বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মারিয়ুপোলে শেষ প্রহর গুনছে ইউক্রেন

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:১২ পিএম

নিরন্তর রুশ হামলায় বিধ্বস্ত গোটা শহর। কার্যত মৃতনগরীতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের দক্ষিণের বন্দর শহর মারিয়ুপোল। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেও এত দিন প্রাণপণ লড়াই জারি রেখেছিল ইউক্রেনের সেনা। তবে তারা জানিয়েছে, মারিয়ুপোলে সম্ভবত আজই যুদ্ধের শেষ দিন। কারণ, যে পরিমাণ অস্ত্র মজুত, তা দিয়ে আর লড়াই করা সম্ভব নয়।

৩৬তম মেরিন ব্রিগেড বিবৃতিতে বলেছে, ‘৪৭ দিন ধরে বন্দর রক্ষায় সব রকম প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এ বার আর পিছু হটা ছাড়া রাস্তা নেই।’ ইতিমধ্যেই মারিয়ুপোল ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনা। তারাও জানিয়েছে, মারিয়ুপোলে এখন আজভস্টাল লৌহ ও ইস্পাত কেন্দ্র এবং বন্দর দখলের লড়াই চলছে। ইউক্রেনের বক্তব্য, শুধু অস্ত্র সঙ্কট নয়। প্রায় অর্ধেক সেনা আহত। এখনও অঙ্গহানি হয়নি যাদের, তারা এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

এক দিকে ইউক্রেনের মরণপণ লড়াই অন্য দিকে রাশিয়ার মানবতা লঙ্ঘনের বিষয়টি আজ তুলে ধরেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার দাবি, মারিয়ুপোলে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে রাশিয়া। এত মানুষকে মারার পরেও আক্রমণ থামায়নি। হানায় বিপর্যস্ত তিনশোরও বেশি হাসপাতাল। এই পরিস্থিতিতে আজ দক্ষিণ কোরিয়ার কাছেও অস্ত্র সাহায্য চেয়েছেন জেলেনস্কি।

দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে এক ভিডিও বার্তায় তার বক্তব্য, অস্ত্র পাওয়া গেলে শুধু সাধারণ মানুষ নন, ইউক্রেনকেও বাঁচানো সম্ভব হবে। তার কথায়, ‘‘সামরিক প্রযুক্তিরও প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের সাহায্য করতে পারে।’’ যদিও আজ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুদ্ধবিমান ধ্বংসকারী অস্ত্র চেয়েছিলেন। সেই অনুরোধ খারিজ করে দেয়া হয়েছে।

অন্য দিকে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়েছেন, শান্তি আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত হলেও সামরিক অভিযানে ভাটা পড়বে না। রুশ টেলিভিশনে লাভরভ জানান, প্রথম বার শান্তি আলোচনার সময়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নির্দেশ দিয়েছিলেন, অভিযান স্থগিত রাখার। তার অভিযোগ, ইউক্রেনের তরফে সদর্থক সাড়া না মেলায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে না পৌঁছলে কোনও ভাবেই আক্রমণ থামানো হবে না।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গতকাল বৈঠক করেন অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার। পুতিনকে তিনি অবিলম্বে যুদ্ধ থামানোর আবেদন জানান। তার কথায়, ‘‘যুদ্ধে দু’পক্ষের কেউ জেতে না।’’ ইউক্রেনে হামলা শুরুর পরে নেহামারই প্রথম ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের নেতা, যিনি পুতিনের সঙ্গে কথা বললেন।

ইতিমধ্যেই উপগ্রহচিত্রে দেখা গিয়েছে, পূর্ব ইউক্রেনে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র জড়ো করছে রাশিয়া। দক্ষিণেও সেই কৌশল বজায় রাখতে চায় পুতিন বাহিনী। আমেরিকার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডনবাস অঞ্চলে দ্বিগুণ বা তিন গুণ সেনা বাড়াতে চলেছেন পুতিন। তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি। রাশিয়া দাবি করেছে, সপ্তাহান্তে ইউক্রেনে একাধিক ‘এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউক্রেনের নিপ্রোয় চারটি এস-৩০০ অ্যান্টি এয়ারক্র্যাফ্ট মিসাইল ধ্বংস করা হয়েছে। সূত্র: আল-জাজিরা, এএফপি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
খায়রুল আনাম। ১৩ এপ্রিল, ২০২২, ৫:০৩ এএম says : 0
যুদ্ধের বর্তমানের অবস্থার খবরাখবরে মনে হচ্ছে, রাশিয়া কোনভাবেই তার লক্ষবস্তু থেকে সরবে না। আমেরিকা চাইছে যুদ্ধ দীর্ঘদিন চলুক। ওর লক্ষবস্তু হচ্ছে অস্তবিক্রয়। কিন্তু বিনিময়ে ইউক্রেনের বিশাল ধংসের মুখে ঠেলে দেয়া। সাহায্য নিয়ে রাশিয়ার মত বৃহৎ শক্তির সাথে যুদ্ধে কেবল ইউক্রেনের অধঃপতনই হচ্ছে। এছাড়া কিছু অর্জন সম্ভব নয়। তাই ইউক্রেনের উচিৎ বলা ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। নেটোর চুক্তি ভঙ্গ এবং বেইমানি এই যুদ্ধের কারণ । সবাই বুঝে কিন্তু ইউক্রেন বুঝে না। হয়তো সব হারিয়ে বুঝবে। নিজকে অনেক বৎসর পিছনের দিকে দৌড়ানো শেষ করে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন