বাগমারা (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজশাহীর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদিকা খতেজান বেগমের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে সমিতির নামে আসা অনুদান আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সমিতির নামে বিভিন্ন বরাদ্দ ও অনুদান আত্মসাতের বিষয়টি প্রকাশ পাওয়াতে সদস্যরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের কিসমত বিহানালী গ্রামের অর্ধশত নারী গত ১৯৯৯ সালে ‘কিসমত বিহানালী মহিলা সমাজকল্যাণ সমিতি’ নামে একটি সমিতি গঠন করেন। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর রাজশাহী মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তর থেকে নিবন্ধন লাভ করে। গত ২০০৫ সাল পর্যন্ত সমিতির প্রকৃত সদস্যরা তা পরিচালনা করে আসছিলেন। তবে খতেজান বেগম ওই সময়ে কৌশলে সমিতিটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন। সমিতির সভানেত্রী হিসেবে তার ছেলের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে তা নিজ গ্রাম উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের চাঁইসাড়া গ্রামে স্থানান্তর করেন। তবে কাগজ-কলমে তা আগের স্থানেই রয়েছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে সমিতির নামে বিভিন্ন অনুদান ও বরাদ্দ খতেজান আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিছুদিন আগে বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর সমিতির সদস্যদের পক্ষে আয়েশা সিদ্দিকা জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন। গতকাল (শনিবার) সকাল সাড়ে ১০টায় উভয়পক্ষকে তদন্তের জন্য নিজ দপ্তরে ডাকা হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সমিতির প্রকৃত সদস্যরা খতেজানকে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে অবরুদ্ধ করে রেখে বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তারা সমিতির নামে আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত দেয়া ও সমিতি ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান। সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভানেত্রী রিনা বেগম অভিযোগ করেন, সরকারি অনুদান নিয়ে দেয়ার কথা বলে ২০০৫ সালে খতেজান বেগম কিছু কাগজপত্র চেয়ে নেন। এর পর তিনি সমিতি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে সমিতির সব ধরনের সুযোগি-সুবিধা তিনিই ভোগ করে আসছেন। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা একেএম ওয়াহিদুজ্জামান জানান, সমিতিটির সব কাগজপত্র মাড়িয়া ইউনিয়নের কিসমত বিহানালী গ্রামের ঠিকানায় রয়েছে। তবে কার্যক্রম অন্যত্র খতেজান বেগমের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। অনুদানও জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রহণ করার সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি জানান, সম্প্রতি বাগমারায় যোগদানের পর অনিয়মের বিষয়টি জানতে পেরেছেন। এ সব বিষয়ে খতেজান বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অর্থ আত্মসাতের বিষয় অস্বীকার করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন