শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

গাইবান্ধা জেলার আদিবাসীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : গাইবান্ধা জেলার সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্মে আদিবাসীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ এবং নাগরিক সমাজ নামের তিনটি সংগঠন। তাদের মতে, আদিবাসীদের ওপর যে হত্যাকা- ও লুটের ঘটনা ঘটেছে, এ রকম একটি নিষ্ঠুর, অমানবিক ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনা স্বাধীন দেশে ঘটতে পারে, তা প্রত্যক্ষ করলে গা শিউরে ওঠে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, আমরা যদি নিজেদের মানুষ হিসেবে মনে করি, তাহলে আরও যেসব মানুষের অধিকার হরণ হচ্ছে, তাহলে এটার বিরুদ্ধে দাঁড়াব। আমরা জোর গলায় বলতে চাই, এই মানুষেরা ঠিক যে অবস্থায় ছিল, সেই জায়গায় তাদের ফিরিয়ে আনা হোক। তাদের ত্রাণের আওতায় না এনে ক্ষতিপূরণ দেয়া হোক। যাতে তারা যেভাবে জীবন চালাচ্ছিল, অন্তত সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আমরা এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। এ রকম একটি নিষ্ঠুর, অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে ঘটতে পারে, তা প্রত্যক্ষ করলে আমাদের গা শিউরে ওঠে।
লেখক, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, যদি কোথাও কোনো আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে, তবে সেটা মোকাবিলার জন্য তো পুলিশ রয়েছে। তবে গত কয়েক বছরে যেকোনো হামলার একটি নতুন আলামত দেখা যাচ্ছে, যেটা পাকিস্তান আমলে ঘটেছিল। আমরা নাসিরনগরে দেখেছি এবং গাইবান্ধায় দেখলাম, পুলিশ যেখানে যাচ্ছে, সেখানে তাদের সঙ্গে একটি অক্সিলারি (সাহায্যকারী) বাহিনী থাকছে। যেভাবে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সৈন্যের সঙ্গে আলবদর ও রাজাকার বাহিনীরা থাকত। ঠিক সেভাবে কিছু ছাত্র ও যুবক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলবদর, রাজাকারের মতো তাদের সঙ্গে যাচ্ছে, প্রত্যেকটা জায়গায়। তারা লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ সবকিছু করছে। এটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজ।
লিখিত বক্তব্যে আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘গত ৬ ও ৭ নভেম্বর গাইবান্ধা জেলার সাহেবগঞ্জ ও বাগদাফার্ম এলাকায় পরিকল্পিতভাবে পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনী ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষ ও বাঙালি কৃষকদের ওপর আক্রমণ চালায়। পুলিশের উপস্থিতিতে চিনিকল মালিকের সন্ত্রাসীরা তাদের বাড়িঘরে আগুন দেয়। পুলিশের গুলিতে চারজন সাঁওতাল নিহত হন। তারা হলেন শ্যামল হেমব্রম, মঙ্গল মার্ডি, রমেশ টুডু এবং একজন আদিবাসী নারী, যার নাম জানা যায়নি। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত; মিল কর্তৃপক্ষের দুর্নীতির তদন্ত; নিহত, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে নিজ ভূমিতে বসবাসের নিশ্চয়তা; ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং স্থানীয় প্রশাসনকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি করেন সঞ্জীব দ্রং।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ সরেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজল দেবনাথ প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন