শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ফেসবুক-দলীয় কার্যালয়ে সরগরম নির্বাচনী আড্ডা

কুসিক নির্বাচন : প্রতীক বরাদ্দ আসছে শুক্রবার

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রতীক বরাদ্দ ও আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু না হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ফেসবুক ও প্রতিটি ওয়ার্ডের চা স্টলের আড্ডায় জমে ওঠেছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনী পরিবেশ। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর কান্দিরপাড় রামঘাট এলাকায় কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় প্রাঙ্গন ও দলটির বিভিন্ন ওয়ার্ড কার্যালয়ে বসে জমজমাট নির্বাচনী আড্ডা।

এছাড়া পাড়া-মহল্লা, অলি-গলির চা স্টলে মেয়র- কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে মুখরোচক আলোচনা ঝড় তুলছে গরম চায়ের কাপে। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ফেসবুকে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থক, শুভাকাঙ্খীরা প্রার্থীর ছবি, বিগত সময়ের সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মকান্ডের ছবি সম্বলিত পোষ্ট দিয়ে সরগরম করে তুলছে নিজেদের পেইজ।

আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবারে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আরফানুল হক রিফাত। তিনি কুমিল্লা-৬ আসনের এমপি আকম বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারি। মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ভোটের আড্ডায় জড়ো হচ্ছেন। আবার রিফাতের মনোহরপুরের বাসাতেও নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে দেখা করছেন। শুরু থেকেই রিফাত সমর্থকরা ফেসবুকে সরব। মনোনয়ন পাওয়ার পর ফেসবুকে ভোট চাওয়ার আবেদন, জয়ী হওয়ার আশাবাদ নিয়ে আরও বেশি সরব হয়ে ওঠেছেন রিফাত সমর্থকরা। অনেকে গ্রুপ পেইজও খুলেছেন।

২০১৭ সালের নির্বাচনে ভোটের মাঠে নৌকা ও ধানের শীষের লড়াই এক অন্যরকম উৎসবের মাত্রা যোগ করেছিল। এবারে বিএনপি সারাদেশেই স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে অংশ নিচ্ছে না। তবে দলের নেতাদের অনেকেই স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন। সেই দিক থেকে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সদ্যবিদায়ী মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ও কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার দল থেকে অব্যাহতি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

অব্যাহতি পত্র গ্রহণ করে দল থেকে তাদেরকে বহিস্কার করা হয়েছে। সদ্য বহিস্কৃত বিএনপির এই দুই নেতার প্রচারণা চলছে নিজেদের বাড়ি কেন্দ্রিক। প্রতিদিনই বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সময়-সুযোগ করে মেয়র প্রার্থী সাক্কুর নানুয়াদিঘীর পাড়ের বাড়ি ও ধর্মসাগরের দক্ষিণপাড়ে কায়সারের বাড়িতে দেখা করে নির্বাচনী কলাকৌশল নিয়ে আলোচনায় মিলিত হচ্ছেন। সাক্কু-কায়সারের কর্মী সমর্থকরাও সরব ফেসবুক প্রচারণায়।

অপরদিকে আওয়ামী লীগ পরিবারের আরেক প্রার্থী মাসুদ পারেভজ খান ইমরান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন বলে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে বৈধতাও পেয়েছে তার মনোনয়ন। এবার দেখার পালা তিনি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবেন কিনা। কুমিল্লার বর্ষিয়ান রাজনীতিক মরহুম আফজল খানের জ্যেষ্ঠপুত্র ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আঞ্জুম সুলতানা সীমার ছোট ভাই মাসুদ পারেভজ খান ইমরানের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়েও অনেক গুঞ্জন শোনা গেছে। কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুফ বাহার-আফজল খান পরিবারের বিরোধ এবারের নির্বাচনের মাঠে স্পষ্ট হয়ে দেখা দিবে কিনা এনিয়েও নানা কথা বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।

তবে কিছুদিন মহিলা এমপি সীমা নগরীর মডার্ণ কমিউিনিটি সেন্টারে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের তথা নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী নিয়ে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগে কোন বিরোধ থাকবে না। এমপি সীমার এধরণের মন্তব্যের পর তার ভাই মাসুদ পারভেজ খান ইমরান ভোটের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত থাকবেন না বলে মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে তিনি প্রত্যাহার করে নিতে পারেন তার মনোনয়নপত্র।
সবমিলে এ মুহূর্তে প্রচার-প্রচারণায় ইসির নিষেধাজ্ঞা থাকলেও থেমে নেই ফেসবুক প্রচারণা ও রাজনৈতিক দলীয় কার্যালয় ঘিরে ভোটের আড্ডা। আগামী শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দের পর এ প্রচারণা মোড় নেবে তীব্র লড়াইয়ের দিকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন