বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

উন্নয়ন সক্ষমতা বাড়ছে

প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪২ পিএম, ১৬ নভেম্বর, ২০১৬

তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের : সরকারের উন্নয়ন সক্ষমতা দিন দিন বাড়ছে। মাত্র সাত বছরের ব্যবধানে দেশে উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনা করার ক্ষমতা বেড়েছে প্রায় সাড়ে তিন গুণ। এই সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে, এমন মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও দুই বছরের কম সময়ে পদ্মা সেতুর কাজ অর্ধেক শেষ হয়েছে, যা প্রমাণ করেছে সক্ষমতার।
তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১০ সাল থেকেই দেশের উন্নয়ন কর্মকা-ে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদের প্রথম অর্থবছরের তুলনায় দ্বিতীয় অর্থবছরে উন্নয়ন বেশি হয়েছে প্রায় ২৭ ভাগ। এর পরের বছরে উন্নয়ন বেড়েছে ১৬ ভাগ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে উন্নয়নে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ ভাগ। এর পরের বছরে ১৯ ভাগ বেড়েছে উন্নয়ন। সর্বশেষ দুই অর্থবছরে উন্নয়ন বেড়েছে যথাক্রমে ২৫ ভাগ ও ২২ ভাগ। দেশের উন্নয়নে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হয়েছে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর)। এই সময়ে গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় উন্নয়ন বেশি হয়েছে ৪৫ ভাগ। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে উন্নয়ন ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা। গতবছর এই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ১১ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের সরকার। উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েই আমরা ক্ষমতায় এসেছি। দেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে না নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন কাজ অবিরাম চলবে। আমি আশা করি, দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে যে হারে উন্নয়ন কর্মকা- চলছে, তাতে আগামী ২০ বছরের মধ্যেই এ দেশের মানুষ উন্নত বিশ্বের সদস্য হিসেবে গর্ব করতে পারবে।
বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই উন্নয়নের মহা পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর মধ্যে রয়েছে দশটি মেগা প্রকল্প যা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ফাস্টট্রাক প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত। এই প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজে তদারকি করছেন। চলমান দশটি মেগা প্রকল্প হলো, পদ্মা বহুমুখী সেতু, মেট্রোরেল, পায়রা সমুদ্রবন্দর, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনাল, পদ্মা রেলসেতু সংযোগ এবং কক্সবাজার-দোহাজারী-ঘুনদুম রেলপথ। নতুন করে ফাস্টট্রাক প্রকল্পে যুক্ত হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।
সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ৩ বিলিয়ন ডলারের পদ্মা বহুমুখী সেতু বাস্তবায়ন করছে সরকার। সোমবার পর্যন্ত এই সেতুর কাজ ৪৯ ভাগ শেষ হয়েছে। ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর সেতুটির কাজ শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুটির কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। কোন দাতাগোষ্ঠীর ঋণ সহায়তা ছাড়াই নিজস্ব সংস্থানে এত বড় প্রকল্পের কাজ দুই বছরেরও কম সময়ে অর্ধেক বাস্তবায়ন করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। সম্প্রতি ঢাকা সফরে এসে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন সক্ষমতার বিষয়টি স্বীকার করে নিতে হয়েছে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টকে।
এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের লিড ইকনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এটা স্বীকার করে নিতেই হবে উন্নয়ন কর্মকা-ে বর্তমান সরকার পূর্বের যে কোন সরকারের তুলনায় অনেক বেশি সক্ষম। সরকারের উন্নয়ন সক্ষমতা দিন দিন বাড়ছে, এটাও ঠিক।
মেট্রোরেলের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ চলছে পুরোদমে। ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ হবে গাজীপুর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ। পায়রা সমুদ্রবন্দর ইতোমধ্যে উদ্বোধন হয়েছে। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২১ সাল নাগাদ। অন্য প্রকল্পগুলোর কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের পর আংশিক উদ্বোধন হয়েছে মগবাজার ফ্লাইওভারেরও।
সরকারের উন্নয়ন সক্ষমতা বাড়ায় আস্থা বেড়েছে বিনিয়োগকারী দেশগুলোরও। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে দেশের অবকাঠামো খাতে ২৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে গেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট। এর আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রীও ৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে গেছেন। ভারতের ঘোষণা রয়েছে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের।
সরকারের উন্নয়ন সক্ষমতা বাড়ায় বিভিন্ন দেশ বিপুল অর্থ বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ড. জায়েদ বখত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন