শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

সহীহ হাদীসের আলোকে শবে বরাত

আমিনুর রহমান হাসান | প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০২২, ১২:০৫ এএম

আরবি হিজরি মাসের অষ্টম মাস হলো শা’বান। এ মাসের ১৪তারিখ দিবাগত রাতকে লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বান তথা শবেবরাত বলা হয়। শবে বরাত নিয়ে আমাদের সমাজে কতিপয় মানুষ বেশি বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি করেন। ইসলাম মধ্যপন্থার ধর্ম। ইসলামে ইফরাত ও তাফরিতের সুযোগ নেই। একশ্রেণির লোক শবে বরাতকে কেন্দ্র করে শিন্নি, মিলাদ মাহফিল সহ দলবদ্ধভাবে কবর যিয়ারত করে ইফরাত করেন। অথচ হাদিসে এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। আরেক দল শবে বরাতের ভিত্তি নেই শ্লোগান দিয়ে তাফরিত করেন। অথচ শবে বরাতের ভিত্তি হাদিসে রাসুল দ্বারাই প্রমাণিত। শবে বরাতকে হাদিসে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বান’ দ্বারা উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শা’বান মাসের পনের তারিখ উপনীত হলে তোমরা ইবাদতের মাধ্যমে রাত উদযাপন করো এবং দিনে রোযা রাখো।

কেননা, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর প্রথম আসমানে অবতীর্ণ হয়ে বলেন, ক্ষমা প্রার্থনা করার কে আছে, যাকে আমি ক্ষমা করব? রিযিক প্রার্থনা করার কে আছে, যাকে আমি রিযিক প্রদান করব? কে বিপদগ্রস্ত আছে, যাকে আমি বিপদ মুক্ত করব? এভাবে ফজর পর্যন্ত বিভিন্ন কিছু প্রার্থনার জন্য আহ্বান করতে থাকবেন।” (ইমাম বায়হাকি)।

উল্লেখ্য, হাদিস শরিফে বর্ণিত “আল্লাহ তায়ালা প্রথম আকাশে অবতরণ করেন” এর মর্মার্থ হচ্ছে- শবে বরাতের রাতে আল্লাহ তায়ালা আপন বান্দাদেরকে অতীব নৈকট্য প্রদান করেন। (মোল্লা আলি কারি, মিরকাত)। বাক্যটি রূপাকার্থে প্রয়োগ হয়েছে। যেমন আমাদের সমাজে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে “কেউ যদি আমার জন্য এক হাঁটু পানিতে নামে,আমি তার জন্য একগলা পানিতে নামি।

এর উদ্দেশ্য হচ্ছে : সামান্য কিছুর বিনিময়ে অধিক প্রতিদান দেয়া। কারণ আল্লাহ তায়ালা উঠা-নামা,স্থান-কাল ইত্যাদি অবস্থা থেকে পবিত্র। (ইমাম তাফতাযানি)। হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন : আমি এক রাত রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঘরে পাইনি। অতঃপর আমি ঘর থেকে বেরিয়ে তাঁকে জান্নাতুল বাক্বীতে পেয়েছি। তিনি আমাকে বললেন, তুমি কি ভয় কর যে আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার উপর অন্যায় করবেন? আমি বললাম, হে আল্লাহ’র রাসুল! মূলত তাই নয়; বরং আমি মনে করেছি যে আপনি আপনার কোন স্ত্রীর নিকট এসেছেন। অতঃপর তিনি বললেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ শা’বান মাসের ১৪তারিখ দিবাগত রাত কুদরতিভাবে প্রথম আসমানে আসেন আর ‘কাল্ব’ নামক গোত্রের ছাগলের সমুদয় পশমের চেয়েও বেশি সংখ্যক ব্যক্তিদেরকে ক্ষমা করে দেন।” (সুনানে তিরমিযি)।

বর্ণিত দু’টি হাদিস ও শবে বরাত সম্পর্কে বিভিন্ন আহাদিসের কোথাও একথা পাওয়া যায় না যে, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু আনহুম এ রাতে ইজতেমায়ী তথা দলবদ্ধ হয়ে আমল করেছেন। বরং একাধিক হাদিসে একাকী নফল ইবাদতের কথা এসেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মহিউদ্দিন আলমগীর ২৭ মার্চ, ২০২২, ২:১১ পিএম says : 0
এখানে লেখকের শুধু নাম আছে, ঠিকানা নেই।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন