বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

রজমানের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করুন

খুৎবা পূর্ব বয়ান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০২২, ৪:৪৪ পিএম

রাসূল (সা.) রজমান আসার দু’মাস পূর্ব থেকেই রজমান পাওয়ার জন্য দোয়া করতেন এবং বিভিন্ন ইবাদতের মাধ্যমে রজমানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। মূল্যবৃদ্ধির মানসিকতা পরিহার করে রহমত, মাগফিরাত, নাজাত পাওয়ার আশায় রমজানের ইবাদতের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। পেশ ইমাম আজ জুমার বয়ানে এসব কথা বলেন। জুমার নামাজে নগরীর মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষীত হয়।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ পেশ ইমাম ও ভারপ্রাপ্ত খতিব শাইখুল হাদিস মুহাম্মদ মুহিববুল্লাহিল বাকী আজ জুমার বয়ানে বলেন, রমজান মাস অতি আসন্ন। রাসূল (সা.) রজমান আসার দু’মাস পূর্ব থেকেই রজমান পাওয়ার জন্য দোয়া করতেন এবং বিভিন্ন ইবাদতের মাধ্যমে রজমানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। অথচ তাঁর প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল না। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে যে অসংখ্য মর্যাদা দান করেছেন তার শুকর আদায় ও উম্মতকে শিক্ষা দেয়ার জন্য এরকম প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। বর্তমান মুসলিম সমাজের দিকে নজর দেয়া হলে দেখা যায় যে রমজানের ইবাদতের কোন প্রস্তুতি নেই তবে রমজানে খাওয়া দাওয়াতে যেন ত্রুটি না হয় তার জন্য রজমানের আগে থেকে বিভিন্ন আহার্য্য দ্রব্যাদি কিনে জমা ও মজুদ করে রাখা হয়। রমজানকে সামনে রেখে রমজানের ইবাদতের কোন প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নেই। যেটা রমজানের আসল উদ্দেশ্য। রমজান কৃচ্ছতা সাধনের মাস। রমজানে কৃচ্ছতা সাধন করার পরিবর্তে অতি ভোগের মানসিকার কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির চাহিদা বেড়ে যায়। দুঃখের বিষয় হল রমজানে রোজাদারেরা চাহিদা কমানোর পরিবর্তে চাহিদা বৃদ্ধি করে এবং ব্যবসায়ীরা রজমান উপলক্ষে ছাড় দেয়ার পরিবর্তে মূল্য বৃদ্ধি করে। রমজানকে সামনে রেখে অতি মাত্রায় ভোগ ও মূল্যবৃদ্ধির মানসিকতা পরিহার করে রমজানের রহমত, মাগফিরাত, নাজাত পাওয়ার আশায় রমজানের ইবাদতের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। যাতে করে প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে করতে রমজান শেষ হয়ে না যায়। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের তৌফিক দান করেন। আমিন।


মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদ এর খতিব মুফতি আব্দুর রহীম কাসেমী আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, মুসলিম মিল্লাতের নিকট শবে বরাত বা শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত অতিব গুরুত্ববহ ও তৎপর্যপূর্ণ একটি রাত। হাদিস শরীফে উহাকে “লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান” বলা হয়েছে। এ রাতের মহাত্ম ও ফযীলত সম্পর্কে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আয়শা (রা.) কে সম্বোধন করে বলেন, হে আয়শা! এ রাতে কি হয় জান ? হযরত আয়শা (রা.) বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ রাতে আগামী বছর যত শিশু জন্ম নিবে এবং যত লোক মৃত্যু বরণ করবে তাদের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়, মানুষের বিগত বছরের সব আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয় এবং মানুষের রিজিক অবতীর্ণ হয়। (মিশকাত শরীফ ১ম খ-পৃ. ১১৫)।
রাসূলুল্লাহ সা. আরও বলেন, এ রাতে মহান আল্লাহ সূর্যাস্তের পর থেকে ফজর পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে অবতীর্ণ হয়ে ঘোষণা করেন, আছে কি এমন কোনো ব্যক্তি যে তার গুনাহ মাফের জন্য আমার দরবারে প্রার্থনা করবে ? আমি তার গুনাহ সমূহ মাফ করে দিব। আছে কি এমন কোনো রিজিকের প্রার্থনাকারী, যে আমার কাছে রিজিক প্রার্থনা করবে ? আমি তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দিব। আছে কি এমন কোনো বিপদগ্রস্ত, যে আমার কাছে বিপদ থেকে মুক্তি চাইবে ? আমি তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করবো। এভাবে সারারাত আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ঘোষণা আসতে থাকে এবং বান্দাদের ওপর বৃষ্টির মতো রহমত নাযিল হতে থাকে। (ইবনে মাজাহ : ১৩৮৪, বায়হাকি : ৩৮২৩)। তিনি আরও বলেন, হে আয়শা তুমি কি জান এটা কোন্ রাত ? আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলই ভালো জানেন। তখন নবীজী (সা.) বললেন, এটা হল অর্ধ শাবানের রাত; এ রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যাধিক প্রসন্ন হন, ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। (শুআবুল ইমান, ৩য় খ-, পৃষ্ঠা ৩৮২)।
খতিব আরও বলেন, শবে বরাত বড় মহিমান্বিত রাত। এ রাত মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট খুবই প্রিয়। এ রাতে উম্মতের জন্য কিছু করণীয় কাজ রয়েছে। হজরত আবু উমামা বাহেলি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, যখন শাবান মাস আগমন করত তখন রাসূল সা. বলতেন, এ মাসে তোমরা তোমাদের অন্তর্জগৎকে পূতপবিত্র করে নাও এবং নিয়তকে পরিশুদ্ধ ও সঠিক করে নাও। (তাবরানি )। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত কর ও দিনে রোজা রাখ। (সুনানে ইবনে মাজাহ)।
এছাড়াও এ রাতে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত, জিকির আসকার, দীর্ঘসময় নিয়ে নফল নামাজ, সালাতুত তাসবীহ পড়া, বেশি বেশি ইস্তিগফার করা, অধিক পরিমাণে চোখের পানি ঝরিয়ে নিজের জন্য, সমস্ত মুসলমানের জন্য এবং মৃত আত্মীয়-স্বজনের জন্য দোয়া করা ও একাকী কবর জিয়ারত করার প্রতি বিশেষ ভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। অনুরুপভাবে এ রাতে মসজিদ বা ঘরে প্রয়োজন অতিরিক্ত লাইটিং করা, ইবাদত মনে করে হালুয়া রুটির আয়োজন করা, আতশবাজি, পটকা ফুটানো, অযথা ঘোরাফিরা করা, অশ্লীল কাজ করা, অন্য কারও ইবাদতের বা ঘুমের বিঘœ ঘটানো ও দলবেঁধে কবরস্থানেও যাওয়াসহ অন্যান্য শরীয়ত বহির্ভূত কাজ থেকে বিরত থাকার প্রতি কোরআন সুন্নাহের বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে ইসলামের নির্দেশনার প্রতি আমল করার তৌফিক দান করেন। আমিন।
গুলিস্থান ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে জামে মসজিদের খতিব আল্লামা মুহিউদ্দীন রাব্বানী জুমার খুৎবায় বলেন, মহিমান্নিত মাস মাহে রমজান আসন্ন। এ মাসেই পবিত্র কোরআন কারীম নাযিল হয়েছে। এ মাসের বহু ফযীলত রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের নিকট রমজান উপস্থিত হয়েছে, এটি একটি বরকতময় মাস। তোমাদের উপরে আল্লাহ তায়ালা অত্র মাসের সওম ফরয করেছেন। এ মাস আগমনে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়, আর আল্লাহর অবাধ্য শয়তানদের গলায় লোহার বেড়ী পরানো হয়। এ মাসে একটি রাত রয়েছে যা এক হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। (সুনানে নাসায়ী : ২১১০)। খতিব বলেন, রমজানের বাকি মাত্র কিছু দিন! জীবনের যে কোন বিষয়ে সফলতা আনতে চাইলে, অথবা কোন বিষয়ে লক্ষ্য নির্ধারন করলে, তার প্রথম ধাপ হচ্ছে নিজের মন মানসিকতাকে স্থির করা। রমজান মাসের প্রস্তুতির জন্য রাসূল (সা.) মূলত তিন প্রকার কৌশলে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। প্রথমত নফল রোজার মাধ্যমে রমজানের ব্যবহারিক প্রস্তুতি গ্রহণ।
দ্বিতীয়ত রমজানের বরকত হাসিলের জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া। তৃতীয়ত চারপাশের সকলকে রমজানের রহমত, বরকত ও মাগফিরাত সম্পর্কে সচেতন করা এবং তা অর্জনের জন্য উৎসাহিত করা, যাতে সকলে তা অর্জনের জন্য অগ্রসর হয়। রমজানের পূর্ববর্তী শাবান মাসে রাসূল (সা.) রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে নফল রোজা রাখতেন। হযরত উসামা ইবনে যায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমি একবার রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞেস করলাম, “হে আল্লাহর রাসূল! আমি শাবান মাসের মত আপনাকে অন্যকোন মাসে রোজা রাখতে দেখি না (এর কারণ কী)।” রাসূল (সা.) বলেন, “রজব ও রমজানের মাঝে অবস্থিত এটি এমন এক মাস যাতে লোকেরা খুব মনোযোগ দেয় না। এটি এমন মাস যখন বান্দার আমল সারা জগতের অধিপতির সামনে হাজির করা হয় এবং আমি চাই আমার আমল এই অবস্থায় হাজির হোক যখন আমি রোজা পালনের মধ্যে থাকি।”’ (সুনানে নাসায়ী : ২৩৫৯)।
আব্দুল্লাহ ইবনু আবূ কায়স (রা.) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মাস সমূহের মধ্যে শা'বান মাসের সাওম পালন করা সর্বাধিক পছন্দনীয় ছিল। বরং তিনি শা'বান মাসকে (সাওম পালনসহ) রমজানের সাথে মিলিয়ে নিতেন। [ সুনানে আবু দাউদ : ২১০১, তালীকুর রাগীব ২/৮০] তবে শাবান মাসে তিনি কতদিন রোজা রাখতেন তা নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। কিন্তু এটি আমরা সাধারণভাবে ধারণা করে নিতে পারি, রমজান আসার পূর্বেই তিনি রোজা রাখার অনুশীলনের সূচনা করতেন। অবশ্য, পুরো মাস তিনি রোজা রাখতেন না।
রাসূল (সা.) রমজানের আগমন উপলক্ষে সবাইকে সচেতন ও উৎসাহ প্রদান করতেন। হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে এর (রমজানের) কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল, সে প্রকৃতই বঞ্চিত হল।” (সুনানে নাসায়ী: ২১১০)। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, রাসূল (সা.) মুসলমানদেরকে রমজানের কল্যাণ অর্জনের জন্য কিরূপ উৎসাহ প্রদান করছেন। আমরা আল্লাহর রাসূলের অনুকরণে এই তিন প্রক্রিয়ায় নিজেদের রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারি।
ঢাকা উত্তরা ৩নং সেক্টর মসজিদ আল মাগফিরাহ এর খতিব মুফতি ওয়াহিদুল আলম বলেন, শাবান মাস একটি মোবারক মাস। বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায় যে, নবী কারীম সা. এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা পালন করতেন। শাবান মাসের রোজা ছিল তার কাছে সবচাইতে প্রিয়। এ মাসের প্রথম থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত এবং কখনো কখনো প্রায় পুরো মাস তিনি নফল রোজা পালন করতেন। এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ মাসে আল্লাহ তায়ালার কাছে মানুষের আমল উঠানো হয়,আর আমি ভালোবাসি যে, আমার রোজা রাখা অবস্থায় আমার আমল উঠানো হোক। (নাসায়ী শরীফ) এ মাসের একটি বিশেষ রাত হল শবে বরাত। নবী কারীম সা. বলেন, আল্লাহ সেভাবে তায়ালা নেসফে শাবানের রাতে তার সৃষ্টির প্রতি দৃষ্টিপাত করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকরী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজা শরিফ) রমজান শরীফের পূর্ব প্রস্তুতিমূলক এই শাবান মাসে এবং শবে বরাতে নবী করিম স. ও সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে রোজা নামাজ ও অন্যান্য ইবাদত বন্দেগী মধ্যে কাটাতেন, আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকেও সেভাবে বিভিন্ন আমলের মধ্যে সময় লাগানোর তৌফিক দান করুন। আমিন। মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, হিজরী বছরের গুরুত্বপূর্ণ মাস শাবান শুরু হয়েছে। মুমিনের কাঙ্খিত রমজান মাসের পূর্ববর্তী মাস এটি। ধর্মীয় বিবেচনায় এই মাসটি অনেক ফযীলতপূর্ণ। হাদীস শরীফে এ মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে "লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান" বা শাবানের মধ্য রজনী বলা হয়েছে। আমরা যাকে ‘শবে বরাত’ বলি। এটি ফারসি শব্দ। শব মানে রাত, বারাআত মানে মুক্তি। শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত। বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত বহু হাদীসে এ রাতের ফযীলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অর্ধ শাবানের রাতে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির প্রতি রহমতের বিশেষ দৃষ্টি দেন। অতঃপর শিরককারী ও বিদ্বেষপোষণকারী ছাড়া সমগ্র সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন। (সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ৫৬৬৫)। হযরত আলী ইবনে আবি তালেব রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন পনেরো শাবানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগীতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেছেন, শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতের ফযীলত সম্পর্কে একাধিক মারফু হাদীস ও আসারে সাহাবা বর্ণিত আছে। যা দ্বারা ওই রাতের ফযীলত ও মর্যাদা প্রমাণিত হয়।
খতিব আরও বলেন, শবে বরাতকে ঘিরে আমাদের সমাজে রয়েছে দ্বিমুখী প্রান্তিকতা। কেউ কেউ শবে বরাতের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করতে চান, যা একদমই অনুচিত। আশা করি তাদের জন্য উপরোক্ত হাদীসের বিবরণ যথেষ্ট হবে। আর কেউ কেউ এ রাতকে ঘিরে পালন করেন এমনসব রুসুম রেওয়াজ, যা শরীয়ত বিবর্জিত এবং গুনাহের কাজ। শবে বরাত উপলক্ষে খিচুড়ি, হালুয়া রুটি, পটকা ও আতসবাজি ফুটানো, দোকান পাট, ঘর বাড়ি এমনকি মসজিদ আলোকসজ্জা করা, মেলার আয়োজন করা, কবরস্থান ও মাজারে ভিড় করা, কিশোর ও যুবকদের দলবেঁধে ঘোরাঘুরি করা, নারীদের মাজারে যাওয়া ইত্যাদির যে প্রচলন রয়েছে তা অত্যন্ত আপত্তিকর। এগুলোর কিছু কিছু তো সম্পূর্ণ হারাম এবং নাজায়েজ। আর কিছু কিছু তো এমন যা সাধারণ অবস্থায় বৈধ হলেও (যেমন হালুয়া-রুটি খাওয়া এবং খাওয়ানো) শবে বরাতের আমল মনে করা বিদআত। এগুলোতে সময় নষ্ট না করে যথাসম্ভব ইবাদত বন্দেগী করা চাই। বিশেষভাবে তওবা ইস্তিগফার, দোয়া কান্নাকাটি, সালাতুত তাসবীহ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত এবং নফল ইবাদতে মশগুল থাকা উচিত। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন। আমীন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন