দীর্ঘদিন করোনার প্রকোপ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কঠোর বিধিনিষেধ থাকায় দেশেই ঈদ করেছেন বাংলাদেশিরা। তবে করোনার বিধিনিষেধ ও তেমন নির্দেশনা না থাকায় এবার বিদেশে ঈদ করেছেন অনেকে। কেউ কেউ ঈদের আগের দিন, কেউ আবার ঈদের দিন দেশ ছেড়েছেন।
বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটররা বলছে, এবার ঈদে দেশের বাইরে ঈদ করা ব্যক্তিদের মধ্যে আকাশপথে সবচেয়ে বেশি গিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহর ও মালদ্বীপে। এই দুই দেশ ছাড়াও ঈদ উদযাপনে এবার অন্যতম জনপ্রিয় ছিল তুরস্কের ইস্তাম্বুল রুট।
তারা বলছেন, সড়কপথে জনপ্রিয় রুট হিসেবে ছিল ভারতের কলকাতা এবং শিলং-চেরাপুঞ্জি। এছাড়াও অনেকে ভারতে ট্রানজিট নিয়ে সড়কপথে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে যাচ্ছেন। আগে ঈদ উদযাপন ও ঈদের পরে ভ্রমণের জন্য নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর জনপ্রিয় রুট ছিল। তবে এবার দুবাই, মালদ্বীপ ও তুরস্কে যাতায়াত ছিল উল্লেখযোগ্য।
ঈদের আগে ও পরে (৫ মে পর্যন্ত) কমবেশি ৩ লাখ লোক ভারতে গিয়েছে। তাদের মধ্যে ৮০-৮৫ ভাগই 'ভ্রমণ ভিসায়' গিয়েছে। বাকিরা গেছে চিকিৎসা ও রোগীর স্বজনের ভিসায়। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি লোক মালদ্বীপ গিয়েছে।
ঈদকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ থেকে কতজন লোক এ পর্যন্ত বিদেশে ভ্রমণে গেছেন এ বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো সংস্থার কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে দেশ ছাড়ার আগে ভ্রমণের উদ্দেশ্য উল্লেখ করতে হয় ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে রাজি হয়নি ইমিগ্রেশন পুলিশ। তবে ওই বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঈদের আগে ও পরে (৫ মে পর্যন্ত) কমবেশি ৩ লাখ লোক ভারতে গিয়েছে। তাদের মধ্যে ৮০-৮৫ ভাগই 'ভ্রমণ ভিসায়' গিয়েছে। বাকিরা গেছে চিকিৎসা ও রোগীর স্বজনের ভিসায়। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি লোক মালদ্বীপ গিয়েছে। তবে এটাও ঠিক মালদ্বীপে অনেকে ভ্রমণের কথা বলে কাজ করতে যায়। সেক্ষেত্রে আসলেই কতজন প্রকৃত ভ্রমণের জন্য গেছে তা বলা কঠিন।
করোনার জন্য কঠিন ভ্রমণ বিধিনিষেধ থাকায় গত কয়েক বছর পর্যটকরা বিদেশ যাওয়া কমিয়েছিলেন। তবে এবার ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটি এবং বিধিনিষেধ না থাকার কারণে অনেকে বিদেশে বেড়াতে গিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি পর্যটক স্থলপথে গিয়েছেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত বাংলাদেশিরা ভ্রমণ ইউরোপ-আমেরিকায় ট্রানজিট নেওয়ার জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুল রুটকে ব্যবহার করে। তবে এবার অনেকেই ভ্রমণ ভিসা নিয়ে দেশটিতে ঘুরতে গিয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে সংখ্যা না বলা গেলেও ৩০ হাজারের কম হবে না।
বাংলাদেশ থেকে কী পরিমাণ যাত্রী বিদেশ ভ্রমণে গেছে এ বিষয়ে বাংলাদেশ আউটবাউন্ড ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি। তবে তারা বলছে, তাদের হাতে থাকা কাগজপত্র, টিকিট ও প্যাকেজ বিক্রির দিক দিয়ে এই সংখ্যা ৯ থেকে ১০ লাখ।
অ্যামেজিং ট্যুরস বিডির ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনার জন্য কঠিন ভ্রমণ বিধিনিষেধ থাকায় গত কয়েক বছর পর্যটকরা বিদেশ যাওয়া কমিয়েছিলেন। তবে এবার ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটি এবং বিধিনিষেধ না থাকার কারণে অনেকে বিদেশে বেড়াতে গিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি পর্যটক স্থলপথে গিয়েছেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে। পর্যটকদের ফ্লো এভাবে থাকলে শিগগিরই আমরা এ খাত থেকে আলোর মুখ দেখব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন