মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

নাকুগাঁও স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন বন্ধ বিপাকে ২ হাজার ব্যবসায়ী

ভারত ও ভুটানের সঙ্গে আমদানি-রফতানি সম্প্রসারণে দ্রুত ইমিগ্রেশন খুলে দেয়ার দাবি

এস. কে. সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০২২, ১২:০১ এএম

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থালবন্দরের ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় হাজারো ব্যবসায়ী পড়েছে বিপাকে। ফলে ব্যবসায়ীরা ভারতে যাতায়াত করতে না পারায় মালামালের গুণগত মান যাচাই করতে পারছেন না। ফলে প্রতিদিন শত শত টন পাথর ও কয়লা আমদানি করা হলেও তার বেশির ভাগই মানসম্পন্ন নয়। ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় তিনটি স্থালবন্দর ও একটি শুল্ক স্টেশনের প্রায় দুই হাজার আমদানি-রফতানিকারক ব্যবসায়ী পড়েছেন চরম বিপাকে। ব্যবসায়িক সুবিধার্থে এবং ভারত ও ভুটানের সঙ্গে আমদানি-রফতানি সম্প্রসারণের জন্য ব্যবসায়ীরা দ্রুত ইমিগ্রেশনটি খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। নাকুগাঁও ইমিগ্রেশন কার্যালয় ও স্থালবন্দর আমদানি-রফতানিকারক সমিতির একজন কমর্র্কতা জানান, নাকুগাঁও স্থালবন্দর ও নাকুগাঁও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট রয়েছে। কিন্ত ইমিগ্রেশন বন্ধ। ফলে অনেক সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে কড়ইতলী ও গোবরাকুড়ায়ও স্থালবন্দর রয়েছে। জামালপুরের বকশীগঞ্জের ধানুয়া-কামালপুর শুল্ক স্টেশন রয়েছে। এসব বন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটান থেকে প্রচুর পরিমাণে কয়লা ও পাথর আমদানি করা হয়। চারটি বন্দরে রয়েছে চারটি আমদানি-রফতানিকারক সমিতি। সমিতির প্রায় দুই হাজার আমদানি-রফতানিকারক ব্যবসায়ী রয়েছেন। চারটি বন্দরের ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন নাকুগাঁও ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশে যাতায়াত করতেন। ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে এলসি করেন। পণ্যের গুণগত মান যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ব্যবসায়ীরা মাল্টিফুল ভিসার মাধ্যমে ভারতে যাতায়াত করতেন। করোনার কারণে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ নাকুগাঁও ইমিগ্রেশনটি বন্ধ করা হয়। আমদানি-রফতানিও স্থাবির হয়ে পড়ে। কিছুদিন পর আমদানি-রফতানি ব্যবসা-বাণিজ্য আবার স্বাভাবিক হয়ে আসে। ফলে ভারত ও ভুটান থেকে শত শত টন পাথর ও কয়লা নাকুগাঁও, গোবরাকুড়া, কড়ইতলী ও ধানুয়া-কামালপুর বন্দরে আসছে। ভারত থেকে কয়লা-পাথর আমদানি হলেও নাকুগাঁও ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় চার বন্দরের ব্যবসায়ীই পড়েছেন বিপাকে। দীর্ঘ দুই বছর ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা ভারতে যাতায়াত করতে পারছেন না। ফলে এলসি করেও যথাসময়ে পণ্য সরবরাহ হচ্ছে না। পাথর ও কয়লার গুণগত মান রক্ষাও হচ্ছে না। ফলে চার বন্দরেরই আমদানিকারকরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ধানুয়া-কামালপুর বন্দরের জনৈক আমদানিকারক বলেন, ‘ভারত ও ভুটান থেকে মুঠোফোনের মাধ্যমে দরদাম নির্ধারণ করে অর্ডার দেয়ার পরও সময়মতো পণ্যও দেন না। ইমিগ্রেশন খোলা থাকলে, সকালে গিয়ে বিকেলেই পণ্য পাওয়া যেত।’
হালুয়াঘাটের কড়ইতলী স্থালবন্দরের একজন আমদানিকারক বলেন, নাকুগাঁও ইমিগ্রেশন দিয়ে চারটি বন্দরের ব্যবসায়ীরা ভারতে গিয়ে পণ্যের গুণগত মান যাচাই-বাছাই করে ব্যবসায়ীদেরর সাথে চুক্তি করতেন। ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে হচ্ছে। আজকের পণ্য এক সপ্তাহ পরেও দিচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
নাকুগাঁও স্থালবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা ভারতে যাতায়াত করতে পারলে পণ্যের গুণগত মান যাচাই বাছাই ও সঠিক সময়ে পণ্য আনতে পারতেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ইমিগ্রেশনটি খুলে দিতে যথাযথ ব্যবস্থাা নেবে এটা ব্যবসায়ীদের দাবী।’
নাকুগাঁও ইমিগ্রেশনের দায়িত্বশীল এসবির পরিদর্শক ফেরদৌস বলেন, করোনার পর ১৬টি ইমিগ্রেশনের মধ্যে ৪টি খোলা হয়েছে। এটা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে খোলা হয়। সরকারিভাবে অনুমোদন পেলে নাকুগাঁও ইমিগ্রেশনও খোলে দেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন