আবুল কাশেম আবাদী
বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থানে হাওর অঞ্চলের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানের দিক দিয়ে হাওর অঞ্চল খুবই দুর্গম এবং গ্রামগুলো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। পুরো সুনামগঞ্জ জেলা, হবিগঞ্জ জেলার বড় অংশ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও মৌলভীবাজার জেলার অংশবিশেষসহ বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল এবং কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার বড় অংশ হাওর বেষ্টিত। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ হাওরগুলো হলোÑ শনির হাওর, হাইল হাওর, হাকালুকি হাওর, ডাকের হাওর, মাকার হাওর, ছাইরার হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর, করচার হাওর, চন্দ্র সোনার খাল এবং কাউয়াদীঘির হাওর। বৃহত্তর ময়মনসিংহের উল্লেখযোগ্য হাওরগুলো হলোÑ ডিঙ্গাপোতা, নাওটানা, চর হাইজদিয়া, লক্ষ্মীপাশা, কীর্তনখোলা, লক্ষ্মীপুর, গোবিন্দডোবা, চাকুয়ার হাওর, জয়নশাহী। এ হাওরগুলোকে বাংলাদেশের সবচেয়ে উৎপাদনশীল জলাভূমি হিসেবে গণ্য করা হয়। মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, হাওরগুলো মাদার ফিশারি। এখানে হরেক রকম মিঠা পানির মাছ আছে। ১৫০ প্রজাতির মাছ এবং ১২০ প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ রয়েছে।
হাওরগুলো কৃষির জন্যও অতি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। বাংলাদেশে ছোট বড় সব মিলিয়ে ৩৭৩টি হাওর রয়েছে। এসব হাওরে ০.৭৩ মিলিয়ন হেক্টর চাষযোগ্য জমি রয়েছে; যা থেকে বছরে একটি ফসল আবাদ করে উৎপাদন হয় বিপুল পরিমাণ ধান।
মোহনগঞ্জ একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরশহর। বাংলাদেশের রেলওয়ের শেষ প্রান্ত নেত্রকোনা জেলার সীমান্ত সর্বোপরি সুনামগঞ্জ ও বৃহত্তর সিলেট জেলার সাথে নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও ঢাকার যোগাযোগের অন্যতম যোগসূত্র রচনা করেছে। এই মোহনগঞ্জ দেশের উত্তরাংশের কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রায় ৪৪টি উপজেলা নিয়ে ভাটি বাংলার হাওর এলাকা গঠিত। তবে মোহনগঞ্জ শহরটি একটি হাওর বেষ্টিত শহর। হাওর অঞ্চলের সাথে শিক্ষা, চিকিৎসা, দাপ্তরিক এবং সাংস্কৃতিক নানা মাত্রিক যোগসূত্র রচনায় মোহনগঞ্জ পৌর শহরের উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব ও ভূমিকা রয়েছে। জনশ্রুতি আছে তৎকালীন সময়ে হাওরের রাজধানী বলা হতো মোহনগঞ্জকে। তাই হাওরবাসীর সচেতন মহল ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষ থেকে আমরা হাওর এলাকায় একটি উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক গবেষণা কেন্দ্র করার জন্য সরকারের দৃষ্টি কামনা করছি।
ষ লেখক : প্রাবন্ধিক
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন