শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

অভিনব কায়দায় অর্ধ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ, শিক্ষা ভবনে দুদকের অভিযান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২২, ১০:২৩ পিএম

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) এক শিক্ষা পরিদর্শকের বিরুদ্ধে মিনিস্ট্রি অডিটের নামে ২০০ শিক্ষক-কর্মচারীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, পুরো একমাসের বেতনের অর্ধ কোটি টাকা ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন শিক্ষা পরিদর্শক ড. এনামুল হকসহ সংশ্লিষ্টরা।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুদকের সহকারী পরিচালক সিলভিয়া ফেরদৌস (দলনেতা) ও মো. আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একটি টিম শিক্ষা ভবন পরিদর্শন করেন। অভিযানকালে ঘুষ লেনদেনের সরাসরি তথ্য না পাওয়া গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সন্দেহজনক আচরণ এবং বেশ কিছু অসামঞ্জস্য তথ্য পেয়েছে দুদক টিম। দুদকের সহকারী পরিচালক ( জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদক জানায়, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে (ডিআইএ) মিনিস্ট্রি অডিটের নামে ২০০ জন শিক্ষক-কর্মচারীর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করেছে। এনফোর্সমেন্ট টিম সরেজমিনে শিক্ষা ভবন পরিদর্শন করে। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালকের অনুপস্থিতে যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকারের সাথে অভিযোগের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ প্রক্রিয়া চলমান আছে।

কোন প্রকার ঘুষ প্রদান করা হয়েছে কি না তা যাচাই-বাছাই করে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে দুদক টিম দাখিল করবে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোরের মণিরামপুর পৌর শহরের মণিরামপুর মহিলা আলিম মাদ্রাসা, হাজরাকাঠি মহিলা আলিম মাদ্রাসা, ডুমুরখালি দাখিল মাদ্রাসা, মনোহরপুর দাখিল মাদ্রাসা, বালিধা-পাঁচাকড়ি দাখিল মাদ্রাসা, রোহিতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাজীআলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দেলুয়াবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে অডিট করবে জানিয়ে মার্চ মাসের শুরুতে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর। যশোর জেলা ও মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে পাঠানো চিঠিতে, অডিটে নিযুক্ত কর্মকর্তাকে সহযোগিতার অনুরোধ জানানো হয়।

পরে অধিদপ্তরের পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তা ড. এনামুল হক যশোরে এসে একটি রেস্ট হাউজে ওঠেন এবং শিক্ষা অফিসের কর্মচারীদের মাধ্যমে ওই ১০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানকে রেস্ট হাউজে দেখা করতে বলেন। এরপর কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ড. এনামুল হকের সঙ্গে দেখা করে অডিটের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করেন। অডিটে তার দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ২০০ শিক্ষক-কর্মচারীর মূল বেতন স্কেলের পুরো টাকা ঘুষ হিসেবে নেন ওই কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, বিষয়টি নিয়ে কঠোর গোপনীয়তার নির্দেশ থাকলেও কষ্টার্জিত বেতনের পুরো টাকা ঘুষ দিয়ে মনকষ্টে শিক্ষকরা বিষয়টি নিজেদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু করেন, যা আস্তে-আস্তে আশপাশের শিক্ষকদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর প্রতিষ্ঠান-প্রধানের কথায় ইচ্ছা না থাকলেও ঝামেলার ভয়ে বেতনের টাকা ঘুষ হিসেবে দিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব মেনে নেন সবাই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন