শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

সম্প্রতি এক কোটির বেশি মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেন যার হাতে-১

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০২২, ১২:০০ এএম

কুয়েতে জন্মগ্রহণ করা ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইত বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিসিন ও সার্জারিতে বি.এস করেন। অতঃপর উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে যান। ১৯৭৪ সালে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্রপিকাল ডিজিজের ওপর ডিপ্লোমা করেন। কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্টগ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করেন। মাসে লক্ষাধিক টাকার বেতনে চাকরি করার সুযোগ ছিলো তাঁর সামনে। সুযোগ ছিলো ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডের নাগরিক হবার, মানুষের স্বপ্নের দেশগুলোর যেকোনো একটিতে সম্মানজনক ডাক্তার হিসেবে বসবাস করার। মানুষ বর্তমানে কত চেষ্টা করে বিদেশে উন্নত দেশগুলোতে যেতে চায়। আব্দুর রহমান আস-সুমাইত সেসব দেশে গিয়ে পড়াশোনা করেন।

১৯৭২ সালে তিনি ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করছেন। তখন শুনতে পেলেন তাঁর এক বন্ধু একটি কনফারেন্সে গেল। সেই কনফারেন্সে ইউরোপের খ্রিস্টান নেতৃবৃন্দ একত্রিত হয়েছে ‘আফ্রিকা মিশন’ নামে। তারা পরিকল্পনা করল, আগামী ১৮ বছর তারা আফ্রিকায় মিশনারীর কাজ করবে, পুরো আফ্রিকাকে প্রায় শতভাগ খ্রিস্টান জনসংখ্যায় পরিণত করবে।

আফ্রিকা বর্তমানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম। আফ্রিকা একসময় ছিল খনিজ সম্পদে ভরপুর। সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর অন্যতম আকর্ষণ ছিল এই আফ্রিকা। আফ্রিকায় নিজেদের কলোনি স্থাপন করে তারা সেখানকার সম্পদ ও রক্ত শুষে খেয়েছে, মানুষকে বানিয়েছে দাস। টান্স-আটলান্টিক দাসপ্রথা যার অন্যতম উদাহরণ। সেই আফ্রিকার অবস্থা জরাজীর্ণ। সেখানকার মানুষ খাদ্যাভাবে, চিকিৎসাভাবে মারা যাচ্ছে। পরিবারগুলো ছেলেমেয়েদেরকে পড়ালেখা করাতে পারছে না।

আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির শিকার হয়ে কিভাবে মানুষ তার ধর্মত্যাগ করে, আফ্রিকার মানুষের অবস্থা তেমন। মিশনারীগুলো সেখানকার মানুষদের খাদ্যাভাব দূর করে, বিনিময়ে তাদেরকে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। গিভ অ্যান্ড টেক নীতি।

ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইত ইংল্যান্ডে পড়াশোনাকালীন সময়ে মিশনারীদের পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। পড়াশোনা শেষে তিনি তাঁর স্ত্রীকে বললেন যে, তিনি চান তাঁর ক্যারিয়ার পূর্ব-এশিয়ায় শুরু করতে। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো হলো- চীন, হংকং, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া। এসব দেশে ইসলামের প্রচার-প্রসার তেমন নেই। আব্দুর রহমান আস-সুমাইতের ইচ্ছে ছিল সেসব দেশে ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি দীনি দাওয়াতের কাজ করবেন।

তিনি তাঁর নিজ দেশ কুয়েতে ফিরেন। ঘটনাক্রমে কুয়েতের আমিরের স্ত্রীর সাথে তাঁর দেখা হয়। তিনি চান, আফ্রিকায় তাঁর নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করতে; এক্ষেত্রে ডাক্তারের সরাসরি তত্ত্বাবধান কামনা করছেন। ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইত প্রস্তাবে রাজী হন। কুয়েতের আমিরের স্ত্রীর অর্থায়নে একটি মসজিদ নির্মাণে পাড়ি জমান আফ্রিকায়।

মসজিদ নির্মাণ করতে গিয়ে তিনি আফ্রিকার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। আফ্রিকার মুসলিমদের অবস্থা দেখে তিনি যেন নিজের দু’চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। তিনি দেখতে পান, অনেক মুসলিম কিভাবে নামাজ পড়তে হয়, কিভাবে ওজু করতে হয় জানে না। তারা নামে মুসলিম, কিন্তু তারা সূর্য, তারকার উপাসনা করে। মসজিদের ইমাম নামধারী ব্যক্তি মসজিদের মধ্যে পাপাচারে লিপ্ত। চারিদিকে শিরক-বিদআতের ছড়াছড়ি। আফ্রিকার মুসলিমরা অর্থাভাবে আছে। সেই দুর্বলতায় খ্রিস্টান মিশনারী আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে তাদেরকে খ্রিস্টান বানাচ্ছে।

আফ্রিকার মুসলিমরা পড়ালেখায় অনেক পিছিয়ে। ফলে, আফ্রিকার নীতিনির্ধারক যারা হচ্ছে, যারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, এমপি-মন্ত্রী হচ্ছে, তাদের বেশিরভাগই খ্রিস্টান। মুসলিমরা আর্থিকভাবে যেমন পিছিয়ে পড়ছে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবেও তেমন পিছিয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে আফ্রিকার মুসলিমদের অবস্থা চরম শোচনীয়। আফ্রিকার মুসলিমরা ইসলাম ত্যাগের দ্বারপ্রান্তে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Sadia Afrin Pro Va ১৫ মে, ২০২২, ১২:৩২ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)
Imran Ahmed Sajib ১৫ মে, ২০২২, ১২:৩২ এএম says : 0
আল্লাহু আকবার
Total Reply(0)
Mahamudul Hasan ১৫ মে, ২০২২, ১২:৩৪ এএম says : 0
mashaAllah, these people dedicated their lives for the well being of the muslims. May Allah reward him with Jannah, he could have spent his life in luxury instead of walking on the jungle, or desert, but he chose the hereafter.
Total Reply(1)
Munir Ahmed Kotwal ১৫ মে, ২০২২, ৫:২৯ পিএম says : 0
Jazak'Allah
Ameen Omar - ১৫ মে, ২০২২, ১২:৩৪ এএম says : 0
True inspiration! May Allah have mercy on him and make his grave wide. Something tangible to aim for
Total Reply(0)
Md Shidikur Rahoman ১৫ মে, ২০২২, ১২:৩৫ এএম says : 0
ধন্যবাদ, অামি একজনও মুসলমান তৈরি করিনি। তিনি এক কোটি মুসলমান বানিয়েছেন। কথা সেটা ও নয়, কারন মুসলমানের দৌড় সারা পৃথিবীর। প্রকৃত পক্ষে প্রতিটা মানুষ মুসলমান। কিন্তু অাওোগত পৃথিবীর দিকে সে তা নয়। কারন, পারিবারিক, সামাজিকতার যে দিক তা বিধর্মী সমতুল। মুসলমানের পারিবারিক, সামাজিকতা প্রখরতা গ্রহন করবে। যা অন্য ধর্মে নেই। অার সে সহজ শুদ্ধিকরন পদ্ধতি। তা যে মুসলমানে নেই। অামিন।
Total Reply(0)
Kazi Mohammad Uzzal ১৫ মে, ২০২২, ৪:২৫ এএম says : 0
May Allah grant him for the development of Islam.
Total Reply(0)
সেলিম চৌধুরী ১৫ মে, ২০২২, ৩:০৬ পিএম says : 0
বিস্তারিতভাবে ঘটনাটাতো শেষ করা হলো না। কিভাবে এক কোটি লোককে মুসলমান বানালেন, দাওয়াতের পদ্ধতিটা জানালে আমাদের জন্য শিক্ষনীয় হোত। আমরাও দাওয়াতের পদ্ধতিতে দাওয়াত দিতে পারতাম।
Total Reply(0)
Walid Hossain ১৫ মে, ২০২২, ৯:০৬ এএম says : 0
আল্লাহু আকবার ,আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন