বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে আসতে শুরু করেছে

নিত্যপণ্যের মূল্য প্রসঙ্গে সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০২২, ১২:০৪ এএম

আসন্ন পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে নানামুখী কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের ফলে দাম স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে আসতে শুরু করেছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ শফিউল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
জাতীয় পার্টির সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, দেশে প্রায়ই নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর দাম হঠাৎ করে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কথা বলেন। অনেক সময় প্রাকৃতিক কারণে উৎপাদন ব্যাহত হলে দেশের অভ্যন্তরে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীনেতাদের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময় সভা করে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্যারিফ অ্যান্ড ট্রেড কমিশন, টিসিবি ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উৎপাদন, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতিসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ ছাড়া জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ঢাকাসহ দেশের সব মহানগর, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। এই অধিদফতর প্রতি মাসে সারা দেশে তিনশ’র বেশি বাজার পরিদর্শন ও অভিযান পরিচালনা করছে।
টিপু মুনশি বলেন, পণ্যের মূল্য নিয়ে কেউ যাতে মনোপলি বা অলিগোপলি অবস্থার সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ করে যাচ্ছে।
সরকারি দলের সাংসদ এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে সম্প্রতি দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
বাণিজ্য ঘাটতি ১৬ হাজার মিলিয়ন ডলার
সরকারি দলের সাংসদ এবাদুল করিমের প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রফতানির পরিমাণ ৪৫ হাজার ৩৬৭ দশমিক ১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমদানির পরিমাণ ৬১ হাজার ৬০৯ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ, বাংলাদেশের ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ১৬ হাজার ২৪২ দশমিক শূন্য ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ঘাটতি কমিয়ে আনতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার নানা কার্যক্রম গ্রহণ করায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমে কমছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে ভারতে রফতানির পরিমাণ ছিল ৫১২ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে ১ হাজার ২৭৯ দশমিক ৬৭ শতাংশে উন্নীত হয়।
টিপু মুনশি জানান, ভারতের সঙ্গে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) সম্পাদনের বিষয়ে যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সিইপিএ সই হলে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোসহ দেশটিতে বাণিজ্য সম্প্রসারণ আরও ত্বরান্বিত হবে।
২০ দেশে বাণিজ্যিক মিশন
গণফোরামের সাংসদ মোকব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বিশ্বের ২০টি দেশে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক মিশন রয়েছে। এসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৭ হাজার ৬৪৭ দশমিক ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাণিজ্যিক মিশনগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া (ক্যানবেরা), বেলজিয়াম (ব্রাসেলস), কানাডা (অটোয়া), চীন (বেইজিং ও কুনমিং), ফ্রান্স (প্যারিস), জার্মানি (বার্লিন), ভারত (নয়াদিল্লি ও কলকাতা), ইরান (তেহরান), জাপান (টোকিও), মিয়ানমার (ইয়াঙ্গুন), মালয়েশিয়া (কুয়ালালামপুর), রাশিয়া (মস্কো), দক্ষিণ কোরিয়া (সিউল), সিঙ্গাপুর (সিঙ্গাপুর), স্পেন (মাদ্রিদ), সুইজারল্যান্ড (জেনেভা), যুক্তরাষ্ট্র (ওয়াশিংটন ও লস অ্যাঞ্জেলস), যুক্তরাজ্য (লন্ডন), সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই) ও সউদী আরব (জেদ্দা)। বৈদেশিক বাণিজ্য ও লেনদেন ভারসাম্য রক্ষায় সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন