শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে ঈদ পরবর্তি বিনোদনে পর্যটক সহ সব বয়সী মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ মে, ২০২২, ৫:৫০ পিএম

ঈদ পরবর্তি বিনোদনে দক্ষিনাঞ্চলের প্রকৃতির সাথে মিলে মিশে যাচ্ছেন স্থানীয় ও দুর দুরান্ত থেকে আসা সব বয়সি মানুষ। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্বম কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু করে বরিশালে দূর্গাসাগর দীঘি, বায়তুল আমান জামে মসজিদ, শের এ বাংলা যাদুঘর, বঙ্গবন্ধু উদ্যান, মুক্তিযোদ্ধা পার্কে এখন সকালÑসন্ধা মানুষে ঠাশা।
রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজার হাজার পর্যটকের কলরবে প্রাণবন্ত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। করোনা মহামারীর দু বছরের খড়া কাটিয়ে এবার কুয়াকাটার হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা কিছুটা আশার আলো দেখছেন। ঈদের আগে থেকেই এ সমুদ্র সৈকতের আবাসন সুবিধাগুলো আগাম বুকিং হতে শুরু করে। ঈদের পরদিন থেকেই বিপুল পর্যটকের ভীড়ে মুখরিত কুয়াকাটা। তবে ফেরি বিহীন সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ পর্যটকই সকালে এসে বিকেলে ফিরে যাচ্ছেন । ফলে হোটেল-মোটেলের ওপর চাপ কিছুটা কম পড়ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
রাজধানী ঢাকা ছাড়াও উত্তরবঙ্গ এবং খুলনা,যশোর, কুষ্টিয়ার পর্যটরা আসছেন দু তিন দিন থাকার হিসেব করেই। ফলে আবাসিক হোটেল ও মোটলগুলোর প্রায় ৮০ ভাগ কক্ষই এখন পর্যটকে ঠাশা। ঈদের পরদিন বিকেল থেকেই কুয়াকাটার প্রায় ১৮ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত যুড়েই পর্যটকদের কলরব। সকালে সূর্যোদয় আর সন্ধায় সূর্যাস্ত দেখার বিরল সুযোগ পর্যটকরা মন প্রাণভরে উপভোগ করছেন। সাথে রাখাইন পল্লী, ইকোপার্ক, নারকেল বাগান ফাতরার বন সহ উপক’লীয় বনে ঘুরে বেড়ানোর মত প্রকৃতির সান্নিধ্য সকলেই উপভোগ করছেন। পর্যটকদের নিরাপত্ত সহ সব ধরনের নিয়ম শৃংখলা রক্ষায় পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে সব ধরনের নজরদারীও অব্যাহত রয়েছে।
এদিক বরিশাল মহানগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও ত্রিশ গোডাউনের কির্তনখোলা নদী তীরে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগটিও কাজে লাগাচ্ছেন নগরীর ছোট বড় সবাই। এক সময়ের প্রকৃতির শোভা মন্ডিত বরিশাল মহানগরী থেকে নগরানের ধাক্কায় অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও সবকিছু মুছে যায়নি।
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বৃটিশ যুগে বরিশালে এসে এনগরীর প্রকৃতিক শোভায় মোহিত হয়ে তার অমর উপণ্যাশ ‘মৃত্যু ক্ষুধা’য় সংক্ষিপ্ত বর্ণনাও দিয়েছেন। বৃটিশ যুগে কির্তনখোলা নদী তীরে এ শহরের সুরকীর রাস্তা আর গাছ গাছালীর কথা উল্লেখ করে জাতীয় কবি লিখেছিলেন, ‘বরিশাল। বাংলার ভেনিস। আঁকাবাঁকা লাল রাস্তা। শহরটি জড়িয়ে ধরে আছে ভুজ-বন্ধের মত করে। রাস্তার দু-ধারে ঝাউ গাছের সারি। তারই পাশে নদী। টলমল টলমল করছেÑবোম্বাই শাড়ী পরা ভরা-যৌবন বধুর পথÑচলার মত করে। যত না চলে, অঙ্গ দোলে তার চেয়ে অনেক বেশী। নদীর ওপারে ধানের ক্ষেত। তারও ওপারে নারকেল-সুপারী কুঞ্জঘেরা সবুজ গ্রাম, শান্ত নিশ্চুপ। সবুজ শাড়ীÑপরা বাসর-ঘরের ভয়-পাওয়া ছোট্ট কনে-বৌটির মত। এক আকাশ হতে আর-আকাশে কার অনুনয় সঞ্চারন করে ফিরছে। বৌ কথা কও, বৌ কথা কও। আঁধারে চাঁদর মুড়ি দিয়ে তখনো রাত্রী অভিসারে বোরোয়নি। তখনো বুঝি তার সন্ধ্যা প্রসাধন শেষ হয়নি। শঙ্কায় হাতের আলতার শিশি সাঁঝের আকাশে গড়িয়ে পড়েছে। পায়ের চেয়ে আকাশটাই রেঙে উঠেছে বেশী। মেঘের কালো খোপায় ভূতীয়া চাঁদরে গো’ড়ে মালাটা জড়াতে গিয়ে বেঁেক গেছে। উঠোনময় তারার ফুল ছড়ানো। .........।’
প্রকৃতির সে শোভার যতটুক অবশিষ্ট আছে তাকে ঘিরেই গত দুদিন এনগরীতে সবাই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ নগরী থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দুরে বিশাল দূর্গাসাগর দীঘির শোভা দেখতে ছুটছেন। আবার অনেকেই আরো দুরে গুঠিয়ায় প্রকৃতি ঘেরা আরেক কির্তি বায়তুল আমান জামে মসজিদ এবং চাখারে শের এ বাংলার বাড়ি ও সংলগ্ন যাদুঘরেও বেড়াতে যাচ্ছেন ।
সব মিলিয়ে ছুটির কয়টি দিন সবাই প্রাণ খুলে বেড়িয়ে পড়েছেন প্রকৃতির সান্নিধ্যে। ৫-৫-২০২২.

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন