বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঢাবি শিক্ষার্থীকে হলছাড়া করল ছাত্রলীগ

নির্যাতনের অভিযোগ করার সাজা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

ছাত্রলীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ায় নির্যাতনের অভিযোগ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দিয়েছে ছাত্রলীগ। গত সোমবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। নাম রাজিমুল হক ওরফে রাকিব। নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে রাকিব ইনকিলাবকে বলেন, ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম ও কথিত গেস্টরুমে যেতে অপারগতা প্রকাশ করায় গত শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর শিকদার আমাকে তাঁর রুমে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করে কেন প্রোগ্রামে যাইনি। আমি কিছু বলার আগেই গালে বসিয়ে দেয় থাপ্পড়। এরপর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। এতো রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আমার চুল ছিল এলোমেলো। চেহারা ছিল বিমর্ষ। তা দেখে তানভীর আমায় জিজ্ঞেস করে ্রতুই কি গাঁজা খাস নাকি?, ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে যাস না কেন, তুই কি শিবির করিস নাকি?গ্ধ এছাড়াও মা বাবা তুলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। শিবির বেøইম দিয়ে আমাকে হল থেকে বের হয়ে যেতে বললে আমি রুমে চলে আসি। কিছুক্ষণ পর আবার ডেকে পাঠায়। প্রশ্ন করে- হলে থাকতে চাস? থাকতে চাইলে নিয়মিত প্রোগ্রাম, গেস্টরুম করবি। হলে থাকতে হলে প্রোগ্রাম করতে হবে, না পারলে হল থেকে বের হয়ে যাবি। এসব না করলে টর্চার সেল (নির্যাতন কেন্দ্র) গঠন করব।
এ ঘটনা রাকিব হল প্রভোস্ট ও সাংবাদিকদের জানানোর পরই গত সোমবার রাতে তাঁকে হল থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগ সভাপতি তানভীরের অনুসারীরা। রাকিব বলেন, ইফতারের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর শিকদারের ছয় থেকে সাতজন অনুসারী আমার কক্ষে এসে জিনিসপত্র বের করে দেন। এসময় তারা মারমুখী অবস্থানে ছিলেন। তাই আমি কিছু না বলে হল থেকে বের হয়ে আসি।
তিনি বলেন, শুক্রবার রাতের ঘটনা নিয়ে সোমবার বিকেলে হল প্রভোস্টের সাথে কথা বললে তিনি আমাকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দেন। প্রভোস্টের সাথে দেখা করার বিষয়টি জানতে পেরেই হঠাৎ করে তারা আমাকে হল থেকে বের করে দেয়। পরে অবশ্য প্রভোস্টকে জানালে তিনি কয়েকজন আবাসিক শিক্ষকের মাধ্যমে আমাকে হলে তুলেন।
তানভীর শিকদার রাজনীতি করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী হয়ে। তবে হল থেকে বের করে দেওয়ার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন তানভীর। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে তার কোনো ঝামেলা নেই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার রাতের ঘটনাও অস্বীকার করেন তানভীর। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, এমনকিছুই আসলে ঘটেনি। সেদিন রাত ১২টার দিকে আমি সবাইকে ডেকে বলেছিলাম যে আগামীকাল আমাদের ফাইনাল খেলায় সবাই উপস্থিত থাকবি। এখানে কাউকে কোনো গালমন্দও করা হয়নি।
এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, হলে কে থাকবে, কে থাকবে না, সেটা হল প্রশাসন নির্ধারণ করবে। আমাদের সংগঠনের নাম ব্যবহার করে কেউ এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটালে আমরা ব্যবস্থা নেব।
সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. মজিবুর রহমান বলেন, আমি নিজে দায়িত্ব নিয়ে ওই ছাত্রকে হলে তোলার ব্যবস্থা করেছি। ভবিষ্যতে যেন কেউ এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে না পারে সেজন্য আমরা দু›এক দিনের মধ্যে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে এটার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
shorif ৬ এপ্রিল, ২০২২, ৮:৪৬ এএম says : 0
modyo rte ghum theke tule malo nirjato korlo hol theke ber kore lilo ki hobe. sara destai durnitite vore gechhe.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন