শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে এবং সংসদ বাতিল করা না হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বান সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বিএনপির লক্ষ্য অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে সম্ভব না। এই সংসদ বাতিল না হলে সম্ভব না। দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে সেই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে
পারবে না। এটা বিজ্ঞানাগার থেকে আরম্ভ করে সব কিছুতে পরীক্ষিত। সেই কারণেই বিএনপির সিদ্ধান্ত এই সরকারের অধীনে কোনো প্রহসনের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে না।
নিউমার্কেটে সংঘর্ষে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেনের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের প্রতিবাদের জায়গা শুধু প্রেসক্লাব নয়; ঢাকা শহরের কমপক্ষে শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা আছে সেখানেও প্রতিবাদ করতে হবে। এই আন্দোলন নিজ নিজ এলাকায় ছড়িয়ে দিতে হবে। বড় রাস্তা, ছোট রাস্তা,অলিগলি পাড়া মহল্লায় ছড়িয়ে দিতে হবে। সব জায়গায় প্রতিবাদের ঝড় তুলতে হবে। তা না হলে যে লক্ষ্য অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন তা দুরূহ হবে।
নিউ মার্কেটের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমরা প্রতিবাদ করছি নিউ মার্কেট এলাকায় ঘটনা নিয়ে। ঢাকা শহরের যত মার্কেট আছে সব মার্কেটেই বেহাল। এখানে (নিউ মার্কেট) ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করেছে, সেই কারণে মারামারি হয়েছে। শুধু এটাই নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামনে যে মার্কেটগুলো আছে তারা বছরের পর বছর পেমেন্ট দিয়ে যাচ্ছে। আজকে শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদেরকে চাঁদাবাজি, ছিনতাই থেকে আরম্ভ করে এমন কোনো অপকর্ম নাই যে অপকর্মের মধ্য দিয়ে অর্থ লুটপাট করা একটি অভ্যারণ্য সৃষ্টি করেছে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দাবি করেন, ১০ লাখ কোটি টাকা তো এমনি হয়নি। এই ছোট-বড়-মাঝারি থেকে আরম্ভ করে তাদের লুটপাটের টাকাই বিদেশে ১০ লাখ কোটি টাকা হয়েছে।
তিনি বলেন, এক দফা এক দাবি, শেখ হাসিনা তুই কবে যাবি’ এই আন্দোলন আমাদের চলমান। কখন বেগমান হবে, তার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, কথা বলার সময় দল, জনগণ ও কর্মীদের সেন্টিমেন্ট বুঝে রাজনৈতিক কথা-বার্তা বলবেন। এমন কোনো কথা বলবেন না, যাতে নেতাকর্মীরা আপনাদেরকে সন্দেহের চোখে দেখে। দলের মধ্যে কেউ যেন গণদুষমনের তালিকা ভুক্ত না হন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এদেশে যারা শাসন করেন এবং সরকারের পেটোয়া বাহিনীর চাঁদাবাজির কারণেই নিউ মার্কেটের ঘটনার সূত্রপাত। ঢাকা শহরসহ বাংলাদেশের সব মার্কেটে কারা চাঁদাবাজি করছে? - প্রশ্ন রেখে বিএনপির এই নেতাই উত্তর দেন, সরকারের ছত্রছায়ায়, যারা সরকারি দল করে, তাদের অঙ্গসংগঠন করে, তারা চাঁদাবাজি করছে। জনগণের প্রথম প্রশ্ন নিউ মার্কেটের ঘটনা কেনো? - চাঁদাবাজির জন্য। করেছে কারা? - আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থকরা।
নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনে খন্দকার মোশাররফ বলেন, এই নিউ মার্কেটের দোকানিদের প্রতিবাদকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য যারা হামলা করে এভাবে নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে, যেখানে দুইজন নিহত হয়েছে ও বহু আহত হয়েছে, এরা কারা? - যারা চাঁদাবাজি করেছিলো। সেই কথা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটিয়েছে।
আজকে জনগণের প্রশ্ন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না। অথচ মকবুল হোসেন তিনি আমাদের নেতা এবং নিউ মার্কেটে তার দোকান আছে এটাই তার দোষ। সেজন্য আজকে গ্রেপ্তার এবং তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। আশ্চর্যের বিষয় সেলুকাস, এই বাংলাদেশ আমরা দেখছি।
বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে দলের নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরফত আলী সপু; যুবদলের সাইফুল আলম নিরব; স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল; কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন; ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণসহ কেন্দ্রীয় এবং ঢাকার দক্ষিণ ও উত্তর সিটির নেতারা বক্তব্য রাখেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন