শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ট্রাম্প-পুতিন বন্ধুত্বে ব্রিটিশ-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন

প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বে ব্রিটিশ-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেক্টোরাল ভোটে অনানুষ্ঠানিকভাবে বিজয় লাভের পর সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, দায়িত্ব পেলে সিরিয়ায় বিদ্রোহীদেরকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করে দেবেন। অপরদিকে, সুন্দর চিঠি পাঠানোর জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে ধন্যবাদ জানাতেও দেখা গেছে। আর তা যুক্তরাজ্যের ভাবনার কারণ হয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো করার ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য কূটনৈতিক সম্পর্ক টানাপোড়েনের মুখে পড়েছে। এদিকে ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যকার এক ফোনালাপে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সমন্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহণে ঐকমত্য হয়। এতে ব্রিটিশ-মার্কিন সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জয়লাভের পর ট্রাম্প যে দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছেন, তা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে-এর দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীত। কেননা, ব্রিটিশ সরকার সিরিয়া সরকারকে সমর্থন করে না। তেরেসা মে-এর অভিযোগ, সিরিয়ার সরকার নৃশংস সহিংসতা চলাচ্ছে এবং আসাদকে ছাড়াই সিরিয়ার দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হতে পারে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনও অভিযোগ করে আসছেন যে শত শত বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর জন্য রুশ সরকার দায়ী। এর মধ্য দিয়ে রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করছে বলেও অভিযোগ করে আসছেন তিনি। এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালায় নাটকীয় পরিবর্তনের আভাসে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে প্রবেশের আগে আগে কিভাবে তাকে মানানো যায় তা নিয়ে তৎপরতা শুরু করেছে যুক্তরাজ্য। পরবর্তী দুই মাস ব্রিটিশ সরকার ট্রাম্পকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদকে উৎখাত করার প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর চেষ্টা করবে। এ ইস্যুটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে ব্রিটেন।
অপর এক খবরে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ট্রাম্পের প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে বরিস জনসন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন। জনসন তাদের বোঝানোর চেষ্টা করবেন, যুক্তরাজ্য বিশ্বাস করে আসাদকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। ব্রাসেলসে ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যকার একটি জরুরি বৈঠক বর্জন করেছেন জনসন। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের পরবর্তী অবস্থাকে ইউরোপ কিভাবে মোকাবেলা করবে তা নিয়ে বৈঠকটি নির্ধারণ করা হয়েছিল। ওয়াল স্ট্রিটকে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আসাদকে উৎখাত করার চেয়ে সিরিয়ায় আইএসকে পরাজিত করার ওপর বেশি গুরুত্ব দেবে তার প্রশাসন। ওয়াল স্ট্রিটকে ট্রাম্প বলেছিলেন, সিরিয়া ইস্যুতে অনেক মানুষের চেয়ে আমার ভিন্ন মত রয়েছে। আমার দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, আপনারা সিরিয়ার সঙ্গে লড়াই করছেন, সিরিয়া আইএস-এর সঙ্গে লড়াই করছে, আপনাদেরকে আইএস থেকে মুক্তি পেতে হবে। রাশিয়া সিরিয়ার সঙ্গে পুরোপুরি যুক্ত হয়ে গেছে। এখন ইরান ক্ষমতাশালী হচ্ছে। এ দেশটিও সিরিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়েছে। এখন আমরা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছি এবং আমাদের কোনও ধারণা নেই যে এ লোকগুলো কারা। তিনি আশঙ্কা জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আসাদ সরকারের ওপর আক্রমণ করে তবে যুক্তরাষ্ট্রকে শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে হবে। খবরে আরো বলা হয়, ব্রিটিশ সরকার আশা করেছিল নির্বাচনে জয়ের পর ট্রাম্প এ ইস্যুতে তার সুর নরম করবেন। টেলিগ্রাফ, এপি, রয়টার্স, বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন