প্রশ্ন : আমার বউ আমার অনুপস্থিতিতে প্রায়ই কারো সাথে মোবাইলে কথা বলে বা ফেসবুকে চ্যাটিং করে, আমার এ বিষয়ে ব্যাপক সন্দেহ হচ্ছে, কিন্তু সংসার রক্ষার স্বার্থে কিছু বলতে পারছি না। দয়া করে সমাধান দেবেন কি?
নিলয় রহমান দুর্জয়, বরিশাল।
উত্তর : কোনো বিষয়ে পূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে মনে সন্দেহ পোষণ করা ঠিক নয়। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, অনেক সন্দেহ গুনাহ’র কারণ হয়ে থাকে। হাদিস শরিফেও নবী করিম (সা.) বলেছেন, ঈমানদার নারী-পুরুষ সম্পর্কে তোমরা সুধারণা পোষণ করো। এর আলোকে আপনার স্ত্রীকে সন্দেহ না করে প্রয়োজন মনে করলে বিষয়টি সুন্দরভাবে সরাসরি জিজ্ঞাসা করুন। যদি এটা ভালো মনে না হয়, তা হলে এমন কাউকে দিয়ে জানার চেষ্টা করুন, যাতে আপনার স্ত্রীর মানহানি না হয়। তার মনে ব্যথা না লাগে। এরপর যদি নেগেটিভ রেজাল্ট আসে, তা হলে শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরবতার সাথে সংশোধনের চেষ্টা করুন। সুন্দর আচরণ, বোঝানো ইত্যাদি পন্থায় মানুষকে পরিবর্তন করা যায়। তবে, সব সময় সংসার রক্ষা ও শান্তির পথে সমাধানের আশায় কাজ করবেন। এসব ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যকার ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করা জরুরি। বাড়তি ঝামেলাগুলো তৈরি না হওয়ার জন্য শরিয়ত যেসব বিধি-নিষেধ দিয়েছে, শুরু থেকেই সেসব পালন করা জরুরি। তবে বড় কোনো সমস্যা তৈরি হয়ে গেলে খুব প্রজ্ঞাবান কোনো মুরব্বি, উভয়ের শুভাকাক্সক্ষী আত্মীয় বা বড় আলেম সাহেবের সাথে পরামর্শ করে উত্তম সমাধানের পথ তালাশ করবেন।
প্রশ্ন : ভিডিও চ্যাটিং বা স্কাইপ দিয়ে কোন মেয়ের সাথে ভার্চুয়াল সেক্স করলে তা জিনা হিসেবে ধরা হবে কিনা? এর গুনাহ কি জিনার সমান, কাছাকাছি না কম?
উত্তর : শুধু কল্পনা করে কোনো যৌন আচরণ করলেও গুনাহ হয়। বেগানা নারী ইচ্ছাকৃতভাবে দেখলে চোখের জিনা হয়। স্পর্শ করলে হাতের জিনা হয়। ভাবলে মনের জিনা হয়। সে দিকে অগ্রসর হলে পায়ের জিনা হয়। এসব কথা বললে বা শুনলে মুখ ও কানের জিনা হয়। জিনা মানে জিনার মত গুনাহ হয়। তাহলে আপনার প্রশ্নের জবাব এ নীতিমালা থেকেই নিয়ে নিন। ঠিক জিনার সমান শাস্তি না হলেও গুনাহ সমান হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘লা তাকরাবুজ জিনা, ইন্নাহু কানা ফাহিশাতাও ওয়া ছাআ ছাবিলা’। অর্থাৎ তোমরা জিনার ধারে কাছেও যেও না। নিঃসন্দেহে ইহা অশ্লিলতা ও খুবই মন্দ পথ। (আল কোরআন)। এখানে ধারে কাছেও যেও না থেকে কী বোঝা যায়? যেসব কাজ বা আচরণ জিনার কাছাকাছি, প্রেরণাদাতা বা পরিণামে জিনার দিকে নিয়ে যায়, সবই হারাম বা জিনার অনুসঙ্গ। অতএব, মৃত্যু থেকে বাঁচার জন্য যেমন মৃত্যুর কারণগুলো থেকে বাঁচতে হয়, তেমনই জিনা থেকে বাঁচতে হলে জিনার কারণ সমূহ থেকে বাঁচতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন