শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

হিজাব পরায় ১৮ ছাত্রীকে পেটালেন হিন্দু শিক্ষিকা, সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড়

এবার কি সাজু খাদেমরা হিজাব পরে প্রতিবাদ জানাবেন?- প্রশ্ন নেটিজেনদের

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০২২, ৮:৪৪ এএম

নওগাঁর মহাদেবপুরে হিজাব পরে স্কুলে আসার কারণে ১৮ ছাত্রীকে লাঠি দিয়ে পেটানোর ঘটনায় তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকার নাম আমোদিনি পাল। লতা সমাদ্দারের বেলায় যারা টিপ পরেছিলেন, আমোদিনী পালের বেলায় তারা কেন হিজাব পরে প্রতিবাদ করছেন না!- এমন প্রশ্নে ক্ষোভের ঝড় তুলেছেন নেটিজেনরা।

বুধবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার দাউল বারবারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তাদের অভিভাবকদের জানালে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। অভিভাবকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়াও।

জানা যায়, ওই ঘটনার জের ধরে অভিভাবকরা বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ওই স্কুলে গিয়ে এর প্রতিবাদ জানান। অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে না পেয়ে তারা স্কুলের আসবাবপত্র ভাংচুর করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের দুটি ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

গেল কদিন আগে তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দার টিপ পরার কারণে হেনস্থার শিকার হওয়ার অভিযোগে মিডিয়া-নারী অধিকার কর্মী, পার্লামেন্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্গনের অনেকেই টিপ পরে প্রতিবাদ জানান। এখন কেন তারা হিজাব পরে প্রতিবাদ করছেন না?- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা।

জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘লতা সমাদ্দারের বেলায় যারা টিপ পরেছিলেন, আমোদিনী পালের বেলায় তাদের ভূমিকা দেখার অপেক্ষায় রইলাম! তারা কি এখন হিজাব পরবে? পার্লামেন্টে কথা বলবে? কী করবেন মার্কিন দূতাবাস কর্মীরা?’’

একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে ফেসবুকে জহির রাইহান লিখেছেন, ‘নওগাঁর মহাদেবপুরে হিজাব পরে স্কুলে আসায় ১৮ শিক্ষার্থীকে লাঠিপেটা করেছেন আমোদিনী পাল।’ -সংবাদ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের।▫️এবার কি জাতীয় সংসদে কেউ প্রশ্ন তুলবেন: হিজাব পরা নিষেধ কোন আইনে? ▫️এবার কি কেউ হিজাব পরে প্রতিবাদ করবেন? ▫️এবার কি কোনো দূতাবাস কর্মীরা হিজাব পরে সংহতি জানাবেন? ▫️এবার কি গণমাধ্যমগুলো এটা নিয়ে ধারাবাহিক অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করবে? ▫️এবার কি বিশিষ্ট্য নাগরিকগন বিচার দাবি করবেন?▫️নাকি টিপ পরার অধিকার থাকলেও টুপি ও হিজাব পরার অধিকার থাকা উচিত নয়?

নাহিদুল ইসলাম মিতু লিখেছেন, ‘‘এই ঘটনাটা যদি আজ ইন্ডিয়াতে হতো তাহলে সারা বাংলাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে যেতো …! আফসোস …এরকম জঘন্যমূলক ও সাম্প্রদায়িক কাজ আমাদের বাংলাদেশেই হচ্ছে …!তারপরও আমরা বাঙালি মুসলমান আজো নীরব। জানিনা এই বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের উপর আরো কত আঘাত আসবে…।’’

চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে খালেদ বিন ওয়ালিদ লিখেছেন, ‘মাথায় টিপ দেওয়া নাট্যাঙ্গনের হিজড়ারা কই? আর আমরা কি বাংলাদেশে আছি নাকি ইন্ডিয়ায়?...দের দুঃসাহস, প্রশাসনে কোটার অধিক সংখ্যা, প্রিয়া রায়দের রাস্ট্রদ্রোহিতার প্রতি সরকারের নিরব সমর্থন দেশকে বড় বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ..দের বাড়াবাড়ি প্রমাণ করে এই দেশ কে চালায় যদিও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারীরা তা স্বীকার করতে চায় না।’’

টিপকাণ্ডে আলোচনায় এসেছিল নাট্যকর্মী সাজু খাদেমের টিপ পরে প্রতিবাদের ঘটনা। তাই সেই বিষয়টিকে সামনে এনে অনেকেই জানতে চেয়েছেন, এবার কি সাজু খাদেমরা হিজাব পরে প্রতিবাদ জানাবেন?

নির্যাতনের শিকার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আফরিন অভিযোগ করে জানান, বুধবার দুপুরে জাতীয় সঙ্গীতের পর লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনি পাল কেন হিজার পড়ে স্কুলে এসেছে এ কথা জিজ্ঞাসা করে ইউক্যালিপটাস গাছের ডাল দিয়ে তাদেরকে প্রহার করেন। শিক্ষিকা তাদেরকে জানিয়ে দেন যে ‘স্কুলে কোন পর্দা চলবে না। ঢং করে আসচো। বাসায় গিয়ে বোরখা পড়ে থাকো। যখন তোমরা মহাদেবপুর বাজারে যাবে তখন পর্দা করবে। স্কুলে আসলে মাথার কাপড় ফেলে আসবে।’ তিনি ছাত্রীদের হিজাব খুলে ফেলার জন্য টানাটানি করেন। এমনকি যারা হিজাব ছাড়া শুধু মাস্ক পড়ে এসেছিল তাদের মাস্কও খুলে দেন। তিনি হুমকি দেন যে, ‘কাল থেকে যদি হিজাব ও মাস্ক পড়ে আসো তাহলে পিটিয়ে তোমাদের পিঠের চামড়া তুলে নেয়া হবে।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, স্কুলে হিজাব পড়ে আসায় শিক্ষিকা আমোদিনি পাল ৫/৬ জন ছাত্রীকে মারধর করেছেন। ঘটনার দিন তিনি স্কুলের কাজে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে এসে বিষয়টি জেনেছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান হিজাব না পড়ায় স্কুলছাত্রীদের পিটানোর কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আগে তাকে শোকজ করি। তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Yousman Ali ৯ এপ্রিল, ২০২২, ৯:৪৩ এএম says : 0
কাম গুলো সব অশিক্ষিত
Total Reply(0)
AL AMIN ১৫ এপ্রিল, ২০২২, ২:০৬ পিএম says : 0
আদর্শবাদী,চেতনা ধারি ও নিরপেক্ষতাবাদী/ নাস্তিকতাবাদীদের এজেন্ডা ঐ শিক্ষিকা বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করছে । তাদের সমর্থন না থাকলে মুসলীম দেশে ঐ শিক্ষিকা এই কাজ করার সাহস দেখাত না । এখন পর্যন্ত তাদের মুখে কুলুপ রয়েছে । মুসলিমরা প্রতিবাদ করলে উগ্রবাদি আথবা ৫,৭ জনে প্রাণ নেবে বিচার হবে না
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন