মা মাছের মেটারনিটি ক্লিনিক হিসেবে খ্যাত দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হ্যারিটেজ চট্টগ্রামের জোয়ার-ভাটার হালদা নদীতে আবারো তৃতীয় দফায় নমুনা ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ। গত সোমবার ভোর ৫টা থেকে হালদা নদীর ভাটার শেষ ও জোয়ারের শুরু থেকে দুপুর পর্যন্ত নদীর নয়াহাট, মাছুয়াঘোনাবাঁক, নাপিতের ঘাটা, আমতুয়া, রামদাশহাট অংশে নমুনা ডিম পাওয়া গেছে ডিম সংগ্রহকারীদের জালে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হালদা নদী জুড়ে শত শত ডিমসংগ্রহকারী ডিম ধরার নৌকা, বাঁশের ভোরকা, বালতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে ডিম সংগ্রহে ব্যস্ত। সংগ্রহকারীরা বালতি, বাঁশের ছাঙ্কসহ সুবিধামত পাত্রে ডিম সংরক্ষণ করছেন। নৌকা প্রতি গড়ে আধাকেজি করে ডিম সংগ্রহ হচ্ছে।
তবে এবারো আশানুরুপ ডিম না পাওয়ায় ডিম সংগ্রহকারীরা হতাশ। পুরো দমে ডিম না ছেড়ে এভাবে দফায় দফায় ছাড়লে ডিম সংগ্রহকারীরা লোকসানের শিকার হন। নৌকাসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের ভাড়া দ্বিগুন হয়। পর্যাপ্ত বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল না আসায় মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়ছেন না। তবে তৃতীয় দফায় সংগৃহীত ডিম হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করার আশাব্যক্ত করেন অধিকাংশ ডিম সংগ্রহকারী। এটাকেও নমুনা ডিম উল্লেখ করে বজ্রসহ বৃষ্টি কিংবা পানির ঢল ছাড়া পুরোদমে ডিম ছাড়বে না জানিয়ে ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর, তৈয়্যব, নুরুল আলম বলেন, আশানুরুপ ডিম পাওয়া যায়নি। মা মাছ পরিবেশ অনুকূলে পেলেই পুরোদমে ডিম ছাড়বে। মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মেহেরুন্নেছা জানান, সরকারি হ্যাচারির কুয়ায় অনেকে ডিম সংরক্ষণ করছেন, তবে পরিমাণে অনেক কম। সরকারি হ্যাচারি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহিদুল আলম বলেন- ভোর থেকেই নদীতে অবস্থান করছি। ডিম সংগ্রহকারীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এখনো পূর্ণাঙ্গ ডিম ছাড়েনি মা মাছ। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেই পূর্ণাঙ্গ ডিম ছাড়বে বলে আশা করছি। এদিকে প্রতিদিনের মত দিনরাত হালদা পাড়ে কয়েকশত ডিম সংগ্রহকারী শত শত নৌকা, বাঁশের ভোরকাসহ ডিম সংগ্রহের সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে অবস্থান করছেন বলে জানান তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন