বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া লঞ্চের কেবিন না, রাতে বেলায় স্পীডবোট চলাচল বন্ধ

যাত্রী হয়রানী বন্ধে ডিসি, এসপি ও বিআইডব্লিউটিএকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ: নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া লঞ্চের কেবিনের টিকিট মিলবে না। পর্যাক্রমে লঞ্চের সকল যাত্রীর জন্য এনআইড লাগবে। ঘাট ইজারাদার দ্বারা যাত্রী হয়রানী বন্ধে সংশ্লিষ্ট জেলার ডিসি, এসপি ও বিআইডব্লিউটিএকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা এবং রাতে বেলায় স্পীডবোট চলাচল বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ঈদের পাঁচদিন আগে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌপথে স্টিমার, লঞ্চসহ জলযান সুষ্ঠুভাবে চলাচল, যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধানকল্পে প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আসন্ন ঈদযাত্রা উপলক্ষে আমরা এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। ঈদের পর আমরা আরও কঠোর হবো। এটা হবে স্থায়ী পদক্ষেপ। খালিদ মাহমুদ বলেন, লঞ্চের ক্ষেত্রে টিকিট সংগ্রহ করার আগে যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র অবশ্যই দিতে হবে। কেবিন বা ডেক যাই হোক তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও ফটোকপি দিতে হবে। অন্যথায় আমাদের পক্ষে টিকিট দেওয়া সম্ভব হবে না। এখানে মালিক, শ্রমিকরা আছেন, আমরা সবাই মিলে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্যই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন এরই মধ্যে লঞ্চের কেবিনের মধ্যে কয়েকটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো অনুসন্ধান বা তদন্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কিন্তু বিপদে। কাজেই আমরা নিশ্চিত হতে চাই কোন যাত্রী কোন লঞ্চে পারাপার হচ্ছেন। আর যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।
তিনি বলেন, আরও একটা বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের যে নির্ধারিত ভাড়া আছে, সেটাই নিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে অনেকেই কম ভাড়া নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী লঞ্চের ভেতর তুলে ফেলেন। এতে লঞ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। কম ভাড়া নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী যেন না তোলা হয় সে বিষয়ে মালিকরাও একমত হয়েছেন। জাতীয়পরিচয় পত্র দেখে টিকিট সংগ্রহ নিয়ম ঈদের সময় কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ বলেন, আমার মনে হয়-যারা যাত্রী আছেন তাদের সবার বিকাশ বা নগদে অ্যাকাউন্ট আছে। ওখানে তো আইডি নম্বর লাগে। মোবাইলের মধ্যে যে আইডি নম্বর আছে ওটা দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। সেটার নির্দেশনা আজকে আমরা দিয়ে দিলাম। সেটার একটা কপি যেন আমাদের দেয়। তিনি বলেন, যখন একটা ঘটনা ঘটে মালিকরা খুব বেশি দোষারোপ হন। সে জায়গায় আমরা যাচাই-বাছাই করতে পারি না যাত্রীকে। লঞ্চে শত বছরের চলাচলের অভ্যাস, সেটা আমরা এক রাতেই পরিবর্তন করতে পারবো না।
ঝুঁকিপূর্ণ লঞ্চের বিষয়ে কী ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ছোট লঞ্চে বরিশাল গেছি এক সময়। তখন প্রকৃতি আরও জটিল ছিল। পদ্মা মেঘনা যমুনার উত্তাল ঢেউ তখন আরও বেশি ছিল। আগে পদ্মার ঢেউ ৬ ফিট ৭ ফিট ওপরে উঠে যেত। এখন অত ওপরে উঠে না। তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জ মুন্সীগঞ্জে ছোট নৌযান বন্ধ করেছি। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতি যে জায়গায় চলে গেছে, আগে সর্বোচ্চ কার্গো জাহাজ ছিল দুইশ থেকে তিনশ টন। এখন দুই হাজার থেকে তিন হাজার টনের জাহাজ হয়ে গেছে। এগুলোতে যখন পণ্য থাকে না, তখন যে পরিমাণ ওপরে উঠে যায় ব্রিজ থেকে দূরত্ব দেখা যায় না। ছোট ছোট নৌযানগুলো চোখের আড়ালে চলে যায়। কাজেই এখন আমাদের মান বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের যে অর্থনীতি, নৌযানের যে ব্যাপ্তি বেড়েছে সেটার সঙ্গে ছোট ছোট নৌযানগুলো আর যায় না। সে কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখানে ছোট নৌযানগুলো আর চলবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, লঞ্চ গুলোর রূপসজ্জার জন্য যে ম্যাটেরিয়ালস ব্যবহার করা হয়, তা আগুনের জন্য খুবই ভয়াবহ। কাজেই এগুলো পরিহার করে অন্য কোনো ম্যাটেরিয়ালস যেমন কাঠ ব্যবহারের জন্য গাইড লাইন দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে সেগুলো পরিবর্তন করে ফেলবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন