শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

যানজট থেকে মুক্তি মিলছে না

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাজধানীর সড়কগুলো তীব্র যানজটের কবলে। গতকাল রমজান শুরুর আগের দিনেও রাজধানীর বিভিন্ন রুটে দেখা গেছে তীব্র যানজট। নিত্য এ সমস্যাকে সঙ্গী করে চলতে হচ্ছে নগরবাসীকে। যানজট নামক এই সমস্যা দিনে দিনে প্রকট আকার ধারণ করছে। কোনভাবেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলছে না রাজধানীবাসীর।
একসাথে প্রায় সবগুলো সড়কে যানজট লেগে থাকলে কোন এলাকার বাসিন্দাদেরই সময়মতো কাজ করা হচ্ছে না। দিনের পর দিন এভাবে যানজটের কারণে আর্থিকভাবেও খতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন নগরবাসী। এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলমান রয়েছে বেশকয়েকটি মেগাপ্রকল্পসহ সড়ক নির্মাণ ও ড্রেন নির্মাণের কাজ। এসব কাজ দীর্ঘদিন চলমান থাকার কারণেও যানজটের তীব্রতা বাড়ছে।
গতকাল ছুটির দিনেও নগরবাসী যানজট নামক ভোগান্তি থেকে বাঁচতে পারেননি। গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর অধিকাংশ রুটে ছিল অসহনীয় যানজট। বাসস্ট্যান্ডগুলোতে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন অনেক যাত্রী। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে যানজট। যানজটে কারণে ১০ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগছে একঘণ্টা। কোন কোন রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল পার হতেই সময় লেগে যাচ্ছে বেশি।
রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্ত্বর, দৈনিক বাংলা মোড়, পল্টন, মগবাজার, মালিবাগ, বাংলামোটর, গুলিস্তান, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, ফর্মগেট, বিজয় সরণি, গাবতলী, মিরপুর, মহাখালী, খিলক্ষেত, বাড্ডা, কুড়িল, উত্তরা, শাহবাগ, কারওয়ান, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, রায়েরবাগ এলাকায় যানজটের তীব্রতা দেখা গেছে।
এদিকে, অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল, বিভিন্ন পয়েন্টে ইউটার্নসহ নানা করণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গত শুক্রবার গভীর রাতেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের দাউদকান্দি, মদনপুর, সাইনবোর্ড ও মেঘনাঘাট এলাকা জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দিনের বেলায় অনেকে তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছতে হেঁটে রওয়ানা হন। কিন্তু রাতের বেলায় পণ্যবাহী শত শত ট্রাকের কারণে বিপাকে পড়তে হয় বাসের যাত্রীদের। এই যানজট মধ্যরাতেও ছিলো তীব্র আকারে। এছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য ও যাত্রীবাহী পরিবহণের চাপ সৃষ্টি হয়। এই রুটে চলছে বিআরটি মেগাপ্রকল্পের কাজ। এই সড়কে থেমে থেমে যানজটের কারণে উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী পরিবহনগুলোকে পড়তে হয় বিপাকে। মহাসড়কে দীর্ঘ লাইন ও থেমে থেমে চলাচল করতে হচ্ছে পরিবহণগুলোকে।
পল্টন এলাকায় রাশিদুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে বাসে উঠলাম মিরপুর যাওয়ার জন্য। কিন্তু যানজটের করণে কখন আমার গন্তব্যে পৌঁছাব তা জানা নেই। একটু একটু করে থেমে থেমে চলছে বাস। তীব্র গরমে কষ্ট করে বসে আছি। বাসের চালক ও হেলপারদেরও কোন কিছু বলতে পারছি না। সামনের বাসগুলো লাইন ধরে বসে আছে। মিরপুর যেতে কয় ঘণ্টা সময় লাগে তা বলতে পারছি না।
খাজাবাবা পরিবহনের এক চালক বলেন, রাস্তায় যানজটের কারণে ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি না। গাড়ি একটু চালালেই আবার থেমে থাকতে হয়। এজন্য যাত্রীরাও অর্ধেক রাস্তায়ই নেমে যায়। এতে আমাদের কন্টাক্টের বাসগুলোতে টার্গেট অনুযায়ী ভাড়া উঠাতে পারি না।
রাজধানীর গুলশানে গত শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর যানজট নিরসন এক দিনের বিষয় নয়। পরিকল্পনা ছাড়া প্রকল্পভিত্তিক কাজ করতে গিয়ে রাজধানীতে এই অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। বনানীতে সেতু ভবন নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি। এলিভেটেড এক্সপ্রেসের পিলারের কারণে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, ছোট হয়ে যায়। যখন কোনো ধরনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করব, তখন রাস্তা যেন বন্ধ না হয় তার জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড করব। মেট্রোরেল স্টেশনে ওঠার সিঁড়িগুলোও ফুটপাথের ওপর পড়ায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন