‘রমজান মাস, যাতে পবিত্র কুরআন নাজিল করা হয়েছে মানব জাতির হেদায়াতের জন্য, যাতে রয়েছে হেদায়াত ও হক-বাতিলের পার্থক্যকারী নানা বর্ণনা। (সূরা বাক্বারাহ) আরো সুনির্দিষ্টভাবে সূরা ক্বদর-এ আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আমি তা (কুরআন) নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। আপনি কী জানেন লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর (-এর ইবাদাত) হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। ফেরেশতাগণ ও রূহ (জিব্রাঈল আ.) এ রাতে অবতরণ করেন তাদের রব্বের অনুমোদনক্রমে সব ধরনের নির্দেশনা নিয়ে। ফজর উদিত হওয়া অবধি সেই রাত হয় শান্তির’।
সহীহুল বুখারীতে আবূ হুরাইরাহ রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে কিয়ামুল্লাইল করবে আল্লাহ তা‘আলা তার পূর্বকৃত সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।
মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে তালাশ করতে বলেছেন। অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭ এবং ২৯ রমজানের রাতে লাইলাতুল কদর হবে। আমরা ২১, ২৩ ও ২৫ রমজানের রাত অতিক্রম করে চলে এসেছি। আজ ২৬ রমজান। দিবাগত রাত ২৭শের রাত। এই ২৭ রমজানের রাতের প্রতিই বিশেষ নজর রাখা হয় এবং সরকার এ রাতে ইবাদতের কারণে পরবর্তী দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে থাকে। যারা শটকাটে বিশ্বাসী, তারা শুধুমাত্র ২৭শের রাতে ইবাদত করার মাধ্যমেই ধরে নেন তিনি লাইলাতুল কদরের ফজিলত অর্জন করে ফেলেছেন। সাহারীর পূর্ব মুহূর্তে তৃপ্তির আবহ নিয়ে তিনি পরবর্তী দিনের রোজায় মনোনিবেশ করেন। কিন্তু লাইলাতুল কদরের প্রকৃত ফজিলত তালাশকারীর কোনো তৃপ্তি নেই। তিনি শওয়ালের চাঁদ উদিত হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাত, তাযকীর-তাহলীল, দান-খয়রাত ও যত ধরনের আমালে সালেহ আছে তা করার মাধ্যমে। তার কাছে শটকাট ধরনের কোনো পদ্ধতি নেই। তিনি লাইলাতুল কদরের বিশেষ মর্যাদার রাতকে তালাশের চেয়ে বরং রমজানের শেষ দশকের প্রতিটি মুহূর্তকে মূল্যবান মনে যত বেশি সম্ভব আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাতে মশগুল থাকেন। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে একমাত্র তার সন্তুষ্টির জন্য বেশি বেশি ইবাদাত করার তওফিক দিন। আমীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন