বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

শ্রমিকরা ভালো নেই

সরদার সিরাজ | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২২, ১২:০৩ এএম

আজ ১ মে, শ্রমিকের বিজয়ের দিন। আনন্দের দিন। অনেক সংগ্রাম, নির্যাতন, জেল-জুলুম ও প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এ বিজয়। এ দিনে ১৮৮৬ সালে আমেরিকার হে-মার্কেটের শ্রমিকদের বিজয় অর্জিত হয় সর্বপ্রথম। কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টাসহ বহু দাবি মেনে নেয় মালিকরা। তার পর হতেই ঐতিহাসিক এ দিনটি পালিত হয়ে আসছে বিশ্বব্যাপী। মালিক, সরকারসহ সব পেশার মানুষ এ দিনটি পালন করে। সরকারিভাবে ছুটি থাকে। ফলে জাতীয় উৎসবে পরিণত হয় দিনটি। কিন্তু এ বিজয় লাভের দীর্ঘকাল পরও শ্রমিকের শোষণ, নির্যাতন, বঞ্চনা, নিষ্পেষণ বন্ধ হয়নি! প্রতিষ্ঠিত হয়নি ন্যায্য অধিকারগুলো। অথচ, শ্রমিকের রক্ত পানি করা শ্রমের বিনিময়ে বিশ্ব আজ আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক হচ্ছে। মানুষ ছুটে চলেছে চাঁদে-মঙ্গলে। সেখানে বসবাসের প্রক্রিয়া চলছে। এই কল্পনাতীত উন্নতির পরও শ্রমিকের কাক্সিক্ষত উন্নতি হয়নি। তারা মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত। আর মালিকরা ধনী থেকে অধিক ধনী হয়েছে। বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়সম। এর প্রতিফলন ঘটেছে জীবনের সব ক্ষেত্রেই। তবুও প্রতিকার নেই। ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও, লড়াই কর’ বলে শ্রমিকের গগনবিদারী শ্লোগানও নেই এখন কোথাও। অথচ, একদা এই শ্লোগানে সারাবিশ্ব প্রকম্পিত হতো। মালিকের হৃতপিন্ড কেঁপে উঠতো। সরকারও ভয়ে তটস্থ থাকতো। অনেক দেশে শ্রমিকরাজও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু সমাজতন্ত্রের পতনের পর পুঁজিতন্ত্র ও বিশ্বায়নের জাঁতাকলে পড়ে শ্রমিকের কণ্ঠ এখন স্তব্ধ হয়ে গেছে। তাদের ভাগ্যোন্নয়নের আকাক্সক্ষা তিরোহিত হয়েছে! অথচ, তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারাই বিশ্ব গড়ার প্রধান কারিগর।

করোনা মহামারিও শ্রমিকের ললাটে মরণ আঘাত হেনেছে বিশ্বব্যাপীই। এতে মানুষের জীবন ও জীবিকা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৈশ্বিক মহামন্দা সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে। এর সর্বাধিক শিকার হয়েছে শ্রমিকরা। কোটি কোটি শ্রমিক কর্ম হারিয়ে দরিদ্র হয়েছে। গত ২ জুন আইএলও বলেছে, ‘গত দেড় বছরে করোনা মহামারিতে কর্মসংস্থান হারিয়ে চরম দারিদ্রের মধ্যে পড়েছে বিশ্বের ১০ কোটিরও বেশি শ্রমিক’। শ্রমিকের কর্ম হারানো এখনো চলছে। ইতোমধ্যে বৈশ্বিক দারিদ্র বেড়েছে। লকডাউন ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পণ্য মূল্য আকাশচুম্বী হয়েছে! সাধারণ মানুষসহ শ্রমিকের ঘরে ঘরে চলছে চরম হাহাকার! এই পণ্যমূল্য বৃদ্ধি সহসা কমবে না। কারণ, করোনা মহামারি এখনো শেষ হয়নি। কোথাও কোথাও বরং নতুন করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেখানে লকডাউন চলছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধেরও শেষ কবে হবে তা বলা কঠিন। পরিস্থিতি যতই খারাপ হবে, শ্রমিকের দুর্দশা ততই বাড়বে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি বলেছেন, ‘এবার খাদ্য সংকটের কারণে মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে’। অবশ্য করোনার আগেই শ্রমিকরা সংকটে পড়েছে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে। গত ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন মতে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার কারণে বছরে বিশ্বে গড়ে ২২,৮০০ কোটি শ্রমঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে, যার আর্থিক মূল্য ২৮-৩১ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। এছাড়া, বিশ্বায়নেও শ্রমিকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কারণ, বিশ্বায়নে টিকতে না পেরে বহু কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে অসংখ্য শ্রমিক কর্ম হারিয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহারেও বহু শ্রমিক কর্ম হারিয়েছে। তবুও প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলেছে, ‘২০২৫ সালের মধ্যে যন্ত্রের কাছে চাকরি হারাবে প্রতি ১০ জনের ৬ জন। তখন কর্মস্থলে মানুষ ও মেশিন প্রায় সমান কাজ করবে’। অন্য এক আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্র মতে, ‘২০৩০ সাল নাগাদ ৮০ কোটি শ্রমিক কর্ম হারাবে প্রযুক্তির কারণে’। তবুও প্রযুক্তির ব্যবহার বন্ধ হবে না। বরং বিশ্ব প্রযুক্তি নির্ভর হবে। ফলে শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা নগণ্য হয়ে পড়বে ভবিষ্যতে!

বাংলাদেশের শ্রমিকেরও অবস্থা তথৈবচ। গত ১৩ জানুয়ারি প্রকাশিত বিলস’র প্রতিবেদন মতে, ‘করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গত বছর সরকার ঘোষিত লকডাউনে পরিবহন, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও দোকান শ্রমিকদের আয় কমেছে ৮১%। ওই সময় ৮৭% শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়েছে এবং কর্মক্ষেত্র থেকে খাদ্য, অর্থ সহযোগিতা পেয়েছে ৪৮% শ্রমিক। সরকার থেকে এসব শ্রমিকের ১২% বিভিন্ন সহযোগিতা পেয়েছে’। ইউএনডিপি বলেছে, ‘বাংলাদেশে করোনাকালে গার্মেন্ট কর্মী বিশেষ করে নারী কর্মীদের ৩৫% মজুরী কমেছে’। গত ১০ এপ্রিল বিআইডিএস’র প্রতিবেদন মতে, ‘করোনা মহামারির কারণে দেশের হসপিটালটি অ্যান্ড ট্যুরিজম সেক্টরের ক্ষতি হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি এ খাতের প্রায় ১.৪১ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে। অন্যদিকে, করোনার কারণে কর্ম হারিয়ে ৫-৬ লাখ প্রবাসী দেশে ফেরত এসেছে। এছাড়া, ২০২০ সালের জুলাইয়ে সরকারি সব পাটকল বন্ধ করে শ্রমিকদের বিদায় করা হয়েছে। এসব শ্রমিকের অধিকাংশই কর্ম ফিরে পায়নি। এদিকে, পণ্য মূল্য আকাশচুম্বী হয়েছে। ফলে শ্রমিকরা অবর্ণনীয় দুর্দশায় নিপতিত হয়েছে! অন্যদিকে, যেসব শ্রমিক কর্মরত রয়েছে, তাদের বেতন অনেক কমানো হয়েছে। উপরন্তু অনেকের বেতন নিয়মিত নয়। তাই বেতনের দাবিতে প্রায়ই আন্দোলন করতে হয় তাদের। তাতে মালিকের পেটুয়া বাহিনী ও পুলিশ দ্বারা আক্রান্ত হতে হয়। পবিত্র রমজান মাসেও বেতনের দাবিতে অনেক শ্রমিককে আন্দোলনে নামতে হচ্ছে। এ অবস্থায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাবে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে ৬০%, আসবাবপত্র শিল্পে ৫৫%, প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য শিল্পে ৪০%, চামড়া ও জুতা শিল্পে ৩৫% এবং সেবা শিল্পে ২০% লোক কর্মহীন হয়ে পড়বে বলে এক গবেষণা পত্রে প্রকাশ।

দেশের মোট শ্রমিকের ৮৫% অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের। যাদের কর্ম অস্থায়ী! মজুরীও সামান্য! তারা অসংগঠিতও। তাই তাদেরকে নিয়ে ভাবে না কেউই। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের অবস্থা কিছুটা ভালো। কিন্তু মজুরীর কোন সাম্য নেই। সরকারি, গার্মেন্ট, চা ইত্যাদি খাতের মজুরী ভিন্ন ভিন্ন। জাতীয় নিম্নতম মজুরী না থাকায় এটা হয়েছে। উপরন্তু দেশে বিদ্যমান মজুরীও খুব কম। আইএলও’র গ্লোবাল ওয়েজ রিপোর্ট-২০২০-২১ মতে, ‘ক্রয়ক্ষমতার বিবেচনায় ২০১৯ সালে মাসিক ন্যূনতম মজুরি ছিল- বাংলাদেশে ৪৮ ডলার (বাংলাদেশে শোভন মজুরি প্রয়োজন ২৫২ মার্কিন ডলার), আর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গড় ৩৮১ ডলার। অথচ, ‘বাংলাদেশের শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতার প্রবৃদ্ধি এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ-৫.৮%’। তবুও এ দেশের শ্রমিকের মাসিক ন্যূনতম মজুরী সর্বনিম্ন।

অপরদিকে, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার বেসরকারি খাতে নেই বললেই চলে। যেটুকু আছে, তাও মালিকের পকেটস্থ। বেশিরভাগ নেতা অশ্রমিক। উপরন্তু ব্যতিক্রম কিছু হলেই চাকুরিচ্যুতি, মামলা-হামলা নির্ঘাত। এমনকি গুলি করে হত্যাও। এছাড়া, বেসরকারি খাতের বেশিরভাগ শ্রমিক নিয়োগপত্র পায় না। তাই চাকরি শেষে কোন বেনিফিট পায় না। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় পড়লেও মালিকের পক্ষ থেকে কিছুই করা হয় না। অথচ প্রতি বছর অসংখ্য শ্রমিক কর্মস্থলে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। গত ৯ জানুয়ারি প্রকাশিত বিলস’র প্রতিবেদন মতে, ২০২১ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১,০৫৩ জন শ্রমিক নিহত, ৫৯৪ জন শ্রমিক আহত, নির্যাতনের শিকার ১৪৭ জন (তন্মধ্যে ১২৫ জন আহত হয়। বিভিন্ন খাতে ৪৩১টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে ১৭২টি পোশাক খাতে। উল্লেখ্য যে, রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকদের ৬৭% এখনো শারীরিক অক্ষমতার কারণে কোনো ধরনের কাজ করতে পারে না। নয় বছরেও আহত ও নিহত শ্রমিকরা যথাযথ ক্ষতিপূরণ পায়নি। ঘটনাটির বিচারকাজও শেষ হয়নি বলে সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে! যা’হোক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আইএলও যৌথভাবে গবেষণা করে জানিয়েছে,সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় কাজ করলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগের ঝুঁকি ৩৫% বেড়ে যায়। আর সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০ ঘণ্টা কাজ করলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে ১৭%। কিন্তু এ দেশের শ্রমিকের বিরাট অংশ বর্ণিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি কর্ম করে। ফলে তারা কঠিন রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। উপরন্তু তারা ওভার টাইম ভাতাও ঠিকমত পায় না। শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও দেশে এখন ৪০ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে। তন্মধ্যে ৩০ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে বলে গত ১২ জুলাই বিবিসিতে প্রকাশ। বর্তমানে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা আরো বেড়েছে। শ্রমিকদের নির্যাতনের ক্ষেত্রে প্রশাসন, রাজনীতিবিদ ও সুশীলরা নির্বাক থাকে। কারণ, এরা সকলেই মালিক শ্রেণিরই প্রতিভূ। যুক্তরাষ্ট্রের ‘২০২১: কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্যাকটিসেস’ শীর্ষক প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশে ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রমিকদের সমিতি করার স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ এবং ব্যাপক মাত্রায় শিশু শ্রম রয়েছে।

অবশ্য দেশে কিছু শ্রমিকের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি খাতে। কিন্তু তা খুব কল্যাণকর নয়। কারণ, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই সংগঠন রয়েছে অনেক। যার বেশিরভাগই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট। তাদের মধ্যে সরকারি দল বড় ও শক্তিশালী হয় সব সময়। ফলে তারা শ্রমিকের কল্যাণ করার চেয়ে দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নেই ব্যস্ত থাকে বেশি। এছাড়া, আন্ত:ইউনিয়ন কোন্দল, হয়রানী, হানাহানি, মামলা, চাকরিচ্যুতি ইত্যাদিও ব্যাপক। দুর্নীতি, অনিয়ম ও কাজ না করার অভিযোগও রয়েছে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে, যা শ্রম নীতির পরিপন্থী!

অর্থাৎ সার্বিকভাবে দেশের শ্রমিকের অবস্থা খুবই শোচনীয়! আইটিইউসির গ্লোবাল রাইটস ইনডেক্স ২০২১ মতে, শ্রমিকের অধিকার বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। উপরন্তু যে প্রবাসীদের রক্ত পানি করা শ্রমে দেশের উন্নতি ও রিজার্ভ স্ফীত হয়েছে, সেই প্রবাসীদেরও ভালভাবে দেখভাল করা হয় না। বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা নানা নির্যাতন ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। এমনকি বিদেশে মৃত্যু/অপমৃত্যুতেও তাদের লাশ দেশে আসতে পারে না সঠিক সময়ে। দেশে শ্রমিক আন্দোলন তেমন নেই। অথচ, একদা স্কপ নামে শক্তিশালী একটি প্লাটফর্ম ছিল, যার মাধ্যমে বহুবার শক্তিশালী আন্দোলন হয়েছে। তখন মালিক-সরকার সর্বদা তটস্থ থাকতো। ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য হতো। এখন স্কপের কোন কর্মসূচি নেই বললেই চলে।

শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হবে শ্রমিকদেরকেই। অন্য কেউ তা করে দেবে না। এটাই বাস্তবতা। তাই দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সব শ্রমিককে অরাজনৈতিক এক মঞ্চে শামিল হতে হবে। উপরন্তু এতে সব অসংগঠিতদের সংগঠিত করতে হবে। সর্বোপরি সকলকেই রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক সংশ্লিষ্টতা ছিন্ন করতে হবে। এটা যে করবে না, তাকে সংগঠন থেকে বাদ দিতে হবে। এছাড়া, সব শ্রমিককে প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও শ্রমিকদের দক্ষতা অর্জন করা দরকার। নতুবা এ ক্ষেত্রে ভুল-ত্রুটি শোষণ ধরা সম্ভব নয়। ইতোপূর্বে সরকারি কয়েকটি পাটকল নো লাভ নো লস ভিত্তিতে পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল শ্রমিকরা। কিন্তু তাতে তারা সফল হয়নি। দক্ষতা না থাকায় এটা হয়েছে। তাই শ্রমিকদের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও দক্ষ হওয়া দরকার। বিশেষ করে নেতাদের। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্যও শ্রমিকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দরকার। সর্বোপরি অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আপোসহীন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। গণতান্ত্রিকভাবে শক্তিশালী আন্দোলন করতে হবে। তখন মালিক-সরকার শ্রমিকদের উপেক্ষা করার সাহস পাবে না। ন্যায্য দাবি মেনে নিতে বাধ্য হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
sardarsiraj1955@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন