শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

চবিপ্রবি’র জমি অধিগ্রহণের নামে ৩৫০ কোটি টাকা লোপাটের চেষ্টা আসামি হবেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৫ এএম

জমি অধিগ্রহণের সুযোগ ৩৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টার সকল প্রমাণ এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে। প্রাপ্ত এসব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে চাঁদপুর লক্ষ্মীপুর মডেল থানার ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সংস্থাটি। মামলায় এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও অনেকের নাম আসবে। গতকাল শনিবার টেলিফোনে এ প্রতিবেদককে এসব তথ্য জানান দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

তিনি জানান, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের( চাবিপ্রবি) নামে জমি অধিগ্রহণের নামে ৩৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম খান। দীর্ঘ দিন ধরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছিলেন তিনি। এ ক্ষেত্রেও সেলিম খানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম মাঠ পর্যায়ে টানা এক মাস অনুসন্ধান চালিয়ে দুর্নীতির বহু প্রমাণাদি সংগ্রহ করেছে। তথ্য সংগ্রহ শেষ হলেই কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক।

দুদক সচিব আরও বলেন, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি, জেলা প্রশাসন যখন ওই জমির মূল্য নির্ধারণ করে তখন বিষয়টি ধরা পড়ে। লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম খান উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জমির অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে কমপক্ষে ১৩৯টি দলিল করেছেন। এতে জমির বিক্রি-ক্রয় দেখিয়েছেন, যাতে মৌজামূল্য বাড়িয়ে ২০ গুণ দেখানো হয়। ওই প্রাক্কলনে যাতে বর্ধিত মূল্যটি আসে তার পরিকল্পনা করেছিলেন।

কিন্তু জেলা প্রশাসন বিষয়টি বুঝতে পারায় পরে তিনি আর এটি নিয়ে অগ্রহসর হতে পারেননি। কিন্তু দলিল এবং তার প্রসেস তিনি নিয়েছিলেন। তিনি যদি সফল হতেন তাহলে সরকারের ৩৬০ কোটি টাকা গচ্ছা যেতো। এ বিষয়ে প্রাথমিক রেকর্ডপত্র কমিশনের হস্তগত হয়েছে। এ কাজে তিনি সফল না হলেও এটি একটি জালিয়াতি।
মাহবুব হোসেন বলেন, চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনা থেকে অনুমতি ছাড়াই ফ্রিস্টাইলে বালু উত্তোলন করেন। কারণ বালু মহল ইজারার একটি বিষয় রয়েছে। এখানে যদি সেরকম কোনও কিছু না থাকে তাহলে তিনি কীভাবে বালু উত্তোলন করছেন, কত দিন ধরে তুলছেন- এ বিষয়গুলো দেখতে আমাদের এনফোর্সমেন্ট টিম সেখানে গিয়েছিল। তারা জেলা প্রশাসন, জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছ থেকে আরও তথ্য নেবে। এরপর যে বিষয়গুলো উঠে আসবে সেগুলো সম্পর্কে আইন মোতাবেক সামনের দিকে অগ্রসর হবো।

তিনি বলেন, আপাতত জমি অধিগ্রহণের সুযোগে দলিল বেচাকেনা করে মূল্য বৃদ্ধি এবং বালু উত্তোলনের বিষয়ে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম তথ্য পেয়েছে। এ সম্পর্কে আরও যখন অনুসন্ধান হবে তখন এর সঙ্গে আর কারা জড়িত বা কী কী বিষয় সম্পৃক্ত আছে সেগুলো জানা যাবে। যারাই এসবের সঙ্গে জড়িত তাদের নাম অটোমেটিক্যালি চলে আসবে। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শেষ হলে সেটি কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। এরপর আইন যে বিষয়টি পারমিট করে সেটি করা হবে।

উল্লেখ্য, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণের জন্য লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের মেঘনা পাড়ে একটি এলাকা নির্ধারণ করা হয়। পরে ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যান সেলিম খান, তার ছেলেমেয়েসহ অন্যান্য জমির মালিকরা অস্বাভাবিক মূল্যে দলিল তৈরি করেছেন। ফলে ওই জমি অধিগ্রহণে সরকারের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫৩ কোটি টাকা। জমির অস্বাভাবিক মূল্য দেখে জেলা প্রশাসক তদন্ত করলে বেরিয়ে আসে সরকারের কয়েক শ’ কোটি টাকা লোপাটের পরিকল্পনার তথ্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
উজ্জ্বল ২৪ এপ্রিল, ২০২২, ৮:০৫ এএম says : 0
অপেক্ষায় রইলাম
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন