বরিশালের বানরীপাড়ায় রিক্সা ভ্যানে সবজি বিক্রেতা মোঃ মিজানুর রহমান হাওলাদারের মেয়ে সাদিয়া আফরিন পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএÑ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও তার ইচ্ছা পুরন হবে কিনা তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটিয়ে ও ছোটখাট টিউশানি করে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে এখন শুধুমাত্র অর্থাভাবে তার চিকিৎসক হবার ইচ্ছা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সাদিয়া আফরিনের পিতা বানারিপাড়া বন্দর এলাকায় রিক্সা ভ্যানে সবজি বিক্রী করে সংসার চালান।
সাদিয়া বানারিপাড়া বালিকা বিদ্যালয় থেকে জিপিএÑ৫ পেয়ে এসএসসি এবং বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজ থেকেও একই গ্রেডে এইচএসসি পাশ করেছে। এর আগে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতেও সে জিপিএÑ৫ পেয়েছে। মিজানুর রহমানের চার মেয়ের মধ্যে সাদিয়া তৃতীয়া।
সাদিয়া বলেন, ‘অনেক আগের থেকেই টিউশনি করতাম। টিউশনির টাকা জমিয়ে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাবার জন্য কোচিং করেছি। পরীক্ষা দিয়ে সুযোগও পেলাম। কিন্তু এখন ভবিষ্যৎ অজানা’। কান্না জড়িত কন্ঠে সাদিয়া সাংবাদিকদের জানায় ‘২০১৪ সনে হঠাৎ মা অসুস্থ হলে বাবাকে দেখেছি মায়ের চিকিৎসার জন্য অমানুষের মত পরিশ্রম করতে। আর তখন থেকেই লক্ষ্য ছিল চিকিৎসক হয়ে দেশের দরিদ্র মানুষের সেবা করব’।
মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় সাদিয়া ৭৮ ভাগ নম্বর পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তার সাফল্যে শিক্ষক ও সহপাঠী শিক্ষার্থী সহ আত্মীয় স্বজনরা খুশী হলেও সাদিয়া তার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ভুগছে। তারপরেও সে সবার কাছে দোয়া চেয়েছে যাতে চিকিৎসা বিজ্ঞানে পড়াশোনা করে একজন ভাল মানবিক চিকিৎসক হতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন