ইলিশের রাজধানী চাঁদপুরে আড়ৎগুলো এখন ফাঁকা। ইলিশসহ অন্যান্য মাছের আমদানি কম থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছে শত-শত মৎস্য ব্যবসায়ী। স্বল্প সংখ্যক ইলিশ আমদানি হলেও দাম অনেক চড়া। যা’ সাধারন ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা সংরক্ষণ অভিযানের পর ইলিশ ধরা পড়লেও এ বছর নদী থেকে জেলেরা ফিরছেন খালি হাতে। যে কারণে সরগরম থাকা ইলিশের আড়ৎগুলোতে এখন সুনসান নিরবতা।
শুক্রবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে মাছঘাটে দেখা গেছে ঘাটে মাছের ট্রলার নেই। শ্রমিকদের সংখ্যাও খুব কম। মাত্র কয়েকটি আড়তে বসে আছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী ও কর্মচারী। সামনে সামান্য সংখ্যক ইলিশ বরফ দিয়ে বিক্রির জন্য বসে আছেন তারা। অন্যান্য প্রজাতির মাছের আমাদানি না থাকায় কোন খুচরা ব্যবসায়ীর দেখা মিলেনি।
ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা সোলাইমান বলেন, অধিকাংশ আড়ৎ বন্ধ। কয়েকটিতে স্বল্প সংখ্যক ইলিশ আছে, দাম খুব বেশী। যে কারণে ইলিশ কিনতে পারেনি।
মেসার্স তাজুল ইসলাম ভুঁইয়া আড়তের ব্যবসায়ী দিদার হোসাইন বলেন, ইলিশের আমদানি কম থাকায় ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলা থেকে আমদানী করা বড় সাইজের কয়েকটি ইলিশ বিক্রির জন্য বসে আছেন। প্রতিটি ইলিশ ওজনে দুই থেকে আড়াই কেজি। প্রতি কেজির মূল্য ২৫০০ টাকা।
মেসার্স মিজানুর রহমান কালু ভুঁইয়া মৎস্য আড়তের ম্যানেজার ওমর ফারুক বলেন, ইলিশের আমদানি খুবই কম। আজকে নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুর থেকে ট্রাকে করে এবং চাঁদপুরের লোকালসহ সবগুলো আড়ৎ মিলিয়ে ১৫-২০ মণ ইলিশ আমদানী ও বিক্রি হয়েছে। দাম অনেক বেশী। ১ কেজি ২শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৯০ হাজার টাকা মণ। ৮শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ মণ ৭০ হাজার টাকা, ৫শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৪০ হাজার টাকা এবং আড়াইশ থেকে ৪শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ২৪ হাজার টাকা।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমেটড এর সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. শবে বরাত বলেন, আমাদের লোকাল পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ নাই বললেই চলে। স্থানীয় ইলিশ খুব কম সংখ্যক আমদানি হচ্ছে। প্রতিদিন ১০-২০ কেজি ইলিশ বিক্রির জন্য আসে। ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ২ হাজার টাকা। ৭শ’ থেকে ৮শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকা, ৬শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৮শ’ টাকা।
তিনি আরো বলেন, আমাদের আড়ৎগুলোতে মাঝে মাঝে চট্টগ্রাম ও হাতিয়া থেকে কিছু ইলিশ আমদানি হয়। এখন ইলিশের মৌসুম পুরোপুরি না। যার কারণে ইলিশ নেই। সামনে ভরা মৌসুমে আশা করছি জেলেরা ইলিশ পাবে, তখন আমদানিও বাড়বে। শতাধিক আড়ৎ জমজমাট হয়ে উঠবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তখন ক্রেতারা কমদামে ইলিশ ক্রয় করতে পারবে।
গেল মার্চ-এপ্রিল ২ মাস ছিল পদ্মা-মেঘনায় অভয়াশ্রম। এ সময়টিতে জাটকা রক্ষায় নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরা ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন নিষিদ্ধ ছিল। ঐ সময় অনেক জেলে আইন অমান্য করায় জেল জরিমানা করা হয়। তাদের ব্যবহৃত নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধংস করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন