মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জুয়ায় ১০০ টাকা হেরে ১২ বছর ঘরছাড়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০২২, ১২:০৬ এএম

রাজধানীর মিরপুরে শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা। এরপর ডায়মন্ড প্যাকেজিংয়ে হেলপারের কাজ নেন মো. সুমন। তখন তার বয়স ছিল ১৬। ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট সন্ধ্যায় মিরপুর-১১ নম্বর বাজার এলাকায় জুয়া (তিনতাস) খেলায় বসেন। সেখানে ১০০ টাকার বাজি হেরে মোবাইলটি খোয়ান। মোবাইল খোয়ানোর ভয়ে সুমন আর পরিবারে ফেরেনি। শুরু হয় তার নানা সংগ্রামী গল্প।

এরপর কখনো রাত কেটেছে বায়তুল মোকাররম মসজিদের বারান্দায়, বাসে, কখনো ফুটপাতে। কখনো ফুলের মার্কেটে কাজ, বাসের হেলপার, হোটেলের বাবুর্চি, চটপটি কিংবা পপকর্নের ব্যবসায় ব্যস্ত সময় কাটান সুমন। সর্বশেষ বাসের ড্রাইভিং পেশায় যোগ দেন। এরই মধ্যে গত চার বছর আগে বিয়েও করেন সুমন। সেখানে তার সন্তানের জন্মও হয়। এর মধ্যে সুমনের সন্ধানে বাবা মোজাফফর হোসেন থানায় জিডি করেন, মামলাও করেন। তদন্ত ভার থানা, ডিবি, সিআইডির হাত বদলে সর্বশেষ আসে পিবিআইয়ের হাতে। কিন্তু ১২ বছরে কেউ সন্ধান দিতে পারেনি তার। সুমনও নিজ উদ্যোগে আর ফেরেনি পরিবারে। তবে সর্বশেষ সুমনের স্ত্রীর সহযোগিতা আর পিবিআইয়ের লেগে থাকা তদন্তে দীর্ঘ ১২ বছর ঘরছাড়া সুমন ফিরে আসে পরিবারে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলমের তদারকিতে গত ২৩ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর কদমতলী থানাধীন মদিনাবাগ এলাকা থেকে সুমনকে উদ্ধার করে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁও ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআইয়ের (ঢাকা মেট্রো-উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট সকাল ৮টায় বাবা মোজাফ্ফর (৫২) ছেলে সুমন (১৭) নিয়ে বাসা থেকে তার কর্মস্থল ডায়মন্ড প্যাকেজিং গার্মেন্টে যান। এরপর আর বাসায় ফেরেনি সুমন। বাবা মোজাফ্ফর ছেলের সন্ধান চেয়ে ৫ অক্টোবর পল্লবী থানায় একটি জিডি করেন। এর মধ্যে বাবার কাছে তথ্য আসে সুলায়মান হোসেন (২৮), শাওন পারভেজ (১৮), রুবেল (২০), সোহাগ (২০) ও মানিক (২৫) নামে ক’জন মিলে সুমনকে অপহরণ করেছে। এতে সন্দেহবশত বাদী হয়ে ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর পল্লবী থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন তিনি। মামলা নং-৯০।
বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যে সময় সুমন নিখোঁজ হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৬। আজ তার বয়স ২৮। ১৬ বছরের এক তরুণের মোবাইল খোয়ানোয় ভয় আতঙ্কিত হওয়াই স্বাভাবিক। তবে পরিবারের উচিত আরও সহনশীল হওয়া। সন্তানদের ভুলক্রটি সংশোধন করে আগলে রাখা। আর চোরাই মোবাইল দিয়ে নানা অপকর্ম হয়। চোরাই মোবাইল কিনে ব্যবহারের কারণে সুলাইমান নামে ব্যবসায়ীকে জেলে যেতে হয়। যদিও আজ এই মামলায় সব আসামিই নির্দোষ হিসেবে প্রমাণিত হলো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
jack ali ২৫ মে, ২০২২, ১২:১২ পিএম says : 0
আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ শাসন করা হলে দেশে কখনো জুয়া খেলার আসর বসতো না সব কিছুর পিছনে আল্লাহদ্রোহী সরকার দায়ী আমাদের দেশের মানুষের সংসার সমাজ দেশ ধ্বংস করে ফেলেছে এই আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ শাসন করা হলে দেশে কখনো জুয়া খেলার আসর বসতো না সব কিছুর পিছনে আল্লাহদ্রোহী সরকার দায়ী আমাদের দেশের মানুষের সংসার সমাজ দেশ ধ্বংস করে ফেলেছে এই আল্লাহ জহির সরকার সরকার
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন