শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

বিনিয়োগকারীদের হতাশা

ঈদের আগে শেয়ারবাজারে শেষ কার্যদিবস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৬ এএম

ঈদের আগের শেষ কার্যদিবস ভালো কাটেনি বিনিয়োগকারীদের। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ফলে হতাশা দিয়েই ঈদের আগের শেষ কার্যদিবস পার করলেন শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই মূল্যসূচকের ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যায়। সূচক হঠাৎ একটু ঊর্ধ্বমুখী হলে কয়েক মিনিটের মধ্যে আবার পতনে ফিরে যায়। প্রথম ঘণ্টার লেনদেন অন্তত ছয় বার সূচকের উত্থান-পতন হয়। আর প্রথম ঘণ্টার লেনদেন পার হওয়ার পর সূচক এক বারের জন্যও আর ঊর্ধ্বমুখী হয়নি। ফলে হতাশা দিয়েই ঈদে যেতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।
নানা ইস্যুতে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে পতনের মধ্যে রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে শেয়ারবাজারের পতন আরও ত্বরান্বিত হয়। এর মধ্যেই চলে আসে রোজা। রোজা ও ঈদের খরচ যোগাড় করতে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। ফলে পতনের মধ্যে নিমজ্জিত হয় বাজার।
পরিস্থিতি সামাল দিতে একদিনে দাম কমার সর্বোচ্চ সীমা কমিয়ে আনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কিন্তু এরপরও দরপতন ঠেকানো যাচ্ছিল না। উল্টো বাজারে তারল্য সংকট দেখা দেয়। বাজারে তারল্য সংকট দ‚র করতে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিলের একশো কোটি টাকা সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশে (আইসিবি)। আইসিবির এ বিনিয়োগ সুফল এতে দিতে না পারলে বাজারে তদারকি বাড়ায় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। অনিয়ম করায় একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার পদক্ষেপের কিছু ইতিবাচক প্রভাব পড়ে শেয়ারবাজারে। ফলে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। এমনকি চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলে। এতে ঈদের আগে বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকবে এমন আশায় বুক বাঁধেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু তাদের সেই আশা পূরণ হয়। ঈদের আগের শেষ সপ্তাহে পতনই দেখতে হলো বিনিয়োগকারীদের।
অন্যদিকে, দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৬৫৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৯০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিকিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪১টির। আর ৪৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৬৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৯৩২ কোটি ৪৯ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৬২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অংকে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেএমআই হাসপাতালের ৪৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪২ কোটি ২ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জিপিএইচ ইস্পাত। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-ইউনিক হোটেল, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, সোনালী পেপার, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এবং ফরচুন সুজ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৩৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ২১ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয় ২৮৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৩টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন