শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঢাবিতে পর্দাকারী ৩ জনের ১ জন নারী বৈষম্যের শিকার

জরিপের ফলাফল

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৬ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রতি তিনজন নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন পর্দা করার কারণে বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার হন এবং তিনজনের মধ্যে একজনেরও বেশি শিক্ষার্থী বিরূপ মন্তব্যের শিকার হন বলে একটি জরিপে উঠে এসেছে। স¤প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন বিভাগের মেয়ে শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। এ জরিপ পরিচালনায় ছিলেন প্রটেস্ট সেল এগেইনস্ট হিজাবফোবিয়া ইন ডিউ নামক একটি সংগঠন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে ( টিএসসি) অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির ব্যানারে সাংবাদিকদের সামনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার, অ্যাকাউন্ট এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের তাসফিহা তাহসিন ইমা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাসিফা সিদ্দিকা ও নিশাত তামান্না।

এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট ক্যাম্পাসে হিজাব ও নিকাব পরার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, একাডেমিক ভবনে মেয়েদের নামাজের জায়গা সংকট দূর করার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হিজাব এবং নিকাব নিয়ে নারী শিক্ষার্থীরা কী কী সমস্যায় পড়েন এ নিয়ে ২২১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একটি জরিপ পরিচালনা করেছে সংগঠনটি। এতে উঠে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব নিকাব পরার অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়।

তারা বলেন, নিকাব পরা অধিকাংশ ছাত্রী তাদের ক্লাসমেট, বন্ধু, সিনিয়র, জুনিয়র, কর্মকর্তা, কর্মচারী এমনকি ক্লাসরুমে শিক্ষক কর্তৃক অপমান, টিজিং, হেনস্তা অথবা বুলিংয়ের শিকার হন। এমনকি অনেক শিক্ষক নিকাব পরার কারণে ক্লাস থেকে বের করে দেয়। পরীক্ষায় বসতে দেয় না। ভাইভা বোর্ডে জোর করে হিজাব খুলতে বাধ্য করে। এমনকি হিজাবী নারীকে জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে দেয়। এসবের বর্ণনায় তারা বেশকিছু ঘটনা উল্লেখ করেন।
তারা দাবি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাতে করে একজন ছাত্রীকে তার চেহারা দেখানো ছাড়াও বৈজ্ঞানিকভাবে সনাক্ত করা যায়। অন্তত একজন ম্যাডাম দ্বারা সেই ছাত্রীকে সনাক্ত করা হয়। তার ধর্মীয় অধিকার ক্ষুণ্ণ না করা হয়।

যে বা যারা হিজাব ও নিকাব পরার কারণে কাউকে অপমান করবে, বিদ্রæপ, তাচ্ছিল্য করবে, বৈষম্যমূলক আচরণ করবে; বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি প্রদর্শন করবে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিবে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মেয়ে শিক্ষার্থীদের নামাজের স্থানের তীব্র সঙ্কট রয়েছে জানিয়ে তারা বলেন, আইন বিভাগে ছাত্রীদের কমনরুমে নামাজের জায়গায় একটা অফিস রুম করেছে। সেখানে আর নামাযের জায়গা রাখা হয়নি। সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে নামাযের জায়গা হিসেবে মাত্র ৩ টা জায়নামায বিছানো। রোকেয়া হলের ৭ মার্চ ভবনে নামাযের একটা রুম থাকলেও সেটা সর্বদাই তালাবদ্ধ থাকে বলে জানান তারা।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় মসজিদ, গণিত ভবন এবং মেয়েদের পাঁচটি হলে নামাজের স্থানগুলো পর্যাপ্ত নয়। যেগুলো আছে সেগুলোর বেহাল এবং করুণ দশার চিত্র তুলে ধরেন সংগঠনটি।
তারা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিল্ডিং, অনুষদ ও হলগুলোতে ছাত্রীদের নামাযের জন্যে পর্যাপ্ত জায়গা রাখা হোক। আইন বিভাগের নামাযের জায়গাটি ফিরিয়ে দেয়া অথবা নতুন জায়গা যেন করে দেয়া হোক। সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের নামাযের জায়গাটি যেন প্রশস্ত করার ব্যবস্থা করা হয়।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md. Altaf Hossain ১ এপ্রিল, ২০২২, ৮:২৫ এএম says : 0
ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবী মেনে নেয়া উচিত। পচানব্বই ভাগ মুসলমানদের দেশে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পড়তে বাধা এটা কোন ভাবে মেনে নেয়া যায়না। তাদের নামাজের জন্য স্থান সহ সকল দাবী মেনে নেয়ে উচিত।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন