বিভিন্ন সময় পুলিশের অভিযানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার নৌরুটে জুয়াড়ি, প্রতারকচক্রের অনেককে গ্রেফতার করা হলেও রোধ করা যাচ্ছে না চক্রটিকে। ছাড়া পেয়ে অথবা জামিনে বেরিয়ে এসে তারা আবারো এসব অপকর্মে লিপ্ত হয়। এদের কারনে প্রতিনিয়ত এ রুটের সাধারণ যাত্রী, চালক ও সহকারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। হচ্ছেন প্রতারিত, নির্যাতিত।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার এ নৌরুটে চলাচলকারী ফেরিতে জুয়াড়িচক্র ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। মধ্যরাতে দৌলতদিয়ার ৫নম্বর ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া রো রো (বড়) ফেরি কেরামত আলী মাঝ নদীতে পৌঁছলে যাত্রীবেশে থাকা নৌ পুলিশের একটি দল চার জুয়াড়িকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতাারকৃতরা হলো গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া সিদ্দিক কাজী পাড়ার বরকত মোল্লা , উত্তর দৌলতদিয়া ঢল্লা পাড়ার নুরু খা, বাহির চর দৌলতদিয়া শাহাদৎ মেম্বার পাড়ার উসমান মোল্লা ও একই গ্রামের সাগর হোসেন। এ সময় রেজাউল শিকদার নামের একজন পালিয়ে যায়। পুলিশ তাদের কাছ থেকে তাস, কুপি বাতি, তাস জুয়া খেলার একটি বোর্ড এবং নগদ টাকা জব্দ করে। গ্রেফতারকৃতদের ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আজিজুল হক খান।
জানা গেছে, দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়ার উভয় ঘাট হতে রাতে ছেড়ে যাওয়া বেশিরভাগ ফেরি মাঝ নদীতে পৌঁছলে জুয়ারি চক্র ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে ফেরিতে উঠে পড়ে। এরপর তারা ফেরির এক কোনায় কুপি বাতি জ্বালিয়ে প্রথমে নিজেরা ৪-৫জন বসে তাস নিয়ে খেলা শুরু করে। এ সময় কোন যাত্রী বা গাড়ি চালক খেলায় আগ্রহ দেখিয়ে বসলে সংঘবদ্ধ সদস্যরা তাদের কাছে থাকা টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নেয়। কেউ এগিয়ে গেলে ধারালো ছুরি বা চাকু দিয়ে আঘাত করে দ্রুত নৌকা নিয়ে সটকে পড়ে।
এছাড়াও ঘাটে মাছ, ফল, কাঠ, পান, সবজি, চালসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারে দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে। তাদের ছাড়া পরিবহন চালকরা নিজ হাতে নায্যমূল্যে ফেরির টিকিট কাটতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে তাদেরকে গুনতে হয় বাড়তি টাকা।
দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ওসি) সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, এসব জুয়াড়িরা নেশার সাথে জড়িত। আমরা তাদের দমনে সর্বদা সতর্ক থাকি। তবে প্রতিটি ফেরিতে পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ফেরি কর্তৃপক্ষ, সাধারণ যাত্রী, চালক ও অন্যান্যদের সতর্ক থাকতে হবে। গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ঘাটে দালালদের বিরুদ্ধে তাদের নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন