বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উইন্ডিজ

প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:২৮ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

শামীম চৌধুরী : পীচের উপর ক্যারিবীয় অল রাউন্ডার স্প্রিঙ্গারের উদ্ভাবনী নৃত্যের নামটি হয়ে গেছে স্প্রি ড্যান্স। ভারতের বিপক্ষে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে জয় থেকে যখন মাত্র ৩ রান দূরে, তখন পিএসএলএ’র ক্যারিবিয় অল রাউন্ডার ড্যারেন স্যামি দুবাইয়ে টীম হোটেল থেকে টুইটার বার্তায় লিখেছিলেন, ‘স্প্রিং ড্যান্স দেখার জন্য অপেক্ষায় আছি।’ স্প্রিংগার নিজে ছিলেন না তখন উইকেটে, আউট হয়ে ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে যেনো স্প্রিং ড্যান্স-এর রিহার্সলই দিচ্ছিলেন। খলিল আহমেদকে কেচে কার্টির পুল শটের সঙ্গে সঙ্গে ৩ উইকেটে জিতে দলের সবাই যখন দিয়েছেন ভোঁ দৌড়, লক্ষ্য তাদের কে কার আগে তুলে নিতে পারেন স্ট্যাম্প, তখন নিজের উদ্ভাবনী স্টাইলে স্প্রিং ড্যান্স স্প্রিংগারের। ক্যারিবীয় কার্নিভালকে ও যে ছাপিয়ে গেছে ওই নৃত্য।
একেই বলে ইউ টার্ন। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বাংলাদেশ যুবাদের কাছে ০-৩ এ ওয়ানডে সিরিজ হারের পর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ধরাশায়ী ক্যারিবিয়রা। অথচ, এই দলটিই গ্রুপ রাউন্ডের শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে সেই যে ইউটার্ন, আসরের তিন ফেভারিট পাকিস্তানকে পেস বোলিংয়ে হতভম্ব করে অন্য এক দলে আত্মপ্রকাশ, সেমিফাইনালে বাংলাদেশ এবং ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে তারাই কি না অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন! বাংলাদেশে পা রাখার আগে যে দলটির মাত্র ২ ক্রিকেটারের ছিল আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা, ক্যারিবীয় দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো থেকে চিরুনি অভিযান দিয়ে জড়ো করা সেই যুবাদের হাত ধরেই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে প্রথম ট্রফি জয়ের স্বাদ পেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ! কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে পেস অস্ত্রে সত্তর আশি দশকের স্বর্নালী ক্যারিবীয় অধ্যায়কে ফিরিয়ে আনা উইন্ডিজ যুবারা সেই চেনা অস্ত্রেই ঘায়েল করেছে ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে।
ভারতের ব্যাটিং ভার্সেস ক্যারিবীয় পেসÑ প্রাক ফাইনাল আলোচনায় এটা নিয়েই হয়েছে গবেষণা বিস্তর। তবে আসরটিতে গতি’র বোলিংয়ে বিস্ময়ের জন্ম দেয়া ক্যারিবীয় পেস অ্যাটাকেই ছিন্ন ভিন্ন হতে হয়েছে ভারতকে। জোসেফ নামের ভয়ংকর পেস বোলারের প্রথম স্পেলেই (৬-০-১৭-৩) ব্যাকফুটে ভারত যুবাদের নামিয়ে এনেছে ক্যারিবিয়রা। পেস বোলিংয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের বিরল ঘটনা দিয়ে ভারতকে হতভম্ব করা শুরু, নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পতনে ভারতের স্কোরশিটের চেহারা এক পর্যায়ে ৫০/৫, সেখান থেকে দুঃসময়ের কান্ডারি মিডল অর্ডার সরফরাজ রসুলের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের এক আসরে রেকর্ড ৫ম ফিফটিতে (৮৯ বলে ৫১) স্কোর টেনে নিতে পেরেছে ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল ১৪৫ পর্যন্ত। তাও আবার ওয়াইড, নো থেকে প্রাপ্ত বোনাস ১৬টি রানের কল্যাণে।
তবে লো স্কোরিং ম্যাচে জবাব যতোটা সহজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিবে বলে ধরে নিয়েছিল দর্শক, ততোটা সহজ কিন্তু হয়নি। ডেঞ্জারম্যান ওপেনার পোপ পরিচিত রূপ ছেড়ে সংযত ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ করেও বাঁচতে পারেননি (৩)। বাধ্যতামূলক পাওয়ার প্লেকে কাজে লাগাতে পারেনি উইন্ডিজ। সতর্ক ব্যাটিং সত্ত্বেও বাঁ হাতি স্পিনার মায়াঙ্ক ডাগরের বোলিংয়ে (৩/২৫) ধুঁকেছে উইন্ডিজ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এক পর্যায়ে স্কোরশিটে তাদের চেহারা ছিল ৭৭/৫। লমরোর বলে ২০ রানের মাথায় সিøপে সফরাজের হাত থেকে এবং ৩৫ রানের মাথায় ডিপ পয়েন্টে আভিষ খানের ক্যাচ ফেলে দেয়ায় নাটকীয় সমাপ্তি হয়নি ম্যাচটি। লো স্কোরিং ম্যাচে ৬ষ্ঠ জুটির সময়োচিত ব্যাটিংয়ে ১১৭ বলে ৬৯ রানেই ক্যারিবিয় যুব রূপকথা রচিত হয়েছে। যে রূপকথার শেষ অংক লিখেছেন কেচি কার্টি (৫২ নট আউট) ও কেমো পল (৪০ নট আউট)। ২০০৪ সালে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে শিরোপার কাছে এসে ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হারের কষ্টটা এতোদিন পুষে রেখেছিলেন রামদিন, লেন্ডন সিমন্স, রামপালরাÑ একযুগ পর তাদের সে কষ্ট লাঘব করেছে শিমরন হেটমেয়াররা। ফাইনালে একবারই মাত্র হারের অতীত ছিল তিনবারের যুব চ্যাম্পিয়ন ভারতের। সেটা ২০০৬ সালে, এবারের ফাইনালটিও দুঃখগাঁথা হয়ে থাকলো রাহুল দ্রাবিড় শিষ্যদের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
ফাহিম ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১১:০৪ এএম says : 0
আগামীতে আমরাও.......................
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন