাখ কোটি ডলার। পাশাপাশি জেন্ডার সমতা বিশ্বজুড়ে ২৮ কোটি ৮০ লাখ থেকে ৪৩ কোটি ৩০ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে। উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হলো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (ভিসি)। স্ট্যানফোর্ড বিজনেসের ২০১৫ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৭৯ সাল থেকে প্রতিষ্ঠিত পাবলিক কোম্পানিগুলো ৪৩ শতাংশই ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সমর্থিত। নারীদের এ তহবিল পাওয়ার সম্ভাবনা কম হওয়ার কারণগুলোও উঠে এসেছে সিটির সমীক্ষায়। ঋণদাতারা প্রায়ই নারী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের ঝুঁকিকে অতিরিক্ত মূল্যায়ন করে। ঝুঁকির ধারণাটি আসে যখন বিভিন্ন তথ্যে বলা হয় যে নারী নেতৃত্বাধীন ব্যবসাগুলো পুরুষ নেতৃত্বাধীনের চেয়ে বিনিয়োগে ভালো রিটার্ন দেয়। যদিও এ তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মার্কিন ব্যবস্থাপনা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বোস্টন কনসাল্টিং গ্রæপের (বিসিজি) প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতি ১ ডলার বিনিয়োগের বিপরীতে নারী মালিকানাধীন স্টার্টআপগুলো ৭৮ সেন্ট এবং পুরুষ মালিকানাধীন স্টার্টআপগুলো ৩১ সেন্ট আয় করে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োগে জেন্ডার বৈষম্যের জন্য এ তহবিলে নারীদের কম অংশগ্রহণের বিষয়টিও সামনে এসেছে। উইমেন ইন ভিসির ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অংশীদারদের মধ্যে মাত্র ৪ দশমিক ৯ শতাংশ নারী। সিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী পুরুষ। এ শিল্পে থাকা নারীরা এমন পদে থাকেন, যেখান থেকে অর্থায়নে প্রস্তাব করার খুব কম সুযোগ থাকে। প্রকৃতপক্ষে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের নারী অংশীদার নারী নেতৃত্বাধীন কোম্পানিতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা পুরুষ নেতৃত্বাধীন কোম্পানির চেয়ে তিন গুণ বেশি থাকে। কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা উদ্যোক্তা মূলধনের আরো ছোট অংশ পান। জাতিগত বৈষম্য নিয়ে কাজ করা প্রোজেক্টডায়ানের একটি বিশ্লেষণ অনুসারে, ২০১৯ সাল থেকে মার্কিন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োগের মাত্র দশমিক ৬ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ নারী নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানে গেছে। বিশ্লেষণ প্রতিবেদনে সিটি নারী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ বাড়াতে ক্যাপিটাল ফার্ম ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে। ব্যাংকটি জানিয়েছে, সংস্থাগুলোকে বিনিয়োগ পোর্টফোলিওগুলোয় জেন্ডারভিত্তিক ডাটা এবং জেন্ডার সমতা আনয়নে পদক্ষেপগুলো তুলে ধরতে হবে। সিটির গবেষকরা আরো বলেছেন, সংস্থাগুলোকে নারী উদ্যোক্তাদের সমিতি ও নেটওয়ার্কগুলোর সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নারী উদ্যোক্তাদের অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্য নির্ধারণ এবং আর্থিক পরিষেবা শিল্পে নারী কর্মীর সংখ্যা বাড়াতে অবদান রাখতে হবে। সিএনবিসি।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন