শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

জেলায় জেলায় গণকমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করুন

নাগরিক মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০২২, ৮:৩১ পিএম

বিতর্কিত এবং বিপদগামী ব্যক্তিদের নেতৃত্বে গঠিত গণকমিশন যে শ্বেতপত্র দুদকে জমা দিয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। আওয়ামী সরকার গত দেড় দশকে আমাদের শিখিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মামলা করে কিভাবে প্রতিবাদী কন্ঠস্বরকে রুদ্ধ করা যায়। আলেম উলামাকে কেরামকে জেলায় জেলায় কথিত গণকমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। যেসব ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কথিত শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়েছে তাঁরা প্রত্যেকে আলাদাভাবে গণকমিশন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করে তাঁদের পর্যদুস্ত করুন। এইসব ভ্রান্ত আদর্শের ব্যক্তিরা কখনোই ইসলামের ক্ষতি করতে পারবে না বরং মহান আল্লাহই কেয়ামত পর্যন্ত ইসলামকে হেফাজত করবেন।

আজ শনিবার রাজধানীর বিজয়নগরস্থ একটি হোটেলে কথিত গণকমিশনের বানোয়াট শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং ইসলাম ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চক্রান্তের প্রতিবাদে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ আয়োজিত নাগরিক মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজীর সভাপতিত্বে এবং মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির ও ইসলামিক কালচারাল ফোরাম বাংলাদেশের উপদেষ্টা প্রিন্সিপাল মাওলানা মিজানুর রহমান চৌধুরী দেওনা পীর সাহেব, সাবেক এমপি আক্কাস আলী, মুসলিম লীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, ইসলামিক কালচারাল ফোরাম বাংলাদেশের সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা মো.নাজমুল হক, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম, ন্যাপ ভাসানীর মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, গৌতম দাস, নেজামে ইসলাম পার্টির নেতা মাওলানা শেখ লোকমান হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের নেতা সাদ্দাম হোসেন। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা মো.ইউসুছ আহমাদ ও চরমোনাই পীর সাহেবের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি আশরাফ উজ জামান, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ূম ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদের সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির।

মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম বলেন, ভারত হায়দারাবাদ ও কাশ্মির দখল করে নিয়েছে। ভারত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। যখন পানির প্রয়োজন হয় তখন ভারত পানি বন্ধ করে দেয়। যখন খাদ্যের প্রয়োজন হয় তখন খাদ্য বন্ধ করে দেয়। তিনি বলেন, রাজনৈতিক হানাহানিতে আজ মানুষ গুম হয়, নারীরা বিধবা হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে কী হচ্ছে ? তিনি বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী শক্তি এদেশে ভারতের সাংস্কৃতি চালু করতে চায়। ওদের শত্রু শুধু আলেম ওলামা ও মাদরাসা। এ জন্য কথিত ঘাদানিক গণকমিশনের নামে মিথ্যা বিভ্রান্তিমূল শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। মারা গেলে এদের জানাযা পড়া জায়েজ কীনা তা’ ভেবে দেখতে হবে। কথিত গণকমিশনের বিতর্কিত ব্যক্তিরা শুধু ১১৬ জন আলেম ও ১ হাজার মাদরাসাকে হেয়প্রতিপন্ন করেনি; এরা গোটা দুনিয়ার আলেম ও মাদরাসাগুলোকে অপবাদ দিয়েছে। এরা ইসলাম ও মুসলমানদের দুশমন। এদেশের ভূ-খন্ড, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও মানবতা রক্ষা করতে হলে কথিত গণকমিশনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির প্রিন্সিপাল মাওলানা মিজানুর রহমান চৌধুরী ঘাদানিকদের কথিত গণকমিশনের বিভ্রান্তিমূল শ্বেতপত্র তীব্র সমালোচনা করে বলেন, দেশ ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ১১৬ জন শীর্ষ আলেম ও ১ হাজার মাদরাসার বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ দুদকে পেশ করা হয়েছে। এসব মিথ্যা ভিত্তিহীন শ্বেতপত্র প্রকাশে মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে মিথ্যা ভিত্তিহীন শ্বেতপত্র সর্ম্পকে বক্তব্য প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছি। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন উল্লেখিত শ্বেতপত্রের কোনো ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, আমরা দুদকেও প্রতিবাদ লিপি পেশ করেছি। তিনি বলেন, ঈমানী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এসব ইসলাম বিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, আল্লাহ আমাদের রাজপথ গরম করার দায়িত্ব দেননি। আল্লাহ আলেম উলামাদের দায়িত্ব দিয়েছেন, কোরআনের তালিম, দাওয়াত এবং আত্মশুদ্ধির কাজে নিয়োজিত থাকার। তিনি বলেন, হযরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) বলেছিলেন, কওমি মাদরাসাগুলো হচ্ছে ইসলামের দূর্গ। আজ বিনা বিচারে অনেক আলেমকে কারাবন্দি রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, আলেম উলামারাই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের কথা বলেন। আলেম উলামারাই পারেন এই জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে। এ জন্য আলেম সমাজের বিরুদ্ধে নানা প্রপাগান্ডা ছড়ানো হয়। তিনি বলেন, কিছু কুচক্রি মহলের ষড়যন্ত্রের কারণে আল্লাম শাহ আহমদ শফী (রহ.) এর হেফাজতে ইসলামের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ধরে রাখতে পারিনি। ধরে রাখতে পারলে ৫০ বছরেও নাস্তিক মুরতাদরা এদেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতো না। হেফাজত নেতা বলেন, আর ধোকা খাইতে রাজি নই; অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে দূরদর্শিতার সাথে কাজ করতে হবে। তা’হলেই ইসলামের দুশমনরা পরাভূত হবে ইনশাআল্লাহ।

জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, বিতর্কিত এবং বিপদগামী ব্যক্তিদের নেতৃত্বে গঠিত গণকমিশন যে ভুলে ভরা এবং অসার প্রতিবেদন দুদকে জমা দিয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। আওয়ামী সরকার গত দেড় দশকে আমাদের শিখিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মামলা করে কিভাবে প্রতিবাদী কন্ঠস্বরকে রুদ্ধ করা যায়। তিনি বলেন, উলামায়ে কেরামের প্রতি আমাদের আহবান থাকবে, আপনারা জেলায় জেলায় কথিত গণকমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করুন। যেসব ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কথিত শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়েছে তাঁরা প্রত্যেকে আলাদাভাবে গণকমিশন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করে তাঁদের পর্যদুস্ত করুন। এইসব ভ্রান্ত আদর্শের ব্যক্তিরা কখনোই ইসলামের ক্ষতি করতে পারবে না বরং মহান আল্লাহই কেয়ামত পর্যন্ত ইসলামকে হেফাজত করবেন। সভায় আগামী ২ জুন কথিত গণকমিশনের শ্বেতপত্রের প্রতিবাদে কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াস মিলনায়তনে আয়োজিত শীর্ষ উলামায়ে কেরামের মতবিনিময় সভা সফল করার অনুরোধ জানানো হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন