শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

রোজার মাসে পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০১ এএম

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বাজার সংশোধনে কখনও কখনও সূচক বেড়েছে টানা কয়েক দিন। এরপর আবার সংশোধনে গিয়ে টানা পড়তে থাকার প্রবণতা দেখা গেছে। তবে রমজানের শুরুতে ধস পরিস্থিতি থেকে গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেখা গেছে। চলতি সপ্তাহে দেখা গেছে ব্যতিক্রম এক চিত্র। দুই সপ্তাহ মিলিয়ে টানা চার কর্মদিবস বাড়ার পর স‚চক কমেছিল এক দিন। এবার সংশোধন এই এক দিনেই শেষ হয়েছে। গত সোমবার স‚চক সামান্য কমলেও মঙ্গলবারই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। পরদিন গতকাল বুধবার দিনভর উঠানামা করতে করতে বেলা শেষে প্রায় আগের দিনের অবস্থানেই শেষ হয় লেনদেন। সূচক বাড়ে কেবল শূন্য দশমিক ০৭ পয়েন্ট। এদিন বাজারের ইতিবাচক প্রবণতা যেটি দেখা গেছে, সেটি হলো লেনদেন। দুই সপ্তাহ আগে যেটি চার শ’ কোটি টাকার নিচে নেমে গিয়েছিল, সেটি এখন নয় শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে আবার হাজার কোটি টাকার দিকে ছুটছে। দিন শেষে ৯৩২ কোটি ৪৯ লাখ ৩২ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যা রোজায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ঈদের আগে কেবল আর একটি কর্মদিবস আছে। আজ বৃহস্পতিবার সেটি এক হাজার কোটি টাকা ছড়ায় কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়। এর আগে গত ২৪ এপ্রিল ৮৯৫ কোটি ৮৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা ছিল রোজার সর্বোচ্চ লেনদেন। আর মাসটির প্রথম কর্মদিবস ৩ এপ্রিল লেনদেন ছিল ৮৩৬ কোটি ৬২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে যত টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে, চলতি রমজান মাসে এর আগে তা কখনও হয়নি। লেনদেন বাড়তে থাকাকে বাজারের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর হতাশ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবার আশা তৈরি হচ্ছে। এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা দুই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ করার পর লেনদেন ধারাবাহিকভাবেই বাড়ছে। টানা চার দিন বেড়ে এক দিন স‚চক কমার দিন কেবল কমেছে লেনদেন।
রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার পর বাজারে যে ধস নামে, সেটি ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ ঠিক করে দিয়েছিল মার্চে। শুরুতে এটি বাজারে পতন ঠেকাতে পারলেও পরে এটিই লেনদেন কমে যাওয়ার একটি কারণ হিসেবে দেখা দেয়।
পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির দুই শতাংশ দরপতন খুবই স্বাভাবিক একটি চিত্র। নানা সময় দেখা যায়, এর চেয়ে বেশি দর কমার পর সেদিনই ক্রয়চাপে আরও দাম বেড়েছে। কিন্তু দুই শতাংশের এই বিধানের কারণে দেখা যায়, দুই শতাংশ দর কমে যাওয়ার পর ক্রেতা উধাও হয়ে যাচ্ছে। এভাবে দিনের পর দিন দরপতন ঘটতে থাকে। গত ২০ এপ্রিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করার পরদিন থেকেই লেনদেনে দেখা যায় ইতিবাচক প্রবণতা। আদেশ আসার পর প্রথম কর্মদিবস ২১ এপ্রিল লেনদেন দেড় শ’ কোটি টাকা বেড়ে হয় ৭৫৪ কোটি ৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। পরের কর্মদিবস ২৪ এপ্রিল লেনদেন আরও বেড়ে হয় ৮৯৫ কোটি ৮৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা। এই দুই দিন মিলিয়ে মোট চার কর্মদিবস সূচক বাড়ার পর ২৫ এপ্রিল বাজার সংশোধনে লেনদেন এক দিন কমে হয় ৫৯৩ কোটি ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। তবে সংশোধন কাটিয়ে পরের দিনই লেনদেন এখান থেকে দেড়শ কোটি টাকা বেড়ে হয় ৭৬৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। সেখান থেকে আরও ১৬৫ কোটি ৭৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকা বাড়ল লেনদেন। এদিন বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের দরও। সব মিলিয়ে ১৭১টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৮টির, আর অপরিবর্তিত ৫২টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
স্টক ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ঈদের আগে বাজার থেকে টাকা তোলার সুযোগ না থাকায় সেল প্রেসারটা ছিল না। লেনদেনও বেড়েছে। ঈদের পরে সেল প্রেসার থাকার কথা নয়, আশা করা যাচ্ছে বাজার সার্বিক অবস্থা তখন ভালো হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন