যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলার ঘটনায় সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ৩০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা প্রকাশ করা হয়নি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশন নেতাদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটির সুষ্ঠু ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেশের সংবাদ মাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া নিহত মোহাম্মদ হাদিসুর রহমানের পরিবারকে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের ২৮ জন জীবিত নাবিকসহ নিহত হাদিসুর রহমানের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে বিএসসি কর্তৃক জাহাজ পরিচালনায় যে গাফিলতি হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ন্যূনতম দু’জন প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন, নিহত হাদিসুর রহমানের পরিবারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং জাহাজে কর্মরত সকল নাবিককে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও পুরস্কার প্রদান করার দাবি জানিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সেখানে অ্যাসোসিয়েশনের কোনো প্রতিনিধিকে রাখা হয়নি। ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা থাকলেও আমরা এখনও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন পাইনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নিহত হাদিসুর রহমানের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত তা দেওয়া হয়নি। এই বিষয়ে গত ১৫ মার্চ বিমানবন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন আমীর মো. আবু সুফিয়ান এক সপ্তাহের মধ্যে হাদিসুর রহমানের পরিবারকে বড় ধরনের ক্ষতিপূরণ প্রদানের কথা বললেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আমাদের জানা মতে, ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়াটি বিএসসির অধীনে চলমান আছে। কিন্তু এখনও বিএসসি ক্ষতিপূরণ প্রদানের কোনো সুনির্দিষ্ট দিন ঘোষণা করেনি। অথচ ক্ষতিপূরণ প্রদান প্রক্রিয়াটি অনেক আগেই সম্পন্ন করা যেত। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মো. আনাম চৌধুরী বলেন, আইটিএফ এবং বাংলাদেশি মেরিনদের পক্ষ থেকে হাদিসুরের পরিবারকে ১০ লাখ ১৯ হাজার ১৭৭ টাকা আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্সের হাতে সহায়তা তুলে দেওয়া হয়। গত ২ মার্চ বাংলার সমৃদ্ধিতে রকেট হামলায় নিহত হন জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান। এরপরই অলিভিয়া বন্দরের আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের সহায়তায় ৩ মার্চ জাহাজে থাকা ২৮ নাবিক ও ইঞ্জিনিয়ারকে উদ্ধার করে ইউক্রেনের বাঙ্কারে সরিয়ে নেওয়া হয়। এক সপ্তাহ পর বাংলার সমৃদ্ধির ২৮ জন নাবিককে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন