বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

কথিত গণকমিশনের শ্বেতপত্র সংবিধানবিরোধী

বিবৃতিতে তরুণ আলেমগণ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২২, ৮:৫৬ পিএম

মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে কথিত গণকমিশনের শ্বেতপত্রটিকে বর্তমান স্থিতিশীল পরিবেশকে বিনষ্ট করে আলেম উলামা ও সরকারকে মুখোমুখি করার একটি হীন অপপ্রয়াস বলে মনে করেন দেশের তরুণ আলেমরা। তারা বলছেন, কথিত গণকমিশনের এই শ্বেতপত্র প্রকাশ সংবিধানবিরোধী। নাগরিকের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত মানবিক মর্যাদা নীতির প্রতি অশ্রদ্ধা। এই কথিত কমিশনের তদন্ত ও শ্বেতপত্রের নৈতিক ও আইনত কোন ভিত্তি নাই। বরং এটি সংবিধান, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তথা মানবিক মর্যাদার বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত অপরাধ।
আজ শুক্রবার দেশের তরুণ চিন্তক ও গবেষক আলেমদের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। বিবৃতিদাতা আলেমরা হলেন, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সহ সভাপতি মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন গহরপুরী, ইকরা বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন, সউদী সফররত জাতীয় ইমাম সমাজের মহাসচিব ও চকবাজার শাহী মসজিদের খতিব মুফতি মিনহাজ উদ্দিন, জামিয়া সাঈদিয়া কারীমিয়া ঢাকার প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, আঞ্জুমানে দাওয়াতে ইসলাহ’র দায়িত্বশীল ড. মাওলানা কামরুল ইসলাম ভূইঁঞা, গুলিস্তান পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদের খতিব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী, গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি মাকসুদুল হক, জনপ্রিয় ইসলামি লেখক সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর, এহসান সিরাজ, চট্টগ্রাম দারুল মাআরিফের শিক্ষক মাওলানা মাহমুদ মুজিব, খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের দায়িত্বশীল মুফতি তাসনিম, বাংলাদেশ কওমি ছাত্র ফোরামের সদস্য সচিব মাওলানা জামিল সিদ্দীকি, মাসিক আল জামিআর নির্বাহি সম্পাদক মাওলানা আশরাফউল্লাহ, বাবুবাজার মসজিদের খতিব মাওলানা সালমান।
দায়িত্বশীল এসব আলেমরা বিবৃতিতে বলেন,কওমি মাদরাসা সরকারের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান এবং এর সঙ্গে বর্তমানে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক রয়েছে। কওমি মাদরাসার ওপর জঙ্গিবাদের অপবাদ দেয়া মানে সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা। কওমি মাদরাসা না কখনো জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত ছিল, না এখনও আছে। এই সংশ্লিষ্টতা কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। যদি তাদের কথামতো ধরে নেয়া হয় মাদরাসা থেকে সবচেয়ে বেশি সদস্য জঙ্গিবাদে রিক্রুট হয়, তাহলে সরকার কেন সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় না নিয়ে স্বীকৃত দিল। সরকার তো পর্যবেক্ষণ না করে স্বীকৃতি দিতে পারে না। কওমি মাদরাসার ওপর জঙ্গিবাদের অভিযোগ তুলে তারা মূলত সরকারকে ব্যর্থ বলার চেষ্টা করেছে। এর সঙ্গে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের সম্পর্ক থাকাও অস্বাভাবিক নয়।
তারা আরও বলেন, এই শ্বেতপত্রটি নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, গত ২ দশকের সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ বিরোধি বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমেই প্রায় ৯০% তথ্য এখানে সঙ্কলিত করা হয়েছে; এবং এক্ষেত্রে চূড়ান্ত অসততা ও স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়ে এসব পুরাতন তথ্য যাচাই, সম্পাদনা বা হালনাগাদও করা হয়নি। ফলে এই শ্বেতপত্রের পাতায় পাতায় অসংখ্য ভুল তথ্য ও নানা রকম অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়েছে। বর্তমান স্থিতিশীল পরিবেশে হঠাৎ এমন একটি অতি উৎসাহী তৎপরতাকে স্বাভাবিকভাবে দেখার সুযোগ নেই। এটি দেশের সম্প্রীতির পরিবেশ বিনষ্ট করে আলেমদের সরকারের মুখোমুখি করার অপচেষ্টা বলে আমরা মনে করি। তাই দেশের শান্তি শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় এ গণকমিশনের অতি উৎসাহী কাজের শেকড় অনুসন্ধান করা সরকারের দায়িত্ব। অবিলম্বে কথিত এই শ্বেতপত্র প্রত্যাহার করে ধৃষ্টতামূলক এ কাজের জন্য ‘মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গঠিত কথিত গণকমিশন’কে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তরুণ আলেমরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Dr. Mohammad Ziaul Hoque ২১ মে, ২০২২, ৫:৩৮ এএম says : 0
শয়তানি চেতনাধারীরা অবৈধ শ্বেতপত্র দিয়ে তাদের কৃষ্ণ চেহারা উম্মোচন করেছে। ইসলাম নির্মূলের চেষ্টা ৭ম শতাব্দী হতে আজ পর্যন্ত চলে আসছে। কেউ সফল হয় নি, হবেও না। কারণ ইসলাম আল্লাহর মনোনীত একমত ঐশী জীবন বিধান। জাহেলিয়া যুগের অনুসারী , অন্ধকার-বিলাসী, শয়তানি চেতনা ও চিন্তার ধারকদের জন্য শোক সংবাদ। আমেরিকার পিউ রিসার্চ কেন্দ্রের গবেষণা করে বলছে যে , আগামী ত্রিশ বছরের মধ্যে ইসলাম হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম এবং পঞ্চাশ বছরের মধ্যে ইসলাম হবে সারা পৃথিবীর প্রধানতম ধর্ম। ইনশাআল্লাহ, কোন শয়তানের কোন শ্বেতপত্র বা কৃষ্ণপত্র ইসলামের অগ্রযাত্রা থামাতে পারবে না।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন